কোন ধ্বনিগুলো উচ্চারণের সময়ে মুখগহ্বরের কোথাও বাধা পায় না?

Created: 1 year ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

ভাষার ক্ষুদ্রতম একককে ধ্বনি বলে। বাংলা ভাষায় ৩৭টি মৌলিক ধ্বনি রয়েছে। এই ধ্বনিগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়: স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি। মৌলিক স্বরধ্বনি ৭টি: [ই], [এ], [অ্যা], [আ], [অ], [ও], [উ]; এবং মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনি ৩০টি: [প্‌], [ফ্‌], [ব্‌], [ভ্‌], [ত্‌], [থ্‌], [দ্‌], [ধ্‌], [ট্‌], [ঠ্‌], [ড্‌], [ঢ্‌], [চ্‌], [ছ্‌], [জ্‌], [ঝ্‌], [ক্‌], [খ্‌], [গ্‌], [ঘ্‌], [ম্‌], [ন্‌], [ঙ্‌], [স্‌], [শ্‌], [হ্‌], [ল্‌], [র্‌], [ড়্‌], [ঢ়]। এখানে তৃতীয় বন্ধনী দিয়ে ধ্বনি বা উচ্চারণ নির্দেশ করা হয়েছে।

যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে বায়ু মুখগহ্বরের কোথাও বাধা পায় না, সেগুলোকে স্বরধ্বনি বলে। অন্যদিকে যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে বায়ু মুখের বাইরে বের হওয়ার আগে বাষ্প্রত্যঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বাধা পায়, সেগুলোকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে।

ধ্বনির প্রতীককে বলা হয় বর্ণ। এই বর্ণ কানে শোনার বিষয়কে চোখে দেখার বিষয়ে পরিণত করে। ভাষার সবগুলো বর্ণকে একত্রে বলা হয় বর্ণমালা। ধ্বনির বিভাজন অনুযায়ী বাংলা বর্ণমালাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। স্বরধ্বনির প্রতীক স্বরবর্ণ। ব্যঞ্জনধ্বনির প্রতীক ব্যঞ্জনবর্ণ। বাংলা বর্ণমালায় মূল বর্ণের সংখ্যা ৫০টি। তবে মূল বর্ণের পাশাপাশি বাংলা বর্ণমালায় রয়েছে নানা ধরনের কারবর্ণ, অনুবর্ণ, যুক্তবর্ণ ও সংখ্যাবর্ণ।

মূল বর্ণগুলো স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণে বিভক্ত।

স্বরবর্ণ: 

অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ ও ঔ = ১১টি

ব্যঞ্জনবর্ণ:

ক খ গ ঘ ঙ

চ ছ জ ঝ ঞ

ট ঠ ড ঢ ণ

ত থ দ ধ ন

প ফ ব ভ ম

য র ল

শ ষ স হ

ড় ঢ় য় ৎ

ং ঃ ঁ।= ৩৯টি

কারবর্ণ

স্বরবর্ণের মোট ১০টি সংক্ষিপ্ত রূপ রয়েছে, এগুলোর নাম কারবর্ণ : া,্ি,ী.ু,ূ,ৃ,্ে,াে,ৌ।।। কারবর্ণের স্বতন্ত্র ব্যবহার নেই। এগুলো ব্যঞ্জনবর্ণের আগে, পরে, উপরে, নিচে বা উভয় দিকে যুক্ত হয়। কোনো ব্যঞ্জনের সঙ্গে কারবর্ণ বা হচিহ্ন না থাকলে ব্যঞ্জনটির সঙ্গে একটি [অ] আছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

অনুবর্ণ

ব্যঞ্জনবর্ণের বিকল্প রূপের নাম অনুবর্ণ। অনুবর্ণের মধ্যে রয়েছে ফলা, রেফ ও বর্ণসংক্ষেপ।

ফলা: ব্যঞ্জনবর্ণের কিছু সংক্ষিপ্ত রূপ অন্য ব্যঞ্জনের নিচে অথবা ডান পাশে ঝুলে থাকে, সেগুলোকে ফলা বলে। যেমন – ন-ফলা (), ব-ফলা (), ম-ফলা (), য-ফলা (), র ফলা (এ), ল-ফলা )।

রেফ: র-এর একটি অনুবর্ণ রেফ (‘)।

বর্ণসংক্ষেপ: যুক্তবর্ণ লিখতে অনেক সময়ে বর্ণকে সংক্ষেপ করার প্রয়োজন হয়। এগুলো বর্ণসংক্ষেপ। যেমন ঙ, দ, ন, ম, ষ, স ইত্যাদি। এছাড়া ৎ বর্ণটি ত-এর একটি বর্ণসংক্ষেপ, যা বাংলা বর্ণমালায় স্বতন্ত্র বর্ণ হিসেবে স্বীকৃত।

যুক্তবর্ণ

একাধিক বর্ণ যুক্ত হয়ে যুক্তবর্ণ তৈরি হয়। যুক্ত হওয়া বর্ণগুলোকে দেখে কখনো সহজে চেনা যায়, কখনো সহজে চেনা যায় না। এদিক দিয়ে যুক্তবর্ণ দুই রকম: স্বচ্ছ ও অস্বচ্ছ।

স্বচ্ছ যুক্তবর্ণ: ক্ট, জ্জ, জ্ব, ঞ, ড্ড, ন্ট, ণ্ঠ, দ্দ, দ্ব, র, ষ্ঠ, ন্ড, ল, প্ট, প্ত, র, ল, জ, ব্দ, ক্ষ, ল্ক, ল্প, ল্ট, ল্ড, ল্প, ফ, শ্চ, দু, ষ্ট, ষ্ঠ, ক্ষ, স্খ, স্ট, স্ক ইত্যাদি।

অস্বচ্ছ যুক্তবর্ণ: ক্ত (ক্+ত), ক্স (ক্+ম), ক্র (ক্র), ক্ষ (ক্+ষ), ক্ষ্ম (ক্+ষ+ম), ক্স (ক্+স), ও (গ্‌+উ), গ্ধ (গ্‌+ধ), ঙ্ক (ঙ+ক), ঙ্গ (ঙ+গ), জ্ঞ (জ+ঞ), ঞ্চ (চ), ক্ষু (ঞ+ছ), ঞ্জ (ঞ+জ), উ (ট্+ট), ত্ত (ত্+ত), খ (ত্+খ), ত্র (ত্র), ও (গ্‌+ড), দ্ধ (দ্‌+ধ), ন্ধ (ন্‌+ধ), ন্ধ (ব্‌+ধ), ভ্র (+র), ভ্রূ (++ঊ), রু (বৃ+উ), রূ (+উ), শু (শৃ+উ), ষ্ণ (ষ+ণ), হু (হ্+উ), হ (হ্+ঋ), হ্ন (হ্+ন), হ্ম (হ্‌+ম) ইত্যাদি।

সংখ্যাবর্ণ

বাংলা ভাষায় সংখ্যা নির্দেশের জন্য দশটি সংখ্যাবর্ণ রয়েছে। যথা: ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭,৮,৯,০।

Content added By
Promotion