দৃশ্যপট-১: লিমন তার বাপ-চাচার সাথে একই পরিবারে বসবাস করত। সম্প্রতি বিবাহ করে বৌকে নিয়ে শহরে সে আলাদা বাসায় বসবাস করে।
দৃশ্যপট-২: সবুজ রংপুর কারমাইকেল কলেজে অনার্স পড়ে। তার আচার-আচরণে বন্ধুবান্ধবসহ সবাই মুগ্ধ। তার সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তার এক প্রতিবেশী বলেন সে তার বাপ-দাদার মতোই হয়েছে।
উদ্দীপকে দৃশ্যপট-২-এ ইঙ্গিতকৃত সামাজিকীকরণের মাধ্যমটি হলো পরিবার যা সামাজিকীকরণের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
সবুজের আচার-আচরণে মুগ্ধ হয়ে তার বন্ধু বান্ধবসহ সকলে বলেন, যে, সে তার বাপ-দাদার মতোই হয়েছে। যা দ্বারা সামাজিকীকরণের পরিবার নামক মাধ্যমকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। যে প্রক্রিয়ায় শিশু ক্রমশ সামাজিক মানুষে পরিণত হয় তাকে সামাজিকীকরণ বলে। সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। আর পরিবারই সামাজিকীকরণের সব থেকে শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। শিশুর জন্মের আগে থেকেই পরিবারের মধ্যে সামাজিকীকরণের ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে থাকে। যৌথ বা একক যে ধরনের পরিবারেই আমরা বড় হই না কেন পারিবারিক জীবনের মধ্যেই আমাদের শৈশব কাটে। পারিবারিক জীবনের ভালো দিক মন্দ দিক সবই আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করে। আমরা সামাজিক নীতিবোধ, নাগরিক' চেতনা, সহযোগিতা, সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতি, ত্যাগ, ভালোবাসা প্রভৃতি আমরা পরিবার থেকেই অর্জন করি। বাবা-মায়ের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও শ্রদ্ধাবোধ শিশুর ব্যক্তিত্বের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার দাম্পত্য কলই শিশুদের মধ্যেও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে। পিতামাতার মধ্যে শিশুর জন্য অধিকতর কাছের হলেন মা। স্বভাবতই মায়ের থেকেই সামাজিকীকরণের সূত্রপাত ঘটে। মা শিশুর খাদ্যভ্যাস গঠন ও ভাষা শিক্ষার প্রথম মাধ্যম। মা-বাবার আচরণ মূল্যবোধ শিশুর সামাজিকীকরণে প্রভাব ফেলে। শিশুর আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব মা- বাধায় আত্মপ্রত্যয়ী ব্যক্তিত্বের ফল। তাই বলা যায়, এসব বিষয় শিশুর মানষিক বিকাশ ও ব্যক্তিত্ব গঠনে সাহায্য করে।