খ বিভাগ—পদ্য
আরাফ আর আয়মান যেন একবৃন্তে দুটি কুসুম। এইচএসসি পাসের পর দুজনই ভর্তি হলো তাদের কাক্ষিত ও স্বপ্নের বুয়েটে। এর মধ্যে আয়মান আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজ-খবর নেয় কারণ, বুয়েট শেষ করে সে আমেরিকা পাড়ি জমাতে চায়। কিন্তু আরাফের এককথা পড়াশুনা শেষ করে সে দেশেই থাকবে। যা করবে দেশের জন্যই করবে-এভাবে সবাই দেশ ছেড়ে গেলে দেশই বা কীভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করবে? আজ আয়মান আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তার মন পড়ে থাকে দেশের বিস্তীর্ণ মাঠ, অবারিত ধানক্ষেত, বন্ধু-বান্ধব, ছুটোছুটি এসবের মধ্যে। আরাফের সাথে কথা বললেই সে তার ফেলে যাওয়া সব কিছু নিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।
ছেলের অসুস্থতার খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন পাগলপ্রায় ফারহানা বাস্ত ও উদ্বিগ্ন অবস্থায় স্বামীকেও খবর পাঠান। ঘরে ফিরে দেখেন জ্বরে ছেলের গা পুড়ে যাচ্ছে। ঝাঁড়ফুকের জন্য তার শাশুড়ি গ্রামের ইদ্রিস মোল্লাকে নিয়ে এসেছেন। এসব বাদ দিয়ে ফারহানা ছেলেকে নিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। ডেঙ্গু আশঙ্কা করে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দিলেন। পরদিন পরীক্ষার রিপোর্ট ডেঙ্গু শনাক্ত হয় এবং ছেলের প্লাটিলেট দ্রুত কমতে থাকে। ফারহানা ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারাক্ষণ ছেলের সেবা করে তাকে সারিয়ে তোলেন। এদিকে তার শাশুড়ি নাতির রোগমুক্তি কামনা করে মসজিদে দান করার মানত করেন।
মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পায়নি বলে সুইটি নাওয়া-খাওয়া সব বাদ দিয়েছে: যোগাযোগ বন্ধ করেছে বন্ধু-বান্ধবের সাথেও। তার সেই এককথা "আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না'-সে আর পড়াশুনাও করতে চায় না। মেয়ের কথা শুনে বাবা হাসেন বলেন, "মানবজীবনই হলো সংগ্রামের, মেডিকেলে পড়াই জীবনের সব নয়, তুমি তোমার মেধা যে কোনো কাজে লাগিয়ে সফল হতে পার। কোনো সাধারণ বিষয়ে পড়াশুনা করে তুমি 'অসাধারণ' হয়ে উঠতে পারো, প্রতিটি দায়িত্বশীল ও সময়ানুবর্তী মানুষ পৃথিবীতে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। বাবার কথা মেনে সুইটি আজ একজন সফল বিসিএস কর্মকর্তা। অনেকের আদর্শ-অনুকরণীয়।