ক বিভাগ—গদ্য
সিধু তার দরিদ্র পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান। সে ভীষণ ডানপিটে এবং দুরন্ত। সারাদিন। গ্রামের ছেলেদের সাথে খেলা-ধুলা করে এবং বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। প্রকৃতিই যেন তার একমাত্র আশ্রয়। কোন গাছের আম মিষ্টি, কার বাগানের কলা পাকলো বলে ইত্যাদি খবর তার চেয়ে কেউ ভালো জানে না। কারণ সে সারাদিন এখানে- সেখানে ঘুরে ঘুরে এসব তথ্য সংগ্রহ করে। তার এমন কাজকর্মে গ্রামের সবাই অতিষ্ঠ। অভিযোগ শুনতে শুনতে তার মায়ের কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। তাই তার মা সব সময় সিধুর কর্মকাণ্ডে ভীষণ উদ্বিগ্ন থাকেন।
অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চামেলীর স্বামী রতনেরও চাকরি চলে যায়। সংসারের হাল ধরতে চামেলী শহরের বড় ব্যবসায়ী কথা মন্ডলের কাপড়ের দোকানে বিপণন কর্মী হিসেবে কাজ নেয়। মাঝে মাঝে কৃষ্ণা মন্ডলের দুই সন্তানকে দায়িত্বের সঙ্গে স্কুল থেকে আনা-নেয়া করে। চামেলীর কাজ-কর্মে কৃষ্ণা মন্ডল ভীষণ খুশি হয়। চামেলীর মাসিক বেতন দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে দেন। এতে চামেলী ভীষণ খুশি হয়।
'তুমি বন্ধু কালা পাখি
আমি যেন কী?
বসন্ত কালে তোমায় বলতে পারিনি।'
হাট-বাজারে এ রকম গান গেয়ে মানুষের মন আকর্ষণ করত বই বিক্রেতা হকার সেকেন্দার আলি। বই বিক্রির পাশাপাশি গ্রাম অঞ্চলে লোক মুখে প্রচলিত লোক-কাহিনি, মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় গাঁথা ইত্যাদি সংগ্রহ করে তা ফর্মাকারে ছেপে বিক্রি করতো। এক সময় তার বেচা-বিক্রি ভালো হলেও ইদানিং তার বই আর তেমন কেউ কেনে না। সেকেন্দারও মনের দুঃখে পেশা পরিবর্তন করেছে।