আখিরাত হলো মৃত্যুর পরবর্তী জীবন । বাংলা ভাষায় একে পরকাল বলা হয় । ইসলামি পরিভাষায় মৃত্যুর সাথে সাথে মানুষের যে নতুন জীবন শুরু হয় তা-ই পরকাল বা আখিরাত। এ জীবনের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই । এটি অনন্ত ও চিরস্থায়ী জীবন ।
আখিরাত বা পরকালের দুটি পর্যায় রয়েছে । যথা-
ক. বারযাখ
খ. কিয়ামত।
বারযাখ
দুটি বস্তুর মধ্যবর্তী পর্যায়কে বারযাখ বলে । মানুষের মৃত্যু থেকে কিয়ামত বা পুনরুত্থান পর্যন্ত সময়কে বারযাখ বলে । এটি কিয়ামত ও দুনিয়ার জীবনের মধ্যবর্তী পর্দা স্বরূপ । মানুষের মৃত্যুর পর এ জীবনের শুরু হয় । আল্লাহ তায়ালা বলেন-
অর্থ : “আর তাদের সামনে রয়েছে বারযাখ যা পুনরুত্থান পর্যন্ত বিদ্যমান থাকবে।” (সূরা আল-মু'মিনূন, আয়াত ১০০) বারযাখ হলো কবরের জীবন । এটি আখিরাতের সর্বপ্রথম পর্যায় । বারযাখ জীবনে মানুষ দুনিয়ার ভালো আমলের কারণে শান্তি ভোগ করবে আর খারাপ আমলের জন্য শাস্তি ভোগ করবে।
কিয়ামত
কিয়ামত অর্থ দণ্ডায়মান হওয়া, উঠা । ইসলামি পরিভাষায় কবর থেকে মানুষ উঠে সেদিন আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে, তাই একে বলা হয় কিয়ামত । কিয়ামতে মানুষকে পুনরায় জীবিত করা হবে । এরপর নেককারদের জান্নাতে এবং পাপীদের জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে।
গুরুত্ব
আখিরাত আকাইদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আখিরাতের প্রতি ইমান আনা অপরিহার্য । আখিরাতে বিশ্বাস না করলে মানুষ ইমানদার হতে পারে না । মুমিনদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
অর্থ : “আর তাঁরা (মুত্তাকিগণ) আখিরাতের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে ।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ৪)
আখিরাতে বিশ্বাস মানুষকে সৎকর্মশীল করে তোলে । এর ফলে মানুষ উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার গুণাবলি অনুশীলন করে । আল্লাহ তায়ালা বলেন-
অর্থ : “আর যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর সত্যবিমুখ এবং তারা অহংকারী।” (সূরা আন-নাহ্ল, আয়াত ২২)
আখিরাতে বিশ্বাস না করলে মানুষ দুনিয়াকেই সবকিছু মনে করে । ফলে যেকোনো উপায়ে দুনিয়ার স্বার্থ হাসিল করতে চায় । অন্যায়, অত্যাচার, অনৈতিক কার্যকলাপ সবকিছুই তার দ্বারা সংঘটিত হয় । যেকোনো পাপ করতে সে দ্বিধাবোধ করে না । আখিরাতে বিশ্বাস মানুষকে এরূপ কাজ থেকে বিরত রাখে এবং পবিত্র করে তোলে।
সুতরাং আমরা আখিরাতে বিশ্বাস করব এবং নৈতিক ও পূত-পবিত্র জীবনযাপন করব।
কাজ : এই পাঠ শেষে আখিরাত সম্পর্কে শিক্ষার্থী যা শিখল তা লিখে শিক্ষককে দেখাবে। |
আরও দেখুন...