নিশাত প্রায়ই মায়ের মোবাইল নিয়ে কার্টুন, সিনেমা দেখে এবং মায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে বিভিন্ন পোস্টে লাইক দেয়, কমেন্টস লিখে সময় নষ্ট করে। মা অনেক নিষেধ করা সত্বেও কথা শুনেনা। মায়ের সাথে মেজাজ খারাপ করে। ক্লাসে অমনযোগী। বন্ধুদের সাথে কথা বলার সময় অল্পতেই রেগে যায়।
নিশাতের আচরণে পরিবর্তনের পেছনে বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক এবং প্রযুক্তিগত কারণ থাকতে পারে। পাঠ্যবইয়ের আলোকে এ বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করা যাক:
নিশাত মায়ের মোবাইল ব্যবহার করে কার্টুন এবং সিনেমা দেখা, যা প্রযুক্তির মাধ্যমে বিনোদন পেতে সাহায্য করে। এই ধরনের ডিজিটাল বিনোদন অল্প বয়সী শিশুদের মধ্যে আকর্ষণ সৃষ্টি করে, কিন্তু এটি তাদের বাস্তব জীবনের সম্পর্ক ও কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহ কমাতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফলে নিশাতের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়তে পারে। মায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে বিভিন্ন পোস্টে লাইক এবং কমেন্ট করা তাকে সাড়া পাওয়ার অনুভূতি দিতে পারে। তবে এটি অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা এবং চাপের সৃষ্টি করতে পারে, যা তার আচরণে পরিবর্তন আনতে পারে।
নিশাতের মেজাজ খারাপ হওয়া এবং রেগে যাওয়ার পেছনে আবেগ নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার তার আবেগকে অস্থির করে তুলতে পারে এবং বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের সময়ও এই অস্থিরতা প্রতিফলিত হয়।
ক্লাসে অমনযোগী হওয়া এবং সময় নষ্ট করা শিক্ষাগত পরিবেশে তার গুরুত্বকে কমিয়ে দিতে পারে। ডিজিটাল মিডিয়ার প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ এবং আকর্ষণ পড়াশোনার প্রতি অনীহা তৈরি করতে পারে, যা তার শিক্ষাগত ফলাফলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
মায়ের নিষেধ অমান্য করা নিশাতের মধ্যে বিদ্রোহী মনোভাব তৈরি করছে। পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি এবং মায়ের প্রতি অসম্মান তার মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটাচ্ছে। এটি তার ব্যক্তিত্বের বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে এবং সামাজিক সম্পর্কেও সমস্যা তৈরি করতে পারে।
নিশাতের আচরণে এই পরিবর্তনগুলো প্রযুক্তি ব্যবহার, মানসিক চাপ, আবেগের অনিয়ন্ত্রণ, শিক্ষাগত অমনযোগ এবং পারিবারিক সম্পর্কের কারণে ঘটছে। এই সমস্যাগুলোর সমাধানে পরিবারের সদস্যদের সাথে খোলামেলা আলোচনা, সীমাবদ্ধতা তৈরি করা, এবং ডিজিটাল মিডিয়ার স্বাস্থ্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার চেষ্টা করা উচিত। শিশুদের সামাজিক, মানসিক এবং শিক্ষাগত বিকাশের জন্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।