রাদ ও অর্ণব চাচাত ভাই। তারা একই শ্রেণিতে পড়ে। রাদ শহরে অর্ণব গ্রামো থাকে। রাদদের শহরে জেলা প্রশাসন স্বাধীনতা দিবসে কুচকাওয়াজ। আয়োজন করে। উক্ত অনুষ্ঠানে রাদ তাদের শ্রেণির অন্যদের সাথে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু অর্ণবের গ্রামে কুচকাওয়াজের পরিবর্তে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে অর্ণব যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সেজে প্রথম পুরস্কার পায়।
না, উদ্দীপকে উল্লিখিত রাদ ও অর্ণবের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া একই ধরনের নয়।
রাদ ও অর্ণব একই শ্রেণিতে পড়লেও তাদের উভয়ের বাসস্থান ভিন্ন পরিবেশে হওয়ায় তাদের সামাজিকীকরণ একইরূপে সংঘটিত হবে না। রাদ শহরে থাকে আর অর্ণব গ্রামে থাকে। গ্রাম ও শহরের সামাজিকীকরণে বিভিন্ন পার্থক্য রয়েছে। গ্রামীণ সমাজ কাঠামোর বৈশিষ্ট্য হলো- একক ও যৌথ পরিবার কাঠামো, কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি, পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা, সহজ- সরল জীবনযাপন, জীবনযাত্রায় সামাজিক প্রথা ও লোকাচারের প্রভাব ইত্যাদি। তাছাড়া ধর্মীয় আচার-আচরণের প্রতি গভীর মনোযোগ, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, রক্ষণশীলতা ইত্যাদিও এ সমাজের বৈশিষ্ট্য।
অপরদিকে, শহর সমাজ কাঠামো ও সামাজিক পরিবেশের বৈশিষ্ট্য হলো- একক পরিবার কাঠামো, শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি, জটিল সমাজ জীবন, শহুরে সংস্কৃতি, সামাজিক সম্পর্কের দূরত্ব ইত্যাদি। গ্রাম ও শহর জীবনের এরূপ ভিন্ন কাঠামো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রাদ ও অর্ণবের সামাজিকীকরণে যথেষ্ট ব্যবধান সৃষ্টি হবে। গ্রামীণ সমাজে অর্ণব বড় হয়ে তার আচরণে যেমন গ্রামীণ সমাজের সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটবে, তেমনি রাদ শহরে কাঠামোর সামাজিকীকরণ সম্পন্ন করে হয়ে উঠবে শহুরে মানুষ। একইভাবে অর্ণবের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় তার প্রতিবেশী, সঙ্গীদল, বায়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি, খেলার সাথী প্রভৃতির প্রভাব থাকবে রাদের তুলনায় অধিক। বিষয়টি উদ্দীপকেও প্রতিফলিত রয়েছে। সুতরাং বলা যায়, রাদ ও অর্ণবের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া একই ধরনের নয়।