.
নিচের অনুচ্ছেদটি অবলম্বনে একটি খুদে গল্প লেখ:
সবুজ শ্যামল বাংলা মায়ের সোনালি ফসলের মাঠ আজ কংক্রিটের চাপায় পিষ্ট . . . . . . . .
সবুজ শ্যামল বাংলা মায়ের কোলে একসময় ছিল সোনালি ফসলের মাঠ। দূরদিগন্ত জুড়ে লালচে ধানের সমারোহ, মাঝে মাঝে বাতাসে দোল খাওয়া নারকেল গাছের সারি, আর তার পাশেই নদীর তীরে শ্যামল আম, জাম, বরই গাছের সমারোহ।
কিন্তু আজ?
আজ সেই সবুজ শ্যামল মাঠ আর নেই। কংক্রিটের জঙ্গলে ঢাকা পড়েছে সব। একতলা, দোতলা, ত্রিতলা বাড়ি, আর তার উপরে আকাশচুম্বী ভবন। যেখানে একসময় ধানের শীষ দোলে মৃদু বাতাসে, আজ সেখানে গাড়ির হর্ণ, মানুষের চিৎকার, ধোঁয়া আর দূষণ।
এক গ্রামে ছিল রুহি নামের একটি মেয়ে। রুহি ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতির প্রেমী ছিল। সে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ছুটে যেত মাঠে। ধানক্ষেতে খেলা করত, নারকেল গাছের ডালে দুলত, নদীর তীরে বসে গল্পের বই পড়ত।
কিন্তু ধীরে ধীরে রুহির গ্রাম থেকে সবুজ চলে যেতে লাগল। বাড়িঘরের সংখ্যা বাড়তে থাকল। মাঠ ভরাট করে তৈরি হতে লাগল নতুন নতুন ভবন। রুহির খেলার মাঠ, নারকেল গাছ, নদীর তীর সবকিছুই হারিয়ে গেল কংক্রিটের জঙ্গলে।
একদিন রুহি হতাশায় ভেঙে পড়ল। সে ভাবতে লাগল, এখন কি আর কখনো ফিরে আসবে না সেই সবুজ বাংলা?
হঠাৎ রুহির চোখে পড়ল গ্রামের বাইরে একটি ছোট্ট জমি। জমিটা পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়। রুহির মনে হল, সে এই জমিটাকেই সবুজ করে তুলবে।
রুহি গ্রামের মানুষদের সাথে কথা বলল। সবাই রুহির উদ্যোগে সাথী দিল। তারা সবাই মিলে জমিটা পরিষ্কার করল, গাছ লাগাল। কয়েক মাসের মধ্যেই সেই জমিটা সবুজে ভরে উঠল।
রুহি আর থামতে পারল না। সে আরেকটি জমি, তারপর আরেকটি জমি এভাবে সে গ্রামের সব জমিটাকেই সবুজ করে তুলল। কয়েক বছরের মধ্যেই গ্রামটা আবার হয়ে উঠল সবুজ শ্যামল।
রুহির উদ্যোগ দেখে অন্য গ্রামের মানুষও অনুপ্রাণিত হল। তারাও তাদের গ্রামগুলোকে সবুজ করার চেষ্টা শুরু করল।
ধীরে ধীরে সারা বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল সবুজের ডাক। মানুষ বুঝতে পারল, উন্নয়নের নামে প্রকৃতিকে ধ্বংস করা ঠিক নয়।