উদ্দীপকের ছক দ্বারা নির্দেশিত বিষয় বা জ্ঞাতিসম্পর্ক সমাজজীবনের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। যেমন-
জ্ঞাতিসম্পর্কের ওপর ভিত্তি করেই সমাজে মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক বা মিথস্ক্রিয়া, পারস্পরিক দেনা-পাওনা, দায়িত্ব-কর্তব্য বা দায়-দাবির সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জ্ঞাতিসম্পর্ক প্রতিকূল প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষ করে প্রাচ্য দেশের মতো যেসব দেশে গোষ্ঠী জ্ঞাতিসম্পর্কের প্রতি বেশি অনুগত তারা নিরপেক্ষভাবে আমলাতান্ত্রিক কাজকর্ম করতে পারে না। প্রাচীন বা আধুনিক প্রায় সব সমাজেই জ্ঞাতিসম্পর্ক হচ্ছে সমাজকাঠামোর অন্যতম চাবিকাঠি। জ্ঞাতিসম্পর্ক বিষয়ে অর্জিত জ্ঞান কোনো সমাজের কাঠামো অনুধাবনে সহায়তা করে। আবার, বিবাহ প্রথায় জ্ঞাতিসম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন নতুন পেশা বা কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি এবং নতুন ধরনের অর্থনৈতিক কার্যাবলির সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া গ্রামীণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও জ্ঞাতিদের ভূমিকা লক্ষণীয়। ব্যক্তি হোক আর গোষ্ঠী হোক, জ্ঞাতিদের সাহায্য ও সহযোগিতা ছাড়া গ্রামের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করা কষ্টসাধ্য। বস্তুত সমাজের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জ্ঞাতিসম্পর্কের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্র, যেমন- ব্যক্তির সামাজিকীকরণ, উৎপাদন, সংগঠন, সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানাদি পালন ইত্যাদিতে জ্ঞাতিসম্পর্কের ভূমিকা শুধু তাৎপর্যপূর্ণই নয়, বরং অপরিহার্য।