অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - গণিত - NCTB BOOK

গাণিতিক সমস্যা সমাধানে সমীকরণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এক চলকবিশিষ্ট সরল সমীকরণ ও এ-সংক্রান্ত বাস্তব সমস্যার সমীকরণ গঠন করে তা সমাধান করতে শিখেছি। সপ্তম শ্রেণিতে সমীকরণের পক্ষান্তর বিধি, বর্জন বিধি, আড়গুণন বিধি ও প্রতিসাম্য বিধি সম্পর্কে জেনেছি। এ ছাড়াও লেখচিত্রের সাহায্যে কীভাবে সমীকরণের সমাধান করতে হয় তা জেনেছি। এ অধ্যায়ে দুই চলকবিশিষ্ট সরল সহসমীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতিতে সমাধান ও লেখচিত্রের সাহায্যে সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

অধ্যায় শেষে শিক্ষার্থীরা-
➤ সমীকরণের প্রতিস্থাপন পদ্ধতি ও অপনয়ন পদ্ধতি ব্যাখ্যা করতে পারবে।
➤ দুই চলকবিশিষ্ট সরল সহসমীকরণের সমাধান করতে পারবে।
➤ গাণিতিক সমস্যার সরল সহসমীকরণ গঠন করে সমাধান করতে পারবে সরল সহসমীকরণের সমাধান লেখচিত্রে দেখাতে পারবে।
➤ লেখচিত্রের সাহায্যে সরল সহসমীকরণের সমাধান করতে পারবে।

Content added By

x + y = 5 একটি সমীকরণ। এখানে, x ও y দুইটি অজানা রাশি বা চলক। এই চলক দুইটি একঘাতবিশিষ্ট। এরূপ সমীকরণ সরল সমীকরণ।

এখানে, যে সংখ্যাদ্বয়ের যোগফল 5 সেই সংখ্যা দ্বারাই সমীকরণটি সিদ্ধ হবে। যেমন, x = 4, y = 1; বা, x = 3, y = 2; বা, x = 2, y = 3; বা, x = 1, y = 4, ইত্যাদি, এরূপ অসংখ্য সংখ্যাযুগল দ্বারা সমীকরণটি সিদ্ধ হবে।

আবার, x – y = 3 এই সমীকরণটি বিবেচনা করলে দেখতে পাই, সমীকরণটি x = 4, y=1 বা x = 5, y = 2 _বা_ x = 6, y = 3 বা x = 7, y = 4 বা x = 8, y = 5 বা x = 2, y = -1 বা x = 1, y = -2, x = 0, y = - 3 ... ইত্যাদি অসংখ্য সংখ্যাযুগল দ্বারা সিদ্ধ হয়।

এখানে, x + y = 5 এবং x - y = 3 সমীকরণ দুইটি একত্রে বিবেচনা করলে উভয় সমীকরণ হতে প্রাপ্ত সংখ্যাযুগলের মধ্যে x = 4, y = 1 দ্বারা উভয় সমীকরণ যুগপৎ সিদ্ধ হয়।

চলকের মান দ্বারা একাধিক সমীকরণ সিদ্ধ হলে, সমীকরণসমূহকে একত্রে সহসমীকরণ বলা হয় এবং চলক একঘাত বিশিষ্ট হলে সহসমীকরণকে সরল সহসমীকরণ বলে।

চলকদ্বয়ের যে মান দ্বারা সহসমীকরণ যুগপৎ সিদ্ধ হয়, এদেরকে সহসমীকরণের মূল বা সমাধান বলা হয় । এখানে x + y = 5 এবং x - y = 3 সমীকরণ দুইটি সহসমীকরণ। এদের একমাত্র সমাধান x=4, y=1_ যা (x, y) = ( 4, 1 ) দ্বারা প্রকাশ করা যায়।

Content added By

দুই চলকবিশিষ্ট দুইটি সরল সমীকরণের সমাধানের পদ্ধতিগুলোর মধ্যে নিচের পদ্ধতি দুইটি আলোচনা
করা হলো :
(১) প্রতিস্থাপন পদ্ধতি (Method of Substitution)
(২) অপনয়ন পদ্ধতি (Method of Elimination)

 

(১) প্রতিস্থাপন পদ্ধতি

এই পদ্ধতিতে আমরা নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে সমাধান করতে পারি :

(ক) যেকোনো সমীকরণ থেকে চলক দুইটির একটির মান অপরটির মাধ্যমে প্রকাশ করা। 

(খ) অপর সমীকরণে প্রাপ্ত চলকের মানটি স্থাপন করে এক চলকবিশিষ্ট সমীকরণ সমাধান করা।

(গ) নির্ণীত সমাধান প্রদত্ত সমীকরণ দুইটির যেকোনো একটিতে বসিয়ে অপর চলকের মান নির্ণয় করা।

উদাহরণ ১। সমাধান কর :
          x + y =7
          x - y = 3

সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ 
                   x + y = 7………………….(1)
                   x - y = 3…………………(2)

সমীকরণ (2) হতে পক্ষান্তর করে পাই,
                x = y + 3...........(3)

সমীকরণ (3) হতে x এর মানটি সমীকরণ (1) -এ বসিয়ে পাই,
                y + 3 + y =7 
                বা, 2y = 7 - 3
                বা, 2y = 4
                ∴ y = 2
এখন সমীকরণ (3) এ y = 2 বসিয়ে পাই,
                x = 2 + 3
                ∴ x = 5
নির্ণেয় সমাধান (x, y) = (5, 2)

[শুদ্ধি পরীক্ষা : সমীকরণ দুইটিতে x = 5 ও y = 2 বসালে সমীকরণ (1)-এর বামপক্ষ = 5 + 2 = 7 = ডানপক্ষ এবং সমীকরণ (2)-এর বামপক্ষ = 5 - 2 = 3 = ডানপক্ষ।]

 

উদাহরণ ২। সমাধান কর :
          x + 2y = 9
          2x - y = 3
সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ
                x + 2y = 9……...……………..(1)
                2x - y = 3…………………….(2)

সমীকরণ (2) হতে পাই, y = 2 x – 3……………………(3) 

সমীকরণ (I) এ y এর মান বসিয়ে পাই, x + 2 (2x – 3) = 9
                বা, x + 4x – 6 = 9
                বা, 5 x = 6 +9
                বা, 5 x = 15
                বা, x = 155
                ∴ x=3
এখন x এর মান সমীকরণ (3) -এ বসিয়ে পাই,
                y = 2 x 3 - 3
                   = 6 - 3
                   = 3 
নির্ণেয় সমাধান (x, y) = (3,3)  

 

উদাহরণ ৩। সমাধান কর :
          2y + 5z = 16
          y - 2z = -1

সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ
                2y + 5z = 16……………..(1)
                y - 2z = -1………………….(2)

সমীকরণ (2) হতে পাই, y = 2z – 1……………………(3) 

সমীকরণ (1) এ y এর মান বসিয়ে পাই,
                2(2z-1)+5z = 16
                  বা, 4z - 2 + 5z = 16
                  বা, 9z= 16 + 2
                  বা, z = 189
                  ∴ x=3
এখন z এর মান সমীকরণ (3) -এ বসিয়ে পাই,
                y = 2 x 3 - 3
                   = 6 - 3
             ∴ y = 3 
নির্ণেয় সমাধান (y, z) = (3, 2)  

 

উদাহরণ ৪। সমাধান কর :
          2x+1y=1
          4x-9y=-1

সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ
                2x+1y=1……………..(1)
                4x-9y=-1………………….(2)

1x=u এবং 1y=v ধরে (1) ও (2) নং সমীকরণ হতে পাই 
                2x + v = 3………….………(3)
                4u - 9v = -1………………(4)

(3) নং সমীকরণ হতে পাই
       v = 1 - 2u ………………..(5)

(4) নং সমীকরণে v এর মান বসিয়ে পাই, বা, 

       4u - 9 (1-2u) = -1

       বা, 4u - 9 + 18 u = -1

       বা, 22u = 9 – 1

       ∴ u=822=411

       বা, 1x=411

       ∴ x=114

এখন, u এর মান (5) নং সমীকরণে বসিয়ে পাই,

       v = 1 - 2 ×411=11-811

       ∴ v=311

       বা, 1y=311

       ∴ y=113

∴ নির্ণেয় সমাধান (x, y) = 114, 113

 

(২) অপনয়ন পদ্ধতি

এই পদ্ধতিতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে সমাধান করা যায় :
(ক) প্রদত্ত উভয় সমীকরণকে এমন দুইটি সংখ্যা বা রাশি দ্বারা পৃথকভাবে গুণ করতে হবে যেন যেকোনো একটি চলকের সহগের সাংখ্যিক মান সমান হয়।
(খ) একটি চলকের সহগ একই চিহ্ন বিশিষ্ট হলে সমীকরণ পরস্পর বিয়োগ, অন্যথায় যোগ করতে হবে।
       বিয়োগফলকৃত (বা যোগফলকৃত) সমীকরণটি একটি এক চলকবিশিষ্ট সরল সমীকরণ হবে।
(গ) সরল সমীকরণ সমাধানের নিয়মে চলকটির মান নির্ণয় করা।
(ঘ) প্রাপ্ত চলকের মান প্রদত্ত যেকোনো একটি সমীকরণে বসিয়ে অপর চলকের মান নির্ণয় করা।

উদাহরণ ৫। সমাধান কর :
          5x - 4y = 6
          x + 2y = 4

সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ
          5x - 4y = 6.………………….(1)
          x+2y= 4.………………….(2)

(3) ও (4) সমীকরণ যোগ করে পাই,
            7x = 14
            বা, x = 147………………….(4)

            ∴ x = 2

সমীকরণ (2) এx এর মান বসিয়ে পাই,
            2 + 2y = 4
            বা, 2y = 4 - 2
            বা, y = 22
            ∴ y = 1

নির্ণেয় সমাধান (x,  y) = (2, 1)

 

উদাহরণ ৬। সমাধান কর :
            x + 4y = 14
            7 x - 3y = 5

সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ
            x + 4y = 14………………..(1)
            7x - 3y = 5………………..(2)

সমীকরণ (1) কে 3 দ্বারা এবং সমীকরণ (2) কে 4 দ্বারা গুণ করে পাই,

           

          বা, x = 6231

          ∴ x = 2

এখন x এর মান সমীকরণ (1) -এ বসিয়ে পাই,
          2 + 4y=14
          বা, 4y = 14 - 2
          বা, 4 y = 12 
          বা, y = 124
          ∴ y = 3

∴ (x, y) = (2, 3)

 

উদাহরণ ৭। সমাধান কর :
          5x - 3y = 9
          3x - 5y = - 1

সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ
          5x - 3y = 9………………………(1)
          3x - 5y = -1……………………..(2)

সমীকরণ (1) কে 5 দ্বারা এবং সমীকরণ (2) কে 3 দ্বারা গুণ করে পাই

                    

          বা, x = 4816

          ∴ x = 3

সমীকরণ (1) এ x এর মান বসিয়ে পাই,
          5 × 3 - 3y = 9
          বা, 15 - 3y = 9
          বা, - 3y = 9 - 15 
          বা, - 3y = - 6
          বা, y = -6-3
          ∴ y = 2

∴ (x, y) = (3, 2)

 

উদাহরন ৮।
          x5+3y=3
          x2-6y=2

সমাধান :
           প্রদত্ত সমীকরণ
          x5+3y=3 …………………….(1)
          x2-6y=2 …………………….(2)

(1) সমীকরণকে (2) দ্বারা গুণ করে (2) নং সমীকরণ এর সাথে যোগ করে পাই,
          2x5+6y=6 ………………….(3)
          x2-6y=2 …………………….(4)
          2x5+x2=8
          বা, 4x+5x10=8
          বা, 9x = 8 × 10
          বা, x = 809

(1) নং সমীকরণে x এর মান বসিয়ে পাই,
          15×809+3y=3
          বা, 169+3y=3
          বা, 3y=3-169
          বা, 3y=119
          বা, y=2711
∴ নির্ণেয় সমাধান (x, y) = 809, 2711

Content added || updated By
Please, contribute to add content into অনুশীলনী ৬.১.
Content

সরল সহসমীকরণের ধারণা থেকে বাস্তব জীবনের বহু সমস্যা সমাধান করা যায়। অনেক সমস্যায় একাধিক চলক আসে। প্রত্যেক চলকের জন্য আলাদা প্রতীক ব্যবহার করে সমীকরণ গঠন করা যায়। এরূপ ক্ষেত্রে যতগুলো প্রতীক ব্যবহার করা হয়, ততগুলো সমীকরণ গঠন করতে হয়। অতঃপর সমীকরণগুলো সমাধান করে চলকের মান নির্ণয় করা যায়।

উদাহরণ ১। দুইটি সংখ্যার যোগফল 60 এবং বিয়োগফল 20 হলে, সংখ্যা দুইটি নির্ণয় কর।

সমাধান : মনে করি, সংখ্যা দুইটি x ও y, যেখানে x>y

১ম শর্তানুসারে, x + y = 60.…………………………(1)

২য় শর্তানুসারে, x – y = 20………………………(2) 

সমীকরণ (1) ও (2) যোগ করে পাই,
                                2x = 80
                                বা, x=802=40

আবার, সমীকরণ (1) হতে সমীকরণ (2) বিয়োগ করে পাই,
                                   2y = 40 2 
                                   y=402=20

নির্ণেয় সংখ্যা দুইটি 40 ও 20 ।

 

উদাহরণ ২। ফাইয়াজ ও আয়াজের কতকগুলো আপেলকুল ছিল। ফাইয়াজের আপেলকুল থেকে আয়াজকে 10টি আপেলকুল দিলে আয়াজের আপেলকুলের সংখ্যা ফাইয়াজের আপেলকুলের সংখ্যার তিনগুণ হতো। আর আয়াজের আপেলকুল থেকে ফাইয়াজকে 20টি দিলে ফাইয়াজের আপেলকুলের সংখ্যা আয়াজের সংখ্যার দ্বিগুণ হতো। কার কতগুলো আপেলকুল ছিল?

সমাধান : মনে করি, ফাইয়াজের আপেলকুলের সংখ্যা x এবং আয়াজের আপেলকুলের সংখ্যা y

১ম শর্তানুসারে, y + 10 = 3 (x - 10 ) 

                   বা, y + 10 = 3x - 30 

                   বা, 3x - y = 10 + 30 , 

                   বা, 3x-y=40……………(1)

২য় শর্তানুসারে, x + 20 = 2 ( y - 20 )

                   বা, x + 20 = 2y - 40

                   বা, x – 2y = – 40 - 20
                   বা, x – 2y = -60........... (2)

সমীকরণ (1) কে 2 দ্বারা গুণ করে তা থেকে সমীকরণ (2) বিয়োগ করে পাই,

                5x = 140

                x=1405=28

x এর মান সমীকরণ (1) এ বসিয়ে পাই,

                3 x 28 - y = 40

                বা, - y = 40 – 84

                বা, – y = -44

                ∴ y = 44

∴ ফাইয়াজের আপেলকুলের সংখ্যা 28 টি

   আয়াজের আপেলকুলের সংখ্যা 44 টি

 

উদাহরণ ৩। 10 বছর পূর্বে পিতা ও পুত্রের বয়সের অনুপাত ছিল 4:1। 10 বছর পরে পিতা ও পুত্রের বয়সের অনুপাত হবে 2:1 । পিতা ও পুত্রের বর্তমান বয়স নির্ণয় কর।

সমাধান : মনে করি, বর্তমানে পিতার বয়স x বছর 

                                     এবং পুত্রের বয়স y বছর

১ম শর্তানুসারে, (x - 10) : (y - 10) = 4 : 1

                   বা, x-10y-10=41

                   বা, x – 10 = 4y - 40

                   বা, x – 4y = 10 - 40

                   ∴ x - 4y = - 30…………….(1)

২য় শর্তানুসারে, (x + 10) : ( y + 10) = 2 : 1

                   বা, x+10y-10=21

                   বা, x + 10 = 2y + 20

                   বা, x – 2y = 20-10 

                   ∴ x - 2y = 10………..(2)

সমীকরণ (1) ও (2) হতে পাই,

y এর মান সমীকরণ (2) এ বসিয়ে পাই,

                   x - 2 x 20 = 10

              বা, x = 10 + 40

                   ∴ x = 50

∴ বর্তমানে পিতার বয়স 50 বছর এবং পুত্রের বয়স 20 বছর।

 

উদাহরণ ৪। দুই অঙ্কবিশিষ্ট কোনো সংখ্যার অঙ্কদ্বয়ের সমষ্টির সাথে 7 যোগ করলে যোগফল দশক স্থানীয় অঙ্কটির তিনগুণ হয়। কিন্তু সংখ্যাটি থেকে 18 বাদ দিলে অঙ্কদ্বয় স্থান পরিবর্তন করে। সংখ্যাটি নির্ণয় কর। সমাধান : মনে করি, দুই অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যাটির একক স্থানীয় অঙ্ক x এবং দশক স্থানীয় অঙ্ক y |

∴ সংখ্যাটি = x + 10y.

১ম শর্তানুসারে, x + y + 7 = 3y 

                   বা, x + y - 3y = -7 

                   বা, x-2y=-7…………(1)

২য় শর্তানুসারে, x + 10y – 18 = y + 10x 

                   বা, x + 10y - y - 10x = 18 

                   বা, 9y - 9x = 18 

                   বা, 9(y-x) = 18 

                   বা, yx=189=2

                   ∴ y - x = 2…………………(2)

(1) ও (2) নং যোগ করে পাই, – y = -5

                                              ∴ y = 5

y -এর মান (I) নং-এ বসিয়ে পাই,

                   x - 2x 5 = -7

                   ∴ x = 3

নির্ণেয় সংখ্যাটি = 3 + 10 × 5 = 3 + 50 = 53

 

উদাহরণ ৫। কোনো ভগ্নাংশের লবের সাথে 7 যোগ করলে ভগ্নাংশটির মান 2 হয় এবং হর থেকে 2 বাদ দিলে ভগ্নাংশটির মান 1 হয়। ভগ্নাংশটি নির্ণয় কর।

সমাধান : মনে করি, ভগ্নাংশটি xy y ≠ 0

১ম শর্তানুসারে, x+7y=2

                   বা, x + 7 = 2 y

                   বা, x – 2y = -7…………..(1)

২য় শর্তানুসারে, xy-2=1

                   বা, x = y - 2

                   বা, x – y = −2………….(2)

সমীকরণ (1) ও (2) হতে পাই,

আবার, y = 5 সমীকরণ (2) এ বসিয়ে পাই,

                   x - 5 = - 2

                   ∴ x = 5 - 2 = 3

নির্ণেয় ভগ্নাংশ 35

Content added || updated By

উপনিবেশিকরণ একটি প্রক্রিয়া। সাধারণভাবে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক শোষণ ও লাভের উদ্দেশ্যে এক দেশ অন্য দেশের উপর প্রভুত্ব স্থাপন করে তাকে নিজের দখলে আনে। অধীনস্থ দেশটির জনগণ, সম্পদ সবকিছুই অধিপতি দেশটি নিজের স্বার্থ অনুযায়ী পরিচালনা করে। এখানে দখলকৃত দেশটি দখলকারী দেশের উপনিবেশে পরিণত হয়। বাংলা প্রায় দুইশ বছর এমনভাবে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনাধীনে ছিল। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে এই শাসনের সূচনা হয়েছিল যা নানা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে শেষ হয় । কীভাবে এই ঔপনিবেশিক শাসনের সূচনা হয়েছিল তা জানার আগে সেইসময় বাংলার রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল তা কিছুটা জেনে নেয়া দরকার। বাংলার রাজনৈতিক পটভূমি: ঔপনিবেশিক শাসন-পূর্বকাল প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা অঞ্চলে মানব বসতির কথা জানা যায়। এ অঞ্চলটি বরাবরই ছিল ধনসম্পদে পূর্ণ একটি এলাকা । ফলে ইংরেজ আগমনের অনেক আগে থেকেই এখানে বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষের আগমন ঘটতে থাকে। সকলের আকর্ষণের প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলার অর্থনৈতিক প্রাচুর্য। কাজেই বহিরাগতের আগমন বাংলার ইতিহাসের নতুন কোনো ঘটনা নয়।

খ্রিষ্টপূর্ব যুগে বহিরাগত আর্য ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী বাংলায় প্রবেশ করেছিল । খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে বাংলার উত্তরাংশ দখল করেন ভারতের মৌর্য সম্রাট অশোক। সে সময় পুন্ড্রনগর (পুণ্ড্রবর্ধনভুক্তি) হয় মৌর্যদের প্রদেশ। মৌর্যদের পর ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয় গুপ্ত সাম্রাজ্য। চার শতকে উত্তর বাংলা ও দক্ষিণ-পূর্ব-বাংলার কিছু অংশ গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধিকারে আসে। গুপ্তদের পতনের পর সপ্তম শতকে বাংলার উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে প্রথম বাঙালি শাসক শশাঙ্ক কর্তৃক স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। একই সময়ে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বঙ্গ নামে আরেকটি স্বাধীন রাজ্য গড়ে উঠেছিল। তার মৃত্যুর পর একশো বছর ধরে বাংলায় অরাজকতা চলতে থাকে। যাকে সংস্কৃত ভাষায় বলা হয় মাৎস্যন্যায় যুগ। এরপর বাঙালিদের দীর্ঘস্থায়ী রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় আট শতকের মাঝ পর্বে। প্রায় চারশো বছর বাংলাকে শাসন করেন বাঙালি পাল রাজারা। পালদের পতনের পর এগারো শতকের শেষ দিকে আবার বিদেশি শাসনের অধীনে চলে যায় বাংলা। দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক থেকে আসা সেন রাজারা বাংলার সিংহাসন দখল করে নেন।

সেন শাসনের অবসান ঘটে ভাগ্যান্বেষণে আগত তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির হাতে। তিনি রাজা লক্ষ্মণসেনকে পরাজিত করে মুসলমান শাসনের সূচনা করেন। ১২০৪ থেকে ১২০৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার পশ্চিমে নদীয়া ও উত্তর বাংলার কিছুটা অংশ বখতিয়ার খলজির দখলে ছিল। নদীয়া ও উত্তর বাংলায় তুর্কি শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও বাংলার পূর্বাঞ্চল (বিক্রমপুর) আরও অনেক সময় পর্যন্ত সেন শাসকদের অধীনে ছিল । বিহার অভিযানে ব্যর্থতার পর ১২০৬ সালে বখতিয়ার খলজি মারা যান। তবে তাঁর মাধ্যমে বাংলায় তুর্কি সুলতানদের শাসনের পথ প্রশস্ত হয়েছিল । তারপর ১৩৩৮ সাল পযন্ত বাংলা জুড়ে মুসলিম শাসনের বিস্তার ঘটতে থাকে।

এ সময়ের মধ্যে বাংলার তিনটি অংশে দিল্লি সালতানাতের তিনটি প্রদেশ বা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিভাগগুলো উত্তর বাংলায় লখনৌতি, পশ্চিম বাংলায় সাতগাঁও এবং পূর্ব বাংলায় সোনারগাঁও নামে পরিচিত ছিল । ১৩৩৮ সালে সোনারগাঁওয়ের শাসনকর্তা ফখরউদ্দিন মুবারক শাহ দিল্লির সুলতানদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এভাবে বাংলায় স্বাধীন সুলতানি যুগের সূচনা হয়। তবে সমগ্র বাংলার এক বৃহদাংশ অধিকার করে স্বাধীনভাবে রাজত্ব করার মাধ্যমে সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলার প্রকৃত স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেন বলে ধরা হয়। ইলিয়াস শাহ ‘শাহ-ই-বাঙ্গালা’ ও ‘শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান’ উপাধি ধারণ করেন । স্বাধীন সুলতানি আমলের অপর অন্যতম উল্লেখযোগ্য শাসক ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ। ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা এবং বাংলা শিল্প, সাহিত্যের বিকাশে তাঁর অবদান অপরিসীম। যাহোক, ১৫৩৮ সালে অবসান ঘটে বাংলার স্বাধীন সুলতানি শাসনের। অবশ্য এর আগেই মোগল শক্তি দিল্লির সিংহাসন দখল করেছিল। মোগল সম্রাট হুমায়ুন ১৫৩৮ সালে উত্তরবাংলার গৌড় অর্থাৎ লখনৌতি দখল করলেও বাংলায় তখন মোগল শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেন নি। এর কারণ, বিহারের আফগান শাসক শের খান হুমায়ুনকে প্রথমে বাংলা ও পরে ভারত থেকে বিতাড়িত করেন। এ পর্বে বাংলার শাসন ক্ষমতা আফগানদের হাতে চলে যায় ।

ভারতে মোগলরা আবার সংগঠিত হয় এবং রাজমহলের যুদ্ধে আফগানদের পরাজিত করে দিল্লির সিংহাসন পুনরুদ্ধার করেন। এরপর সম্রাট আকবরের সময় ১৫৭৬ সালে পশ্চিম বাংলা ও উত্তর বাংলার অনেকটা অংশ মোগলদের অধিকারে আসে। বাংলার পূর্বাংশ অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশ অংশ সহজে মোগলরা দখল করতে পারে নি। বারোভূঁইয়া নামে পরিচিত পূর্ববাংলার জমিদাররা একযোগে মোগল আক্রমণ প্রতিহত করেন। আকবরের সেনাপতি মানসিংহ কয়েকবার চেষ্টা করেও বারোভূঁইয়াদের নেতা ঈশা খাঁকে পরাজিত করতে পারেন নি। সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ১৬১০ সালে মোগল সুবেদার ইসলাম খান চিশতি চূড়ান্তভাবে বারোভূঁইয়াদের পরাজিত করে ঢাকা অধিকার করেন এবং তৎকালীন দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের নাম অনুসারে জাহাঙ্গীরনগর নামকরণ করেন। এভাবেই বাংলায় মোগল অধিকার সম্পন্ন হয়। এই মোগল শাসন চলে আঠারো শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত। ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে মোগল শাসনের চূড়ান্ত অবসান ঘটে। সেই সাথে বাংলার ক্ষমতা দখল করে ইংরেজ শক্তি। আর এভাবেই শুরু হয় ঔপনিবেশিক শক্তির শাসন।

কাজ-১ : ঔপনিবেশিক শাসন বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো ।

কাজ-২ : খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে ঔপনিবেশিক যুগ পর্যন্ত বাংলার শাসকদের পর্যায়ক্রমিক তালিকা তৈরি করো।

Content added By

দুই চলকবিশিষ্ট সরল সহসমীকরণে দুইটি সরল সমীকরণ থাকে। দুইটি সরল সমীকরণের জন্য লেখ অঙ্কন করলে দুইটি সরলরেখা পাওয়া যায়। এদের ছেদবিন্দুর স্থানাঙ্ক উভয় সরলরেখায় অবস্থিত। এই ছেদবিন্দুর স্থানাঙ্ক অর্থাৎ (x, y) প্রদত্ত সরল সহসমীকরণের মূল হবে। x ও y -এর প্রাপ্ত মান দ্বারা সমীকরণ দুইটি যুগপৎ সিদ্ধ হবে । অতএব, সরল সহসমীকরণ যুগলের একমাত্র সমাধান যা, ছেদবিন্দুটির ভুজ ও কোটি। মন্তব্য : সরলরেখা দুইটি সমান্তরাল হলে, প্রদত্ত সহসমীকরণের কোনো সমাধান নেই।

উদাহরণ ৬। লেখের সাহায্যে সমাধান কর :

                     x + y = 7..…………(i)

                     x - y =1……………….(ii)

সমাধান : প্রদত্ত সমীকরণ (i) হতে পাই,

                     y = 7 - x…………….(iii)

x এর বিভিন্ন মানের জন্য y এর মান বের করে নিচের ছকটি তৈরি করি :

x-2-101234
y9876543

ছক-১

আবার, সমীকরণ (ii) হতে পাই,

                     y = x - 1…………….…(iv)

x এর বিভিন্ন মানের জন্য y এর মান বের করে নিচের ছকটি তৈরি করি :

x-2-101234
y-3-2-10123

ছক-২

মনে করি, XOX' ও YOY' যথাক্রমে x -অক্ষ ও y-অক্ষ এবং o মূলবিন্দু। 

উভয় অক্ষের ক্ষুদ্রতম বর্গের প্রতিবাহুর দৈর্ঘ্যকে একক ধরি। ছক-১ এ (-2, 9), (–1, 8), (0, 7), (1, 6), (2, 5), (3, 4) ও ( 4, 3 ) বিন্দুগুলোকে ছক কাগজে স্থাপন করি । এই বিন্দুগুলো যোগ করে উভয় দিকে বর্ধিত করে সমীকরণ (i) দ্বারা নির্দেশিত সরলরেখাটির লেখ পাই,

লেখচিত্র

আবার, ছক-২ এ (−2, – 3), (–1, – 2), (0, – 1), (1, 0), (2, 1), (3, 2) ও ( 4, 3 ) বিন্দুগুলো ছক কাগজে স্থাপন করি। এই বিন্দুগুলো যোগ করে (ii) নং সমীকরণ দ্বারা নির্দেশিত সরলরেখাটির লেখ পাই। এই সরলরেখাটি পূর্বোক্ত সরলরেখাকে A বিন্দুতে ছেদ করে। A বিন্দু উভয় সরলরেখার সাধারণ বিন্দু। এর স্থানাঙ্ক উভয় সমীকরণকে সিদ্ধ করে। লেখ থেকে দেখা যায়, A বিন্দুর ভুজ 4 এবং কোটি 3 । নির্ণেয় সমাধান (x,y) = ( 4, 3)

 

উদাহরণ ৭। লেখের সাহায্যে সমাধান কর :

                     3x + 4y - 10…………..(i)

                          x - y = 1……………(ii)

সমীকরণ (i) হতে পাই,

                     4y = 10 -3x

                     y=10-3x4

x এর বিভিন্ন মানের জন্য y এর মান বের করে নিচের ছকটি তৈরি করি

x-20246
y4521-12-2

ছক-১

(ii) এর সমীকরণ হতে পাই,

                     y=x-1

x এর বিভিন্ন মানের জন্য y এর মান বের করে নিচের ছকটি তৈরি করি :

x-20246
y-3-1135

ছক-২

মনে করি, XOX' ও YOY' যথাক্রমে x- অক্ষ ও y-অক্ষ এবং 0 মূলবিন্দু।

উভয় অক্ষের ক্ষুদ্রতম বর্গের প্রতিবাহুর দৈর্ঘ্যকে একক ধরি । ছক-১ এ (-2, 4), 0, 52, (2, 1), 4, -12 ও (6, -2)

বিন্দুগুলোকে লেখ কাগজে স্থাপন করি । এই বিন্দুগুলো যোগ করে উভয় দিকে বর্ধিত করে একটি সরলরেখা পাওয়া গেল। যা (i) নং সমীকরণ দ্বারা নির্দেশিত সরলরেখার লেখচিত্র।

আবার, ছক-২ এ (−2, – 3), (0, – 1), (2, 1), ( 4, 3 ) ও (6, 5) বিন্দুগুলো লেখ কাগজে স্থাপন করি। এই বিন্দুগুলো যোগ করে উভয় দিকে বর্ধিত করে একটি সরলরেখা পাওয়া গেল । যা, (ii) নং সমীকরণ দ্বারা নির্দেশিত সরলরেখার লেখচিত্র।

লেখচিত্র

এই সরলরেখাটি পূর্বোক্ত সরলরেখাকে A বিন্দুতে ছেদ করে। A বিন্দু উভয় সরলরেখার সাধারণ বিন্দু। এর স্থানাঙ্ক উভয় সমীকরণকে সিদ্ধ করে। লেখ থেকে দেখা যায় যে, A বিন্দুর ভুজ 2 এবং কোটি 1 । নির্ণেয় সমাধান (x, y) = (2, 1)

Content added || updated By

ইউরোপের কোনো কোনো দেশে খনিজ সম্পদের আবিষ্কার, সমুদ্রপথে বাণিজ্যের বিস্তার এবং কারিগরি ও বাণিজ্যিক বিকাশের ফলে অর্থনীতি তেজি হয়ে উঠেছিল। এর ফলে চৌদ্দ শতক থেকে ইউরোপে যুগান্তকারী বাণিজ্য-বিপ্লবের সূচনা হয়। তখন একদিকে তাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা শক্তিশালী হতে শুরু করে। অন্যদিকে কাঁচামাল ও উৎপাদিত সামগ্রীর জন্যে বাজারের সন্ধানও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে ।

১৪৯৮ সালে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা সমুদ্র পথে বাণিজ্য বিস্তারের অন্বেষণে দক্ষিণ ভারতের কালিকট বন্দরে পৌঁছান । এর মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষ বিশ্ব বাণিজ্য বিস্তারের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ক্রমান্বয়ে এই প্রতিযোগিতায় সামিল হতে থাকে। এই লক্ষ্যে সতেরো শতকে একে একে ‘ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (হল্যান্ড), ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ফ্রেঞ্চ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইত্যাদি বাণিজ্যিক কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। এদের অধিকাংশের লক্ষ্য ছিল ভারতবর্ষ। আবার তার মধ্যে বাংলার সিল্ক ও অন্যান্য মিহি কাপড় এবং মসলা তাদের প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠে।

পুঁজির শক্তিশালী প্রভাব আর উন্নত কারিগরি জ্ঞানের সমন্বয় করে ক্রমে বিদেশি বণিকরা এদেশে স্থানীয় শ্রমিকদের খাটিয়ে বড় বড় শিল্পকারখানা স্থাপন করে প্রচুর মুনাফা করতে থাকে। ক্রমে ব্যবসার ক্ষেত্রে পর্তুগিজদের চেয়ে ইংরেজদের ভূমিকা প্রাধান্য পায়। এছাড়া ফরাসি, ওলন্দাজ ও দিনেমাররাও বাংলায় কারখানা স্থাপন করে ব্যবসা শুরু করে। এই বিদেশি বণিকদের বিনিয়োগ ও ব্যবসা কেমন ছিল তার কিছুটা হদিস মিলে বিদেশি পর্যটকদেরই বর্ণনায়। ফরাসি পর্যটক বার্নিয়ের ১৬৬৬ সালে লিখেছেন, ‘ওলন্দাজরা তাদের কাশিমবাজারের সিল্ক ফ্যাক্টরিতে কখনো কখনো ৭শ থেকে ৮শ লোক নিয়োগ করত'। ইংরেজ ও অন্যান্য জাতির বণিকরাও এরকম কারখানা চালাত। বার্নিয়ের আরও লিখেছেন, ‘শুধুমাত্র কাশিমবাজারে বছরে ২২ হাজার বেল সিল্ক উৎপাদিত হতো।'

এভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে ইউরোপের বণিকরা দেখলো বাংলায় স্থায়ী বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপন করেই বেশি লাভ করা সম্ভব । জব চার্ণক নামক জনৈক ইংরেজ প্রতিনিধি ১৬৯০ সালে ১২০০ টাকার বিনিময়ে কলকাতা, সুতানটি ও গোবিন্দপুর নামে গ্রাম ক্রয় করেন যা পরবর্তীকালে কলকাতা নামে পরিচিত হয় । এই কলকাতাই এক সময় ইংরেজদের বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ বিস্তারের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়। এ সময় কলকাতা, চন্দননগর, চুঁচুড়া, কাশিমবাজার প্রভৃতি স্থানে ইউরোপীয় বাণিজ্যকেন্দ্রগুলো ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকে। আর এদের মাধ্যমে বাংলা থেকে পুঁজিও পাচার হতে থাকে। বাণিজ্যিক উদ্যোগ এবং কূট কৌশলে পারদর্শী হবার কারণে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্রমশঃ অন্যান্য ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর তুলনায় প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যায় এবং তাদের উপর প্রাধান্য লাভ করে । তারা এখানে কুঠি, কারখানা তৈরি ও সৈন্য রেখে ব্যবসার অধিকার পায়। ইংরেজ কোম্পানির ক্ষমতা বিশেষভাবে বৃদ্ধি পায় দিল্লির সম্রাট ফাররুখশিয়ারের কাছ থেকে বাংলায় বিনা শুল্কে বাণিজ্যসহ আরো একাধিক উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যিক সুবিধা প্রাপ্তিতে। এইসব সুবিধাদি তাদের দিনে দিনে উচ্চাভিলাষী এবং রাজনৈতিক ক্ষমতালোভী করে তোলে। পলাশি যুদ্ধের আগে এবং মীর জাফর ও মীর কাশিমের আমলে বাংলার প্রচুর সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার হয়ে যায়। এ সম্পদের প্রাচুর্যের কথা স্বয়ং ক্লাইভ ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টে সবিস্ময়ে উল্লেখ করেছিলেন।

কাজ-১ : ভারতবর্ষে যে সকল ইউরোপীয় শক্তির আগমন হয় তার তালিকা তৈরি করো ।

কাজ-২ : ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কীভাবে বাণিজ্যিক বিস্তার ঘটায়?

Content added By
Please, contribute to add content into অনুশীলনী ৬.২.
Content

আগেই বলা হয়েছে যে ইংরেজরা ক্রমশঃ ক্ষমতা আকাঙ্খী হয়ে উঠেছিল। ফলে বাংলার নবাবদের সাথে এদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। নবাব আলিবর্দি খাঁর মৃত্যুর পর তাঁর প্রিয় নাতি সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ২২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। এই সময় তাঁর সামনে একদিকে উদীয়মান ইংরেজ শক্তি ও হামলাকারী বর্গিদের সামলানোর কঠিন কাজ, পাশাপাশি বড় খালা ঘসেটি বেগম ও সেনাপতি মীর জাফর আলী খানের মতো ঘনিষ্ঠজনদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলার কাজ। সিরাজের বিরুদ্ধে তৃতীয় আরেকটি পক্ষও (বণিক শ্রেণি) সক্রিয় ছিল। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটার সাথে সাথে বড় ব্যবসাকেন্দ্রগুলোতে প্রভাবশালী দেশীয় বণিকসমাজের অভ্যুদয় ঘটে। বাংলায় এরা ছিল প্রধানত রাজপুতানা থেকে আসা মারওয়াড়ি বণিক । এদের মধ্যে জগৎ শেঠ, উমিচাঁদ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। নবাবের বিপরীতে একাধিক দেশীয় ষড়যন্ত্রকারী ও ইংরেজরা গোপনে জোট বাঁধে। শাসনকাজে নবাবের অদক্ষতা বিরোধী পক্ষের অবস্থানকে শক্তিশালী করে। এরই সবশেষ ফল হলো ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশির আম্রকাননে পলাশির যুদ্ধে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাবের পরাজয় ও নির্মম মৃত্যু এবং ইংরেজদের হাতে বাংলার পতন। বিজয়ের পর ইংরেজরা মীর জাফরকে নবাব বানালেও, মূল ক্ষমতা তাদের হাতে চলে যায়। ধূর্ত ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভ হন সর্বেসর্বা। তবে ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে মীর জাফরের উত্তরসূরী মীর কাশিমের পরাজয়ের মাধ্যমে বাংলার শাসন ক্ষমতা আনুষ্ঠানিকভাবে ইংরেজদের হস্তগত হয়।

বাংলার প্রতিষ্ঠিত রাজশক্তির বিরুদ্ধে একটি ভিনদেশী বানিজ্যিক কোম্পানি তথা ঔপনিবেশিক শক্তির এই বিজয়ের কারণ কী ছিল? এর পিছনে নানাবিধ কারণ থাকলেও কয়েকটা প্রধান কারণ হলো-

১. বাংলার শাসকদের দুর্বলতা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও চক্রান্ত এবং তা মোকাবিলায় তরুণ অনভিজ্ঞ নবাবের অপারগতা;

২. উদীয়মান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি হিসাবে ইংরেজদের উত্তরোত্তর ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অন্যদিকে তাদের কূট কৌশল বোঝার মতো পারদর্শী দেশীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও শক্তির অভাব;

৩. ইংরেজদের উন্নত সামরিক শক্তি, রণকৌশল ও নেতৃত্ব;

৪ . অর্থনৈতিক শোষণ ও নির্যাতনের শিকার প্রজাদের সাথে শাসকদের দূরত্ব এতটাই ছিল যে নবাবের সাথে ইংরেজদের দ্বন্দ্বে বাংলার সাধারণ মানুষ ছিল নির্বিকার। প্রজাদের এই নিষ্ক্রিয়তা পরোক্ষভাবে ইংরেজদের সুবিধা দেয় ।

কাজ-১ : পলাশীর যুদ্ধ কী?

কাজ-২ : বাংলায় ইংরেজরা কেন জয়লাভ করেছিল?

Content added By

এদেশে ইংরেজ শাসনামল মূলতঃ দুইটি পর্বে বিভক্তঃ 

ক. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী শাসনামল (১৭৬৫-১৮৫৭) 

খ. ব্রিটিশ সরকারি শাসনামল (১৮৫৮-১৯৪৭)।

বক্সারের যুদ্ধের পর ১৭৬৫ সালে মোঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গভর্নর রবার্ট ক্লাইভের মধ্যে সম্পাদিত এলাহাবাদ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দেওয়ানি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর হাতে চলে যায়। দেওয়ানি লাভের পর বাংলার নবাবকে বৃত্তিভোগীতে পরিণত করে রবার্ট ক্লাইভ দ্বৈতশাসন প্রবর্তন করেন। দ্বৈতশাসন ছিল একটি অদ্ভুত শাসন ব্যবস্থা। এই শাসন ব্যবস্থায় ক্লাইভ বাংলার নবাবের উপর শাসন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং রাজস্ব আদায় ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত করেন কোম্পানির উপর। এর ফলে নবাব পেলেন ক্ষমতাহীন দায়িত্ব আর কোম্পানি লাভ করলো দায়িত্বহীন ক্ষমতা ।

দ্বৈতশাসন ছিল এদেশের মানুষের জন্য এক চরম অভিশাপ। রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব পেয়ে ইংরেজরা প্রজাদের উপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে তা আদায়ে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে। কোম্পানি এবং এর কর্মচারীদের অর্থের লালসা দিন দিন বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত করের চাপে যখন জনগণ ও কৃষকের নাভিশ্বাস উঠার অবস্থা সে সময় দেশে পর পর তিন বছর অনাবৃষ্টির ফলে খরায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬) সালে বাংলায় নেমে আসে দুর্ভিক্ষের করাল ছায়া। দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ লোক অনাহারে মারা গেলেও কোম্পানি করের বোঝা কমানোর কোনো পদক্ষেপ নেয় নি। এই দুর্ভিক্ষে বাংলার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোকের মৃত্যু হয়েছিল । ইতিহাসে এটি ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।

১৭৭৩ সালের পর থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নরদের পদবি হয়ে যায় গভর্নর জেনারেল। কয়েকজন উল্লেখযোগ্য গভর্নর জেনারেল হলেন ওয়ারেন হেস্টিংস, লর্ড কর্নওয়ালিস, লর্ড ওয়েলেসলি, লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক, লর্ড হার্ডিঞ্জ, লর্ড ডালহৌসি প্রমুখ। ভারতবর্ষে ইংরেজ সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে তারা ডাক ও তার এবং রেল যোগাযোগ স্থাপনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।

ইংরেজ শাসকদের গৃহীত প্রধান প্রধান কাজ নিচে উল্লেখ করা হলো—

১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গৃহীত ভারত শাসন আইনে বাংলায় ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেলের হাতে ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা অর্পণ করা হয় ।

২.১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করে ব্রিটিশদের অনুগত জমিদার শ্রেণি তৈরি করা হয়।

৩. রাষ্ট্র ও প্রশাসন পরিচালনায় ইংরেজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা হয় ।

৪. মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তর, শিক্ষা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে রূপান্তর করা হয়। ১৭৭২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতাকে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ঘোষণা করেন।

তবে কোম্পানী শাসনামলে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক ও লর্ড হার্ডিঞ্জ এদেশে শিক্ষা বিস্তারসহ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সূচনা করেন। এ ছাড়া সতীদাহ প্রথা ও বাল্যবিবাহ রোধ এবং বিধবা বিবাহ প্রবর্তনসহ সামাজিক কুপ্রথা নিবারণে রাজা রামমোহন রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো বাঙালিদের উদ্যোগকে তারা সহযোগিতা দেন। এভাবে দেশে একটি নতুন শিক্ষিত শ্রেণি ও নাগরিক সমাজ গড়ে উঠলেও বৃহত্তর বাঙালি সমাজ ইংরেজ কোম্পানির শাসনে প্রকৃতপক্ষে শোষিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দখল পেয়েই ক্ষান্ত ছিল না। দিল্লিতে সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মোগল সাম্রাজ্যে বিভিন্ন সংকট দেখা দেয়। সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ছোটোবড়ো নবাব ও দেশীয় রাজারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। এর ফলে দিল্লির মসনদও দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগে কোম্পানির সেনাবাহিনী নানা দিকে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে।

১৮৫৭ সালে কোম্পানি শাসনের প্রায় একশ বছর পরে ইংরেজ অধ্যুষিত ভারতের বিভিন্ন ব্যারাকে সিপাহিদের মধ্যে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু উন্নত অস্ত্র ও দক্ষ সেনাবাহিনীর সাথে চাতুর্য ও নিষ্ঠুরতার যোগ ঘটিয়ে ইংরেজরা এ বিদ্রোহ দমন করে। এরপর ১৮৫৮ সালের ২রা আগস্ট ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারত শাসন আইন পাস হয়, যার মধ্য দিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনের অবসান ঘটে। ব্রিটিশ সরকার সরাসরি ভারতের শাসনভার নিজ হাতে গ্রহণ করে। ভারত শাসন আইনের ফলে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা কর্তৃক একজন মন্ত্রীকে ভারতসচিব পদে (Secretary of State for India) মনোনীত করা হয় যিনি ১৫ সদস্যবিশিষ্ট পরামর্শক সভা বা কাউন্সিলের মাধ্যমে ভারত শাসনের ব্যবস্থা করবেন। এই আইন অনুসারে গভর্নর জেনারেলকে ভাইসরয় বা ব্রিটিশ রাজ প্রতিনিধি নামে অভিহিত করা হয়। লর্ড ক্যানিং প্রথম ভাইসরয় নিযুক্ত হন। এভাবেই ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ১৮৬১ সালে ভারত সরকারকে বাংলায় প্রতিনিধিত্বমূলক আইনপরিষদ স্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং বঙ্গীয় আইনপরিষদ প্রতিষ্ঠার ঘোষণাও দেওয়া হয়। ১৮৬২ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে বঙ্গীয় আইনপরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। এর সদস্য সংখ্যা প্রথমে ১২ জন ছিল । ১৮৯২ সালে ২১ জন করা হয়। শুরুতে এই সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার বিধান ছিল না। পরে ভোটে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের দ্বারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে এটি গড়ে উঠে এবং এ ধারাই বাংলাসহ সারা ভারতে প্রচলিত হয়। তবে আইনপরিষদের উপর ব্রিটিশ শাসকদের কর্তৃত্ব ঠিকই বহাল ছিল ।

ব্রিটিশ শাসনকালে (১৮৫৮-১৯৪৭) বাংলার সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল কৃষক, অন্যদিকে মুষ্টিমেয় জমিদার ছিল সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণি। সমাজে কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষের সংখ্যা যথেষ্ট ছিল না। বস্তুত ব্রিটিশ শাসনে বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড কৃষি ও এককালের সমৃদ্ধ তাঁতশিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায়। বাংলার বণিক গোষ্ঠী তেমন সংগঠিত ছিল না, শিল্পেও বাংলার অবস্থান তখন উল্লেখ করার মতো নয়। সামাজিক অনুশাসনের দাপটে নারীসমাজ ব্যাপকভাবে পিছিয়ে ছিল। মধ্যবিত্ত সমাজও ততটা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে নি। ব্রিটেন ছিল সেই সময়ে পৃথিবীর প্রধান ধনী দেশ। গোটা ভারত ছিল ব্রিটেনের উপনিবেশ অর্থাৎ শোষণের ক্ষেত্র।

কাজ-১ : ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কী? ব্যাখ্যা করো । 

কাজ-২ : ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে ভারত ইংরেজদের দ্বারা কীভাবে শাসিত হয়?

Content added By