Job

'মোবাইল ব্যাংকিং ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি' বিষয়ে ২৫০ শব্দে একটি রচনা লিখুন।

Created: 1 year ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

                                                                                                             মোবাইল ব্যাংকিং ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি

বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবার প্রচলন ও এর বাস্তবায়নের প্রয়াস চলছে বেশ জোরেশোরে। আর একটি উন্নয়নশীল দেশ তথা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক ভুক্তি এবং গ্রামীণ উন্নয়নের গুরুত্ব সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। গ্রামীণ স্বল্প আয়ের জনগণকে আর্থিক সেবার আওতায় এনে গ্রাম তথা দেশের সার্বিক উন্নয়নে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব। এর পরও অস্বীকার করার উপায় নেই, এখনো দেশের ব্যাংকিং খাতের ঋণ ও ব্যাংকিং সুবিধা মূলত ব্যবহার করছে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং বড় ও মাঝারি শিল্প ও বা প্রতিষ্ঠানগুলো। নিম্নবিত্ত সাধারণ জনগণ এবং ছোট শিল্প ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এখনো পর্যন্ত ব্যাংকের ঋণ ও অন্যান্য সুবিধ যথেষ্ট পরিমাণে পৌছানো সম্ভব হয়নি বা সেক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সুযোগ রয়েছে। তবে গত কয়েক বছ বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের প্রচেষ্টায় এবং কিছু ব্যাংকের বিশেষ দক্ষতায় সামগ্রিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। বিশেষত সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাত-সম্পর্কিত নীতিমালায় এ বিষয়গুলো যথাযথভাবে প্রতিস্থাপন করেছে এবং বাংলাদেশে নিম্ন আয়ের মানুষ ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং খাতের সেবার আওতায় আনার জন্য উল্লেখযোগ্য। পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ রকম পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বেশকিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেশের পশ্চাৎপদ জনগণকে আর্থিক সেবার আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের এসব কার্যক্রম ও পদক্ষেপ এরই মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও গ্রামীণ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয় পরিবর্তন এনেছে ব্যাংকিং সেবায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার। মনে করা হচ্ছে, তথ্যনির্ভর ব্যাংকিং সেবা অন্ত ভুক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ের বিকাশে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে সামনের দিনগুলোয়। 

আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রথম পদক্ষেপ হয়ে থাকে ব্যাংকিং খাতকে সম্পৃক্ত করে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা। বিশেষত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে অর্থ লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং এরই মধ্যে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে গ্রামীণ জনজীবনে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে। বিশেষত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অর্জনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব। এ ধরনের লেনদেন বা পেমেন্ট সেবা একেবারে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সংজ্ঞার মূল স্থপতি না হলেও সার্বিকভাবে আর্থিক সেবার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং বলতে আমরা সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রমকে বুঝি না। শুধু মোবাইল ব্যবহার করে লেনদেন কার্যক্রম বা অর্থ স্থানান্তরকে বুঝিয়ে থাকি। দ্রুতগতিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিস্তার আর্থিক লেনদেনকে সহজতর করেছে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। দৈনন্দিন কেনাকাটা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জীবনযাপনে, বিশেষত স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিস্তারের প্রভাব বেশ লক্ষণীয়। এ আর্থিক সুবিধার প্রকৃত প্রভাব এবং পরিবর্তন গ্রামীণ অর্থনীতি বদলে দিয়েছে। যে গতিতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিস্তার লাভ করছে, তাতে আশা করা যায় অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণকে সম্পূর্ণভাবে আর্থিক খাতে অন্ত র্ভুক্ত করা সম্ভব। এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক এবং উৎসাহব্যঞ্জক হলেও এ কথা মনে রাখা প্রয়োজন মোবাইল আর্থিক সেবার অন্তর্ভুক্তি প্রকৃত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রথম ধাপ। এখন সময় এসেছে সর্বজনীন আমানত ও ঋণ সেবা বিস্তারে তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করা এবং সম্পূর্ণ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা। 

আর্থিক অন্তর্ভুক্তি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। দেশের একটি বড় অংশকে এখনো বিদ্যমান ব্যাংকিং আমানত ও ঋণসেবার আওতায় আনা যায়নি। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বেশকিছু ব্যাংকের পদক্ষেপের পরও একটি বড় অংশের নিম্ন আয়ের মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতায় এলেও তাদের ব্যাংকের ঋণসেবার আওতায় আনার জন্য ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন। কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে ঋণ ও আমানত সেবা ব্যতীত আমাদের মতো দেশে একটি টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বেশির ভাগ জনগণ এখনো কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত দেশের কৃষি ও গ্রামীণ খাতের প্রয়োজন অনুযায়ী খুব সামান্যই ঋণসেবা প্রদান করতে পেরেছে। প্রকৃতপক্ষে কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি এখনো অনেক ক্ষেত্রে মহাজন বা অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণের ওপর নির্ভরশীল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ব্যাংকিং সেবা যেমন বিশেষ ব্যাকে অ্যাকাউন্ট, এসএমই ঋণ, ক্ষুদ্রঋণ ইত্যাদি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক গৃহীত পদক্ষেপগুলো লক্ষণীয় পরিবর্তন এনেছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এজেন্ট ব্যাংকিং প্রচলনের অনুমতি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ের সূচনা ।

1 year ago

বাংলা

Please, contribute to add content.
Content
Promotion