ক্রায়োসার্জারি-Cryosurgery

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত | | NCTB BOOK
22

ক্রায়োসার্জারি এক ধরনের কাটা ছেরাবিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অত্যধিক শীতল তাপমাত্রার গ্যাস মানব শরীরে প্রয়োগ করে অপ্রত্যাশিত ও অস্বাভাবিক রোগাক্রান্ত টিস্যু/ত্বক কোষ ধ্বংস করার কৌশল হলো কারোসার্জারি। মানব শরীরের ত্বক উপরিস্থ বিভিন্ন রোগ যেমন আঁচিল, ফুসকুড়ি, প্রদাহ, ক্ষতিকর ক্ষত ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বিশেষ করে শরীরের অভ্যন্তরস্থ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহের রোগ যেমন ক্যান্সার, ক্ষত, প্রদাহ ইত্যাদিতে আক্রান্ত কোষগুলোর অবস্থান সিমুলেটেড সফট্ওয়্যার দ্বারা চিহ্নিত করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে আইসিটি যন্ত্রপাতি যেমন মাইক্রো ক্যামেরাযুক্ত নল প্রবেশ করিয়ে রোগাক্রান্ত কোষ/অংশের ক্ষতস্থান শনাক্ত করে অত্যন্ত সুক্ষ্ম সুচযুক্ত নদের (ক্রারোপ্রোব) মাধ্যমে ক্রায়োজনিক বিভিন্ন গ্যাস আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করা হয়। এখানে বিভিন্ন গ্যাসের তাপমাত্রা ক্ষেত্র বিশেষে -৪১ থেকে – ১৯৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নামিয়ে আনা হয় ফলে রোগাক্রান্ত টিস্যু/কোষে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ থাকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ নিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নামিয়ে আনা হয়। এতে করে ঐ নিম্নতম তাপমাত্রায় রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ সম্ভব না হওয়ার দরূন রোগাক্রান্ত টিস্যু/কোষের ক্ষতিসাধন হয়। ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসায় রোগের আক্রান্ত স্থান ও রোগের ধরনানুযায়ী এবং নির্দিষ্ট শীতলতায় পৌঁছানোর জন্য তরল নাইট্রোজেন, আর্গন, অক্সিজেন, কার্বনডাই অক্সাইড ইত্যাদি গ্যাস ব্যবহার করা হয়। এই তরল প্যাসগুলো ক্রায়োজনিক এজেন্ট নামে পরিচিত ।

ক্রারোসার্জারিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা অনেক বেশি, যেমন আক্রান্ত কোষ বা টিস্যুর অবস্থান নির্ণয়ে এবং সমস্ত কার্যাবলী পর্যবেক্ষণের কাজে সারাক্ষণ কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ব্যবহৃত হয়। সেজন্য ক্রায়োসার্জারিতে চিকিৎসা ব্যবস্থায় অভিজ্ঞ করে ভুলতে ডাক্তারদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়। রোগীর তথ্য, চিকিৎসার গবেষণার ফলাফল ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার ডেটাবেজ সিস্টেম প্রয়োজন হয়।

ক্রায়োসার্জারির অনেক সুবিধা রয়েছে। অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির তুলনায় ক্যান্সার ও নিউরোসার্জারি চিকিৎসায় ক্রায়োসার্জারি অনেক সাশ্রয়ী এবং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় কম লাগে। এ পদ্ধতিতে কোনো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, ব্যথা, রক্তপাত্ত অথবা অপারেশনজনিত কাটা-ছেঁড়ার কোনো জটিলতা নেই। রোগীকে কোনো পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হয় না এবং অনেকক্ষেত্রে সার্জারি শেষে রোগীকে হাসপাতালেও থাকতে হয় না।

তবে আক্রান্ত কোষের সঠিক অবস্থান নির্ণয়ে ব্যর্থ হলে ক্রায়োসার্জারি ব্যবহারে জীবাণু শরীরের অন্যান্য

অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশা থাকে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে লিভার ও ফুসফুসের স্বাভাবিক গঠন বিনষ্ট

কিংবা স্নায়বিক সমস্যার উদ্ভব হতে পারে।

Content added By
Promotion