নিউটনের প্রথম সূত্রে প্রথমবার “বল” শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে বল বলতে আমরা কী বোঝাই, সেটা এখনো বলা হয়নি। এটা যদি পদার্থবিজ্ঞানের বই না হয়ে অন্য কোনো বই হতো তাহলে “বল প্রয়োগ”-এর জায়গায় “শক্তি প্রয়োগ” কথাটা ব্যবহার করলেও বাক্যটায় অর্থের কোনো উনিশ-বিশ হতো না। কিন্তু যেহেতু এটা পদার্থবিজ্ঞানের বই, তাই আমরা এখানে শক্তি কথাটা ব্যবহার করতে পারব না। পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় শক্তি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা রাশি! এখানে আমাদের বল কথাটাই ব্যবহার করতে হবে! কিন্তু বল মানে কী? আমরা তো এখন পর্যন্ত বলের কোনো সংজ্ঞা দিইনি!
আসলে নিউটনের প্রথম সূত্রটাই বলের সংজ্ঞা হতে পারে! যার প্রয়োগের কারণে স্থির বস্তু চলতে শুরু করে আর সমবেগে চলতে থাকা বস্তুর বেগের পরিবর্তন হয় সেটাই হচ্ছে বল। নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে বলটা কী, সেটা বুঝতে পারি কিন্তু পরিমাপ করতে পারি না। দ্বিতীয় সূত্র থেকে আমরা বল পরিমাপ করা শিখব।
তোমরা যখন তোমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা কাজে বল ব্যবহার করো তখন তোমাদের মনে হতে পারে কোনো কোনো বল প্রয়োগ করতে হলে স্পর্শ করতে হয় (ক্রেন দিয়ে ভারী জিনিস তোলা, কোনো কিছুকে ধাক্কা দেওয়া, কিংবা চলতে চলতে ঘর্ষণের জন্য চলন্ত বস্তুর থেমে যাওয়া) আবার তোমরা লক্ষ করেছ কোনো কোনো বল প্রয়োগের জন্য স্পর্শ করতে হয় না। কোনো কিছু ছেড়ে দিলে মাধ্যাকর্ষণ বলের জন্য নিচে পড়া, চুম্বকের আকর্ষণ!) কাজেই আমরা বলকে স্পর্শ এবং অস্পর্শ দুই ধরনের বলে ভাগ করতে পারি। কিন্তু তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ আমরা যেখানে স্পর্শ করছি বলে ধারণা করছি, সেখানে কিন্তু পরস্পরের অণু-পরমাণু, তাদের ঘিরে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন সরাসরি স্পর্শ দিয়ে নয় তাদের তড়িৎ চৌম্বক বল দিয়ে একে অন্যের সাথে কাজ করছে। অন্য কথায় বলা যায় আমরা যদি পারমাণবিক পর্যায়ে চলে যাই তাহলে সব বলই অস্পর্শক, এক পরমাণু অন্য পরমাণুকে আকর্ষণ-বিকর্ষণ করে দূর থেকে, তাদেরকে আক্ষরিক অর্থে স্পর্শ করতে হয় না ।
আরও দেখুন...