কম্পিউটার ভাইরাস এক ধরনের ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাহ ( Self Executed), সংক্রমণ (Self Extracted) ও নিজস্ব সংখ্যাবৃদ্ধি (Self Replicated) করে। এই প্রোগ্রাম কিছু নির্দেশ বহন করে যা কম্পিউটারের সিপিইউ কর্তৃক গ্রহণ করে কম্পিউটারকে অস্বাভাবিক, অগ্রহণযোগ্য ও অস্বস্তিদায়ক কাজ করতে বাধ্য করে। কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটারের মেমোরিতে গোপনে বিস্তার লাভ করে মূলবান প্রোগ্রাম তথ্য নষ্ট করা ছাড়াও অনেক সময় কম্পিউটারকে অচল করে দেয়। ভাইরাস হলো এমন একটি ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম যা কম্পিউটার বা আইসিটি ডিভাইসের অন্যান্য প্রোগ্রামকে আক্রমণ করে তথ্য ও উপাত্তকে বিনিষ্ট করে এবং পর্যায়ক্রমে নিজের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষমতা রাখে। এ সংক্রামিত প্রোগ্রামগুলো ভাইরাসের হয়ে অন্যান্য অসংক্রমিত প্রোগ্রামগুলোকে সংক্রমণ ঘটায়। যার ফলে প্রথমোক্ত প্রোগ্রামগুলো মূল ভাইরাসের হয়ে অন্যান্য ভালো প্রোগ্রামগুলোকে সংক্রমণ ঘটায়। এটি কখনও প্রোগ্রাম বা ডেটা ফাইল নষ্ট করে ফেলে, কম্পিউটারকে বুট হতে বিরত রাখে, ডিস্কসহ মাদারবোর্ডের বায়োস (BIOS) নষ্ট করে ফেলে।
কম্পিউটার ভাইরাসের নামকরণ
কম্পিউটারের পরিভাষায় ভাইরাস (VIRUS) শব্দটি পূর্ণরূপ পাওয়া যায় “ভাইটাল ইনফরমেশন রিসোর্সেস আন্ডার সিজ (VIRUS - Vital Information Resources Under seize) " অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ দখলে নেওয়া বা ক্ষতি সাধন করা। প্রখ্যাত গবেষক ফ্রেড কোহেন কম্পিউটারের এই ক্ষতিক্ষারক/ধ্বংসকারী প্রোগ্রামের “ভাইরাস" নামকরণ করেন।
ভাইরাসে আক্রান্ত কম্পিউটারের লক্ষণসমূহ-
১. কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ফাইলসমূহ Open করতে বেশি সময় লাগে;
২. কম্পিউটারের গতি কমে যাওয়া;
৩. কম্পিউটার চলমান থাকা অবস্থায় কিছু অপ্রত্যাশিত বার্তা প্রদর্শিত হওয়া;
৪. কোনো কারণ ছাড়াই কম্পিউটার নিজ থেকে বন্ধ হচ্ছে বা চালু হচ্ছে;
৫. কম্পিউটারের ফাইলগুলোর নাম পরিবর্তন হয়ে গেছে;
৬. চলমান কাজের ফাইলগুলো বেশি জায়গা দখল করছে।
এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ও এর বৈশিষ্ট্য
এন্টিভাইরাস হলো কম্পিউটার ভাইরাসের প্রতিষেধক। কম্পিউটার প্রোগ্রামসমূহকে ভাইরাস মুক্ত করা এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করাই এর কাজ। সুতরাং, আমরা এন্টিভাইরাসের সংজ্ঞা এভাবে দিতে পারি, যে সকল সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম ব্যবহার করে কম্পিউটারকে ক্ষতিকর ভাইরাস প্রোগ্রামের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয় কিংবা সংক্রমিত কম্পিউটারকে ভাইরাস মুক্ত করা হয় তাকে এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার বলে । ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য চাই শক্তিশালী এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম। প্রতিদিন সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য নতুন নতুন ভাইরাস সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ভাইরাসের উপর গবেষণা করে এর প্রতিষেধক অর্থাৎ এন্টিভাইরাসও তৈরি হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে জনপ্রিয় কয়েকটি এন্টিভাইরাস হলো-
১. এভিজি (AVG)
২. এভাস্ট (AVAST)
৩. এভিরা (Avira )
৪. ক্যাসপারেস্কি (Kaspersky )
৫. ইসেট নড৩২ (Eset NOD32)
৬. বিটডিফেন্ডার (Bitdefender)
৭. কোবরা (Cobra) (বাংলাদেশি]
৮. কমোডো এন্টিভাইরাস (Comodo
৯. ম্যাকএফির ভাইরাস স্ক্যান (McAffy's Virus Antivirus)
১০. পিসি টুলস এন্টিভাইরাস (PC Tools Scan)
১১. নর্টন এন্টিভাইরাস (Norton Anti Virus -NAV Antivirus)
১২. জোন এলার্ম এন্টিভাইরাস (Zone Alarm)
১৩. আইবিএম এন্টিভাইরাস (IBM AntiVirus) Antivirus)
১৪. পিসি সিলিন (PC Cillin )
এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামের প্রয়োজনীয়তা
এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামের প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ-
• ভাইরাস যুক্ত কম্পিউটারকে ভাইরাস মুক্ত করা।
• কম্পিউটারকে সুরক্ষার জন্য এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম দরকার।
• কম্পিউটারের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সুন্দরভাবে ব্যবহার করার জন্য এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহার করা।
• কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকলে এন্টিভাইরাস দিয়ে ভাইরাস মুক্ত করা।
আরও দেখুন...