তাহসান ও মাহি একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। বিয়ে করে তারা একসাথে একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। তাহসান ও মাহির একমাত্র সন্তান মুনা গৃহপরিচারিকার সাথেই সময় কাটায়। মাহি ও তাহসান কাজ শেষে যখন বাসায় ফেরেন, মুনা তখন ঘুমিয়ে থাকে। আবার তারা যখন কর্মস্থলে যান মুনা তখনও ঘুমিয়ে থাকে। বাবা-মা কেউ মুনাকে সময় দিতে পারেন না। কিছুদিন পর তাহসান ও মাহি লক্ষ করেন মুনার কথা ও আচরণ অনেকটা গৃহপরিচারিকার মতো। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই দ্বন্দ্ব হয়। একে অপরকে দোষারোপ করেন। তাহসান বলেন, 'মা-ই সকল শিশুর জীবনাদর্শ'। উত্তরে মাহি বলেন, 'সন্তানের ক্ষেত্রে পিতামাতা উভয়েরই দায়িত্ব সমান।'
উদ্দীপকে উল্লিখিত মুনার আচরণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ঘটনায় বর্ণিত পরিবারটির প্রভার নিঃসন্দেহে নেতিবাচক।
একজন শিশুর সবচেয়ে কাছের মানুষ তার মা-বাবা। আবার মুনা মা- বাবা কারও আদর, সোহাগ, ভালোবাসা কিংবা শাসন কোনোটাই পায় নি। কারণ তার মা-বাবা দুজনই এমন একটা চাকরি করে যেখানে যেতে হয় খুব সকালে আবার আসতে হয় রাতে। তাই মুনা তার মা- বাবাকে দেখতেও পায় না। ফলশ্রুতিতে মুনার সামাজিকীকরণ শুরু হয়েছে গৃহপরিচারিকার হাত ধরে এবং আস্তে আস্তে মুনার আচরণও গৃহপরিচারিকার মতো হয়ে গেছে। বস্তুত আমাদের সমাজের কোনো কোনো পরিবারে বাবা উপার্জন করেন; আবার মা-বাবা দুজনই উপার্জন করেন। কিন্তু তারপরও সন্তানসন্ততির সামাজিকীকরণে ভূমিকা রাখতে হয়। আর তা না পারলে শিশু তার আত্মধারণাকে সমৃদ্ধ করতে পারে না এবং ব্যক্তিত্বকেও সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারে না, তাই বলা যায়, মুনার ক্ষেত্রে এমনই হতে চলেছে।