পরিমাপন স্কেল ও পরিমাপন স্কেলের প্রকারভেদ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ১ম পত্র | | NCTB BOOK
31
31

পরিমাপন স্কেল ও এর প্রকারভেদ

পরিমাপন স্কেল (Measurement Scale) এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে বিভিন্ন মান বা উপাত্তকে পরিমাপ এবং শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। এটি গবেষণা, পরিসংখ্যান এবং বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


পরিমাপন স্কেলের প্রকারভেদ

পরিমাপন স্কেল সাধারণত চারটি প্রধান প্রকারে বিভক্ত:


১. নামমাত্র স্কেল (Nominal Scale)

নামমাত্র স্কেল হলো সেই পরিমাপ পদ্ধতি যা কেবল উপাত্তকে শ্রেণিবদ্ধ করতে ব্যবহৃত হয়। এই স্কেলে উপাত্তের মধ্যে কোনো ক্রম বা পরিমাণগত তুলনা করা যায় না।

বৈশিষ্ট্য:

  • উপাত্ত শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।
  • সংখ্যাগুলো কেবল প্রতীক বা লেবেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

উদাহরণ:

  • লিঙ্গ (পুরুষ = ১, নারী = ২)
  • রঙ (লাল, নীল, সবুজ)

২. ক্রমিক স্কেল (Ordinal Scale)

ক্রমিক স্কেল এমন একটি পদ্ধতি যা উপাত্তের মধ্যে ক্রম বা স্তর নির্দেশ করে। তবে এই স্কেলে পরিমাণগত ব্যবধান নির্ধারণ করা যায় না।

বৈশিষ্ট্য:

  • উপাত্তের ক্রম বা স্তর বোঝায়।
  • মানগুলোর মধ্যে দূরত্ব নির্ধারণ করা যায় না।

উদাহরণ:

  • পরীক্ষার র‍্যাঙ্ক (১ম, ২য়, ৩য়)
  • সন্তুষ্টি স্তর (খুব ভালো, ভালো, মোটামুটি, খারাপ)

৩. অন্তরাল স্কেল (Interval Scale)

অন্তরাল স্কেল এমন একটি স্কেল যা উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য বা ব্যবধান নির্ধারণ করতে সক্ষম। তবে এই স্কেলে প্রকৃত শূন্য বিন্দু থাকে না।

বৈশিষ্ট্য:

  • উপাত্তের মধ্যে ব্যবধান নির্ধারণ করা যায়।
  • শূন্য মানের উপস্থিতি থাকে না বা অর্থহীন।

উদাহরণ:

  • তাপমাত্রা (সেলসিয়াস বা ফারেনহাইট)
  • সময় (১২ ঘণ্টা ঘড়ি)

৪. অনুপাত স্কেল (Ratio Scale)

অনুপাত স্কেল সবচেয়ে উন্নত ধরনের স্কেল, যা প্রকৃত শূন্য বিন্দু নিয়ে কাজ করে। এটি উপাত্তের তুলনা এবং পরিমাপের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য।

বৈশিষ্ট্য:

  • প্রকৃত শূন্য বিন্দু থাকে।
  • উপাত্তের গুণ ও ভাগ করা যায়।

উদাহরণ:

  • ওজন (কেজি বা পাউন্ড)
  • উচ্চতা (মিটার বা সেন্টিমিটার)
  • আয়

স্কেলগুলোর তুলনামূলক চার্ট:

স্কেলক্রম (Order)ব্যবধান (Interval)প্রকৃত শূন্য (True Zero)
নামমাত্র স্কেলনেইনেইনেই
ক্রমিক স্কেলআছেনেইনেই
অন্তরাল স্কেলআছেআছেনেই
অনুপাত স্কেলআছেআছেআছে

সারসংক্ষেপ
পরিমাপন স্কেল বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। নামমাত্র স্কেল উপাত্তকে শ্রেণিবিন্যাস করতে সাহায্য করে, ক্রমিক স্কেল ক্রম নির্ধারণ করে, অন্তরাল স্কেল ব্যবধান নির্দেশ করে, এবং অনুপাত স্কেল সুনির্দিষ্ট পরিমাপ ও তুলনার সুযোগ দেয়।

Content added By
Promotion