(৫টি প্রশ্নের ৩টির উত্তর দিতে হবে।)
খ্রিস্টমণ্ডলী দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানবসেবায় অধিকতর ভূমিকা রাখছে, কারণ খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের মূল শিক্ষাগুলোতে মানবতার সেবা, দরিদ্রদের সহায়তা এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যীশু খ্রিস্টের শিক্ষা অনুসারে, মানুষের প্রতি প্রেম, সহানুভূতি ও সেবা প্রদর্শন খ্রিস্টানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এই শিক্ষা অনুযায়ী, খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠানগুলো সমাজে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তারে সক্রিয়ভাবে কাজ করে। এর প্রধান কারণগুলো হলো:
যীশু বারবার মানুষের প্রতি দয়া ও সেবার গুরুত্বের কথা বলেছেন। যেমন, তিনি বলেন, "তুমি তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালোবাসো" (মথি ২২:৩৯)। খ্রিস্টমণ্ডলী এই নীতিগুলো মেনে চলে এবং মানবতার প্রতি সহানুভূতির জন্য শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে কাজ করে। দরিদ্র, অসহায় এবং পীড়িতদের পাশে দাঁড়ানো খ্রিস্টীয় নৈতিকতার অন্যতম ভিত্তি।
খ্রিস্টীয় শিক্ষা মতে, দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্য করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই শিক্ষার সুযোগ ও স্বাস্থ্যসেবা এমন জায়গায় পৌঁছে দেয় যেখানে এসব সেবা সহজলভ্য নয়। যীশু বলেন, "যে কোনো এক ছোট ভাইয়ের জন্য যা করেছ, তা আমার জন্য করেছ" (মথি ২৫:৪০), যা মানুষের সেবা করার গুরুত্ব তুলে ধরে।
খ্রিস্টীয় নৈতিকতা অনুযায়ী, সকল মানুষ ঈশ্বরের সৃষ্টির অংশ এবং সমান মর্যাদার অধিকারী। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা এমন দুটি ক্ষেত্র, যেখানে মানুষকে সমান সুযোগ প্রদান করা সম্ভব। এই প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্র, অনগ্রসর, এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তা করে সমাজে সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
শিক্ষা হল সমাজের উন্নতির মূল চাবিকাঠি। খ্রিস্টমণ্ডলী পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক উন্নয়নের পথ তৈরি করে। খ্রিস্টান বিশ্বাস অনুসারে, জ্ঞান ঈশ্বরের একটি দান, এবং এটি মানুষকে সমাজে সঠিকভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করে।
খ্রিস্টীয় বিশ্বাসে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার গুরুত্বও আছে। তাই খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনা করে, যেখানে অসুস্থ ও অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। যীশু নিজে অসুস্থ ও দুর্বলদের সেবা করেছেন এবং চিকিৎসা করেছেন, যা খ্রিস্টানদের জন্য একটি আদর্শ।
খ্রিস্টমণ্ডলীর দীর্ঘ ইতিহাস এবং বৈশ্বিক উপস্থিতির কারণে তারা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে তাদের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষভাবে উন্নতমানের সেবা প্রদান করে আসছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি পেশাগত উৎকর্ষতাও থাকে।
সার্বিকভাবে, খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠানগুলো মানবসেবায় গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কারণ এটি তাদের বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে কাজ করার মাধ্যমে তারা যীশুর আদর্শ অনুসারে মানবতার সেবা করে যাচ্ছে।