সেন শাসনামল

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী | - | NCTB BOOK
1.9k
1.9k

সেন রাজবংশ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম দিকের মধ্যযুগীয় একটি হিন্দু রাজবংশ ছিল, সেন বংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় একাদশ শতাব্দীর মাঝপর্বে। সেনরাজাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তারা পালদের হটিয়ে রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন সুদূর কনৌজ পর্যন্ত। কর্ণটি থেকে বৃদ্ধ বয়সে বাংলার আসেন সামন্ত সেন। তিনি প্রথমে বসতি স্থাপন করেন রাঢ় অঞ্চলে বা গঙ্গা নদীর তীরে। তিনি রাজ্য প্রতিষ্ঠা না করায় সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতার মর্যাদা দেওয়া হয় হেমন্ত সেনকে। আর বিজয় সেনকে বলা হয় সেন বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। সেনরা জাতিতে ব্রাহ্মণ ছিলেন।

জেনে নিই

  • সেন বংশের প্রথম পুরুষ ছিলেন সামন্ত সেন।
  • সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা হেমন্ত সেন।
  • সেন বংশের রাজাদের আদিনিবাস দক্ষিণাত্যের কর্ণাটক।
  • বর্ণপ্রথার প্রচলন করেছিলেন সেন রাজারা।
  • সেন রাজারা ব্রাহ্মণ ধর্মের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করে। ধারণা করা হয়, হেমন্ত সেন পাল রাজাদের অধীনে একজন সামন্ত রাজা ছিলেন।
  • কৈবর্ত বিদ্রোহের সময় পাল বংশের রাজা রামপালকে সাহায্য করেন হেমন্ত সেন।
Content added By

বিজয় সেন (১০৯৮-১১৬০)

964
964

হেমন্ত সেনের মৃত্যুর পর বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন বিজয় সেন। সেন বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা বিজয় সেন। মহারাজাধিরাজ, পরমেশ্বর পরমভট্টারক উপাধি গ্রহণ করেন। পাল বংশের পতন ঘটে বিজয় সেনের হাতে। হুগলী জেলার বিজয়পুর ছিল বিজয় সেনের প্রথম রাজধানী। দ্বিতীয় রাজধানী স্থাপন করেন বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে। ধর্মের দিক থেকে বিজয় সেন ছিলেন শৈব।

Content added By

বল্লাল সেন (১১৬০-১১৭৮)

847
847

বিজয় সেনের পর সিংহাসনে আরোহণ করেন তাঁর পুত্র বল্লাল সেন । 'দানসাগর' ও 'অদ্ভূতসাগর' গ্রন্থের লেখক বল্লাল সেন। ; অদ্ভুতসাগর' গ্রন্থটি তিনি সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। এটি সমাপ্ত করে তাঁর পুত্র লক্ষ্মণ সেন। বল্লাল সেন ছিলেন তন্ত্র হিন্দুধর্মের পৃষ্ঠপোষক। বল্লাল সেনের আমলে বৌদ্ধ ধর্ম দুর্বল হয়ে পড়ে। বল্লাল সেন হিন্দু সমাজকে নতুন করে গঠন করার জন্য 'কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তন করেন। বল্লাল সেন শেষ জীবন অতিবাহিত করেন বানপ্রস্থ অবলম্বন করেন। বল্লাল সেনের বিশেষ উপাধি ছিল- অরিরাজ নিঃশঙ্ক শঙ্কর।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

লক্ষণ সেন (১১৭৮-১২০৬)

831
831

গৌরেশ্বর লক্ষ্মণ সেন ছিলেন সর্বশেষ কার্যকরী রাজা। বৃদ্ধ বয়সে লক্ষ্মণ সেন গঙ্গা তীরে দ্বিতীয় রাজধানী নবদ্বীপে বসবাস শুরু করেন। ১১৯৬ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরবন এলাকায় ডোম্মন পাল বিদ্রোহী হয়ে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। লক্ষ্মণ সেনের প্রধানমন্ত্রী ও ধর্মীয় প্রধান ছিলেন হলায়ুধ মিশ্র। হলায়ুধ মিশ্র বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগের সৃষ্টিকর্ম 'সেক শুভোদয়া' রচনা করেন। লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি ছিলেন- জয়দেব। তার রচনা গীতগোবিন্দ। ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি রাজধানী নদীয়া আক্রমণ করে। লক্ষ্মণ সেন নদীপথে পালিয়ে পূর্ববঙ্গের রাজধানী বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১২৩০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মণ সেনের দুই পুত্র কেশব সেন ও বিশ্বরূপ সেন নামমাত্র শাসন করে।

Content added || updated By
Promotion