p-n জংশনের বৈশিষ্ট্য

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পদার্থবিদ্যা - পদার্থবিজ্ঞান – ২য় পত্র | NCTB BOOK

  একটি p-n জংশনের দুই প্রান্তে ভোল্টেজ প্রয়োগ করলে তড়িৎ প্রবাহ পাওয়া যায়। ভোল্টেজ পরিবর্তনের সাথে তড়িৎ প্রবাহের যে পরিবর্তন ঘটে লেখচিত্রের মাধ্যমে তার উপস্থাপনকে p-n জংশনের বৈশিষ্ট্য লেখ বা ডায়োডের বৈশিষ্ট্য লেখ বা I-V লেখ বলে। চিত্র ১০.১৫-এ প্রদর্শিত বর্তনীতে রয়েছে একটি জংশন ডায়োড, তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপের জন্য একটি মিলিঅ্যামিটার (mA) এবং ভোল্টেজ মাপার জন্য একটি ভোল্টমিটার (V), তড়িচ্চালক শক্তির উৎস (E), পরিবর্তনশীল রোধ (Rh) ইত্যাদি । 

পরিবর্তনশীল রোধের মান বদলিয়ে বর্তনীতে ভোল্টেজের মান পরিবর্তন করা হয়। প্রযুক্ত ভোল্টেজ ও প্রাপ্ত তড়িৎ প্রবাহের লেখচিত্র আঁকলে তা চিত্র ১০.১৬ এর মতো হবে।

 

চিত্র :১০.১৫

  ডায়োডের বৈশিষ্ট্য লেখ থেকে দেখা যায় যে, সম্মুখী ঝোঁকের ক্ষেত্রে স্বল্প ভোল্টেজ পার্থক্যের জন্য তড়িৎ প্রবাহের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায় কিন্তু বিমুখী ঝোঁকের ক্ষেত্রে ভোল্টেজের পার্থক্য যতই বাড়ানো হোক না কেন তড়িৎ প্রবাহের মানের পরিবর্তন খুবই কম সুয়; এমনকি প্রায় স্থির থাকে। এই অবস্থায় ভোল্টেজ আরো বাড়াতে থাকলে শেষে এক সময় হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহ পাওয়া যায়, যেন মনে হয় p-n জংশনের বিভব বাধা একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিমুখী ঝোঁকের ক্ষেত্রে যে ভোল্টেজের জন্য এরূপ ঘটে তাকে জেনার ভোল্টেজ বা জেনার বিভব (Zener Voltage) বলে। 1934 সালে জেনার কর্তৃক আবিষ্কৃত ডায়োডের এই ক্রিয়াকে জেনার ক্রিয়া বলে। এই ভোল্টেজ প্রয়োগে জংশন ডায়োডের কার্যক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। এজন্য এই ভোল্টেজকে বিনাশী ভোল্টেজও বলে।

চিত্র : ১০.১৬

  গতীয় রোধ : যে বিভব পার্থক্যে p-n জংশন কাজ করে তাকে গতীয় রোধ বলে। p- জংশনে প্রযুক্ত বিভ পার্থক্যে ক্ষুদ্র পরিবর্তন V এর জন্য আনুষঙ্গিক তড়িৎপ্রবাহের ক্ষুদ্র পরিবর্তন   l এর অনুপাতকে গতীয় রোধ বলে । গাণিতিকভাবে গতীয় রোধ R হলো,

R=Vl

Content added || updated By
ইলেকট্রনের তাড়ন বেগের কারণে
ইলেকট্রনের ব্যাপনের কারণে
A এবং B উভয় কারণে
কোনটিই নয়

বেশির ভাগ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বা বর্তনী পরিচালনার জন্য নিরবচ্ছিন্ন একমুখী প্রবাহ বা ডিসি প্রবাহ প্রয়োজন হয়। ব্যাটারি বা শুষ্ক কোষই হচ্ছে ডিসি প্রবাহের প্রধান উৎস। কিন্তু এদের ভোল্টেজ বেশ কম এবং এগুলো প্রায়ই পরিবর্তন করতে হয় বলে বেশ ব্যয়বহুল। এ কারণে আমরা যদি আমাদের বৈদ্যুতিক লাইনের দিক পরিবর্তী তথা এসি ভোল্টেজকে একমুখী তথা ডিসি ভোল্টেজ-এ রূপান্তরিত করতে পারি তা ব্যবহারে যেমন সুবিধাজনক হয় তেমনি সাশ্রয়ীও হয়। এসি ভোল্টেজকে ডিসি ভোল্টেজে রূপান্তর করার পদ্ধতিকে বলা হয় রেকটিফিকেশন বা একমুখীকরণ।

পূর্ণতরঙ্গ ব্রিজ রেকটিফায়ার (Full Wave Bridge Rectifier)

বর্তনী সংযোগ : পূর্ণতরঙ্গ ব্রিজ রেকটিফায়ার তৈরি করার জন্য প্রয়োজন হয় চারটি ডায়োড। D1, D2,D3 এবং D4 ডায়োড চারটি দিয়ে ১০.১৭ চিত্রের ন্যায় একটি ব্রিজ গঠন করা হয়। যে এসি উৎসকে রেকটিফাই বা একমুখী করতে হবে সেটি একটি ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে ব্রিজের দুই বিপরীত কৌণিক বিন্দুতে চিত্রানুযায়ী সংযোগ দেওয়া হয়। ব্রিজের অন্য দুই কৌণিক বিন্দুতে ভূ-সংযুক্তির মাধ্যমে লোড রেজিস্টান্স, RL যুক্ত করা হয় ।

চিত্র :১০.১৭

কার্যনীতি : পূর্ণতরঙ্গ ব্রিজ রেকটিফায়ারে এসি অন্তর্গামী উৎসের দুই চক্রই কাজে লাগানো হয়। গৌণ ভোল্টেজের ধনাত্মক অর্ধচক্রের জন্য ট্রান্সফার্মারের P প্রান্ত ধনাত্মক এবং প্রাস্ত Q ঋণাত্মক হয়। ফলে D1 ও D3 ডায়োড সম্মুখ ঝোঁক প্রাপ্ত হয়। সুতরাং শুধুমাত্র D1 ও D3 ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এই ডায়োড দুটি লোড রেজিস্টান্স RL এর সাথে শ্রেণি সমবায়ে সংযুক্ত হবে। (চিত্র ১০.১৮ ক)। তড়িৎ প্রবাহ তীর চিহ্ন দিয়ে দেখানো হয়েছে। তড়িৎ A থেকে লোড রেজিস্ট্যান্সের মধ্য দিয়ে B এর দিকে প্রবাহিত হবে। RL এর দুই প্রান্তে ডিসি বহির্গামী পাওয়া যাবে।

চিত্র :১০.১৮

  গৌণ কুণ্ডলীর ঋণাত্মক অর্ধচক্রের জন্য P প্রান্ত ঋণাত্মক এবং Q প্রাপ্ত ধনাত্মক হয়। ফলে D2 ও D4 ডায়োড সম্মুখী ঝোঁক প্রাপ্ত হয় এবং D1 ও D3 ডায়োড বিমুখী ঝোঁক প্রাপ্ত হয়। সুতরাং শুধুমাত্র D2 ও D4 ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এই দুটি ডায়োড লোড রেজিস্ট্যান্স RL এর সাথে শ্রেণি সমবায়ে সংযুক্ত হয় (চিত্র ১০.১৮খ)। তড়িৎ প্রবাহ তীরচিহ্ন দিয়ে দেখানো হয়েছে। তড়িৎ A থেকে লোড রেজিস্ট্যান্স RL এর মধ্য দিয়ে B এর দিকে প্রবাহিত হবে। RL এর দুই প্রান্তে ডিসি বহির্গামী পাওয়া যাবে।

Content added || updated By
Promotion