Academy

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 

(১০টির উত্তর দিতে হবে)

পবিত্র বাইবেলে শিশুদের সুশিক্ষা প্রদান করতে বলেছেন কেন?

Created: 2 months ago | Updated: 2 months ago
Updated: 2 months ago

পবিত্র বাইবেলে শিশুদের সুশিক্ষা প্রদান করার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, কারণ সুশিক্ষা একজন শিশুর নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক জীবনের ভিত্তি গড়ে তোলে। বাইবেল শিক্ষার মাধ্যমে শিশুরা সঠিক পথ ও মূল্যবোধ শেখে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। পবিত্র বাইবেলে শিশুদের সুশিক্ষা দেওয়ার কারণগুলো হলো:

১. ঈশ্বরের পথে পরিচালিত করা:

পবিত্র বাইবেলে শিশুদের সুশিক্ষা প্রদান করতে বলা হয়েছে, যাতে তারা ঈশ্বরের পথে চলতে পারে। সুশিক্ষা তাদের আধ্যাত্মিক জীবনকে সমৃদ্ধ করে এবং ঈশ্বরের আদেশ ও নির্দেশ মেনে চলার উপযুক্ত করে তোলে। “শিশুকে তার পথের শিক্ষা দাও, সে বয়স্ক হলেও তা থেকে বিচ্যুত হবে না।” (নীতিবচন ২২:৬)
এর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, শৈশবকালে শিশুকে সুশিক্ষা দিলে তারা সারাজীবন সেই নৈতিক পথ অনুসরণ করবে।

২. নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা শেখানো:

সুশিক্ষা শিশুদের মধ্যে নৈতিকতা ও শৃঙ্খলার বীজ বপন করে। বাইবেল শিক্ষা দেয় যে, শিশুকে সঠিক সময়ে শাসন এবং দিকনির্দেশনা দিলে তারা শৃঙ্খলাবদ্ধ, বিনয়ী ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হয়ে উঠবে। “যে তার সন্তানকে শাসন করে না, সে তার সন্তানকে ভালোবাসে না। কিন্তু যে ভালোবাসে, সে তাকে শৃঙ্খলার সঙ্গে মানুষ করে।” (নীতিবচন ১৩:২৪)

৩. জ্ঞান ও প্রজ্ঞা অর্জন:

বাইবেলে জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সুশিক্ষা শিশুকে জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে, যা তাকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। “ভয় হল প্রভুর প্রজ্ঞার শুরু।” (নীতিবচন ৯:১০)
সুশিক্ষার মাধ্যমে শিশুরা জ্ঞান অর্জন করে এবং ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে শেখে।

৪. পরিবার ও সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা:

শিশুরা সমাজের ভবিষ্যৎ, তাই তাদের সুশিক্ষা দিলে তারা নৈতিক, দায়িত্বশীল এবং সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। বাইবেলে শিশুদের এমনভাবে শিক্ষা দিতে বলা হয়েছে, যাতে তারা পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল হয় এবং সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। “শ্রদ্ধা করো তোমার পিতা ও মাতাকে, যেমন তোমার ঈশ্বর প্রভু তোমাকে আদেশ করেছেন।” (দ্বিতীয় বিবরণ ৫:১৬)
এই নির্দেশনা শিশুকে পারিবারিক মূল্যবোধ এবং সমাজে শ্রদ্ধা ও দায়িত্বের প্রতি সচেতন করে তোলে।

৫. ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া:

বাইবেল শিশুকে সুশিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনার গুরুত্ব তুলে ধরে। সুশিক্ষিত শিশু কেবল নিজে ভালোভাবে গড়ে ওঠে না, বরং পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও এক মূল্যবান উদাহরণ হয়ে থাকে। “তোমরা তোমার সন্তানদের এই কথাগুলো শেখাবে, এবং ঘরে বসে বা পথে চলতে, শুতে বা উঠতে সবসময় এই কথা বলবে।” (দ্বিতীয় বিবরণ ১১:১৯)
এর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, শিশুরা যাতে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা আত্মস্থ করতে পারে, সেজন্য নিয়মিতভাবে তাদের সুশিক্ষা দিতে হবে।

৬. ঈশ্বরের প্রতি আজীবন ভক্তি:

শিশুকাল থেকেই যদি শিশুকে ঈশ্বর এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া হয়, তাহলে সে আজীবন ঈশ্বরের প্রতি ভক্তিশীল এবং ন্যায়ের পথে পরিচালিত থাকবে। পবিত্র বাইবেলে শিশুদের ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার শিক্ষা দিতে বলা হয়েছে, যাতে তারা ধর্মীয় জীবনযাপনে অনুপ্রাণিত হয়।

৭. আত্ম-নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলা:

সুশিক্ষা শিশুদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং দায়িত্ববোধ শেখায়, যা তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা এনে দেয়। বাইবেল শিক্ষায় বলা হয়েছে যে, একজন সুশিক্ষিত ও দায়িত্বশীল মানুষ নিজের জীবন এবং সমাজের জন্য কল্যাণকর হতে পারে।

সারমর্ম:

পবিত্র বাইবেলে শিশুদের সুশিক্ষা দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, কারণ সুশিক্ষা তাদের নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক দায়িত্বশীলতা শেখায় এবং ঈশ্বরের পথে চলতে সহায়ক হয়। শিশুকালেই যদি সঠিক শিক্ষা প্রদান করা হয়, তাহলে তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল, সদাচারী এবং সমাজের জন্য মঙ্গলকর ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারে।

1 month ago

খ্রিষ্টধর্ম শিক্ষা

Please, contribute to add content.
Content
Promotion