যিনি নেতৃত্ব দেন তাকে নেতা বলা হয়। নেতার কাজ হচ্ছে উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য প্রতিষ্ঠানেরকর্মীদের উৎসাহিত ও পরিচালনা করা।নেতৃত্বদানের কঠিন দায়িত্বশীল কাজটি সম্পাদনের জন্য একজন নেতার অনেকগুলো গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। কেননা উপযুক্ত নেতৃত্ব যেমন একটি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনকে সহজতর করে, তেমনি নেতার অযোগ্যতা প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। নিম্নে একজন আদর্শ নেতার গুণগুলো বিশ্লেষণ করা হলো।
১. দৈহিক সামর্থ্য ও সুস্থতা : নেতাকে অনেক দৈহিক ও মানসিক পরিশ্রম ও চাপ বহন করতে হয়। এ জন্য তার দৈহিক সামর্থ্য থাকার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা থাকা আবশ্যক। তাছাড়া তার দৈহিক গঠনও আকর্ষণীয় হওয়া উচিত।
২. প্রখর ব্যক্তিত্ব : নেতাকে ব্যক্তিগতভাবে ধীর-স্থির হতে হয়। মার্জিত ব্যবহার, সম্মোহনী ক্ষমতা মিশ্রিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী নেতাকে অধস্তনরা সম্মান করে।
৩. শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা : আনুষ্ঠানিক শিক্ষা মানুষকে অনেক ইতিবাচক জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনে সাহায্য করে। সাথে সাথে অভিজ্ঞতাও তাকে সমৃদ্ধ করে। তাই একজন নেতার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা থাকা কাম্য।
৪. সাহস ও সততা : নেতাকে সবসময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হয়। তাকে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং কাজে হাত দিতে হয়। তাই তাকে হতে হয় সাহসী। সাথে সাথে তাকে সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ হতে হয় । কারণ সততা ও সাহসের জন্য সে অন্যের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা অর্জন করে।
৫. পরিশ্রম ও সহনশীলতা : পরিশ্রম যে কোন কাজের মূল। নেতাকেও তার দায়িত্বের জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। নেতা যদি অলস হন, কাজ না করেন, অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যান তাহলে অধঃস্তনদের সঠিকভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া সহনশীলতা না থাকলে তার পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব হবে না।
৬. দায়িত্বশীলতা ও সহযোগিতা : দায়িত্বের প্রতি নেতার একাগ্রতা অনুসারীদের জন্য অনুপ্রেরণার কারণ হয় । অন্যদিকে সকলের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনকে সহজতর করে তোলে ।
৭. সাংগঠনিক দক্ষতা : একজন নেতার প্রতিষ্ঠানের সকল বিষয়ে দক্ষতা থাকা উচিত, যাতে কোন দায়িত্বের জন্য কে উপযুক্ত তা বাছাই করতে পারেন এবং সে অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টন করে দিতে পারেন।
৮. মানবিক সম্পর্ক অনুধাবনঃ একজন সফল নেতার অবশ্যই তার সাথের লোকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, দৃষ্টিভঙ্গি, যোগ্যতা, রুচি, ব্যক্তিত্ব অনুধাবন করার যোগ্যতা থাকা উচিত। সহকর্মীদের মনোভাব অনুযায়ী নেতৃত্ব দিতে না পারলে কার্যকর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল আশা করা যায় না।
৯. সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা : যথাসময়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপর প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য নির্ভর করে। নেতাকে তার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। নেতার গৃহীত সিদ্ধান্ত অধঃস্তনদের আস্থা ও মনোবল বাড়িয়ে দেয় ।
১০. জেন্ডার সচেতনতা : একজন নেতা তিনি নারী বা পুরুষ যেই হোন না কেন তাকে অবশ্যই তার সহকর্মী নারী-পুরুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সহানুভূতিশীল হতে হবে। তাকে অবশ্যই পক্ষপাতহীন হতে হবে। নারী-পুরুষের ভিন্ন-ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থেকে তাকে নেতৃত্ব দিতে হয় ৷
আরও দেখুন...