আমাদের সংস্কৃতি
১) আমাদের ভাষা, খাবার ও পোশাক
পুরুষের পোশাকের নাম:
নারীদের পোশাকের নাম।।
উপরের ছবিগুলো হতে আমরা জানলাম, আমাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। জীবনধারণের জন্য আমরা খাবার খেয়ে থাকি এবং সামাজিক জীব হিসেবে পোশাক পরিধান করে থাকি। মানুষের ব্যবহৃত ভাষা, খাবার, পোশাক মিলে সংস্কৃতি তৈরি হয়। সংস্কৃতির আরও উপাদান রয়েছে যেমন নৃত্য, সংগীত, উৎসব ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান, যা আমরা পরবর্তী অধ্যায়ে জানব।
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আমরা এ ভাষাতেই পড়ি, লিখি এবং কথা বলে মনের ভাব প্রকাশ করি। বাংলাদেশের মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বললেও এ ভাষার রয়েছে বিভিন্ন আঞ্চলিক রূপ। এছাড়াও বাংলা ভাষার পাশাপাশি এদেশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব কিছু ভাষা রয়েছে। বিশ্বের মাতৃভাষায় কথা বলা জনসংখ্যার মধ্যে বাংলা ভাষা পঞ্চম। মাতৃভাষার জন্য এদেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে। ভাষা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম উপাদান।
বাংলাদেশের সংস্কৃতির আরও একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান হলো খাদ্য। দৈনন্দিন জীবনে আমরা ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, সবজি, ডাল ইত্যাদি খাবার খেয়ে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে পোলাও, কোর্মা, বিরিয়ানি, রোস্ট এবং বিভিন্ন ধরনের মাংস ও মাছের পদ পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন- ফিরনি, সেমাই, দই, মিষ্টি ও নানা রকমের পিঠা। আমাদের দেশের উল্লেখযোগ্য পিঠাগুলো হচ্ছে চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, দুধ চিতই, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা, পাকন পিঠা, পানতোয়া, মালপোয়া, কুলশি, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, তেলের পিঠা, সেমাই পিঠা প্রভৃতি। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণ কিছু ঐতিহ্যগত খাবারও গ্রহণ করেন যেমন- নাপ্পি, লাসৌ, থাংরো, শিংজু ইত্যাদি।
বাংলাদেশের মানুষ নানা রকমের পোশাক পরে। পুরুষদের পোশাকগুলোর মধ্যে লুঙ্গি, গেঞ্জি, ফতুয়া, পাজামা, পাঞ্জাবি, ধুতি অন্যতম। এছাড়া উল্লেখযোগ্য পোশাকগুলো হলো শার্ট, প্যান্ট, স্যুট, সোয়েটার, জ্যাকেট ইত্যাদি। নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হচ্ছে শাড়ি। তাছাড়া অনেকে সালোয়ার, কামিজ, ফ্রক, স্কার্ট, বোরকা, হিজাব ইত্যাদি পোশাক পরেন। শিশুদের মধ্যে ছেলেরা সাধারণত গেঞ্জি, হাফপ্যান্ট, শার্ট, পায়জামা, পাঞ্জাবি, জ্যাকেট ইত্যাদি পোশাক পরে; আর মেয়েরা ফ্রক, সালোয়ার, কামিজ, স্কার্ট, কার্ডিগান ইত্যাদি পোশাক পরে। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণ কিছু ঐতিহ্যগত পোশাকও পরিধান করেন যেমন- পিনন, হাদি, থামি, আঙ্গি, দকবান্দা, দকসারি ইত্যাদি। বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠীর ভাষা, খাবার ও পোশাকের বৈচিত্র্য এদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
খ) পরিবারে আমরা কী কী ধরনের পোশাক পরি ও খাবার খাই তার তালিকা করি-
পোশাক
1. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
2. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
3. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
4. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
5. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
খাবার
1. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
2. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
3. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
4. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
5. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
গ) শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাই-
বাংলা | ভাষা | নাপ্পি | পোশাক সম্পর্কিত |
১. যোগাযোগে ব্যবহৃত সাংস্কৃতিক উপাদান. . . . . . . . . . . . . . . . . . .
২. বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষার নাম. . . . . . . . . . . . . . . . . . .
৩. বাংলাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী খাবার. . . . . . . . . . . . . . . . . . .
৪. শাড়ি ও পাঞ্জাবি . . . . . . . . . . . . . . . . . . .সাংস্কৃতিক উপাদান।
ঘ) আমি বিবাহ, জন্মদিন, ধর্মীয় ইত্যাদি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। সেগুলোতে লোকজন কী কী পোশাক পরে এসেছিল এবং কী কী খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল তার একটি তালিকা তৈরি করি-
লোকজনের পরিধেয় পোশাকের নাম | পরিবেশিত খাবারের নাম |
২) আমাদের সংগীত, নৃত্য ও উৎসব অনুষ্ঠান
সংগীত
সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সংগীত। বাংলাদেশে নানা ধরনের সংগীত রয়েছে। যেমন- বাউল, জারি, সারি, ভাটিয়ালি, পল্লিগীতি, ভাওয়াইয়া, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক গান ইত্যাদি। ফকির লালন শাহের লালনগীতি এবং হাসন রাজার গানও খুব জনপ্রিয়। এদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত আঞ্চলিক গান আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষার সংগীতও খুব জনপ্রিয়।
নৃত্য
আমাদের সংস্কৃতির বিশেষ উপাদান হচ্ছে নৃত্য। আমাদের দেশে নানা ধরনের নৃত্য প্রচলিত রয়েছে। যেমন- লোকনৃত্য, সৃজনশীল নৃত্য, শাস্ত্রীয় নৃত্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব নৃত্য, ইত্যাদি।
লোকনৃত্য হচ্ছে কোনো একটি অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবনঘনিষ্ঠ নৃত্য। যেমন- ধামাইল, জারি গানের সঙ্গে নাচ, সারি গানের সঙ্গে নাচ, সাপুড়ে নাচ।
সৃজনশীল নৃত্য হচ্ছে নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক গান, দেশাত্মবোধক গানকে ভিত্তি করে পরিবেশিত নৃত্য।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জুম নৃত্য, থালা নৃত্য, বাঁশ নৃত্য, ছাতা নৃত্য খুবই চমৎকার। নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, বাদ্যযন্ত্র ও গানের সাথে তারা কখনো একত্রে, আবার কখনো এককভাবে নাচে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নাচ আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে কত্থক নৃত্য, মণিপুরী নৃত্য বেশ সমৃদ্ধ।
উৎসব
বাংলাদেশের প্রধান সামাজিক উৎসব হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। বাংলা বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ এ উৎসবটি পালিত হয়। এছাড়া রয়েছে নবান্ন উৎসব। কৃষকের ঘরে নতুন ফসল তোলা উপলক্ষে এ উৎসব পালিত হয়। ঘরে ঘরে পিঠা, পায়েস ইত্যাদি রান্না করা হয়। বাংলাদেশের মুসলিম জনগণের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলো ঈদ-উল-ফিতর এবং ঈদ-উল আযহা। হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব হলো দুর্গাপূজা, স্বরস্বতী পূজা। গৌতম বুদ্ধের জন্ম দিন উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধপূর্ণিমা পালন করে থাকে। খ্রিষ্টানগণ ২৫ ডিসেম্বর যিশু খ্রিষ্ট্রের জন্মদিন বড় দিন হিসেবে পালন করে থাকে। এসব ধর্মীয় উৎসব ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের সকলের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়।
ক) অনুচ্ছেদ পড়ে যেসব সংগীত, নৃত্য ও উৎসবের নাম জেনেছি তার তালিকা করি-
খ) শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাই-
বাংলা নববর্ষ | বুদ্ধপূর্ণিমা | লালনগীতি | লোকনৃত্য |
১. ফকির লালন শাহ . . . . . . . . . . . . . .গান গাইতেন।
২. একটি জনগোষ্ঠীর জীবনঘনিষ্ঠ নৃত্য হচ্ছে . . . . . . . . . . . . . .
৩. বাংলাদেশের প্রধান সামাজিক উৎসব হচ্ছে . . . . . . . . . . . . . .
৪. গৌতম বুদ্ধের জন্মদিন উপলক্ষে পালন করা হয় . . . . . . . . . . . . . .
গ) বাম পাশের শব্দ/বাক্যাংশের সাথে মিল রেখে ডানপাশের উপযুক্ত শব্দ/বাক্যাংশ দাগ টেনে মিল করি-
নবান্ন উৎসব
লোকনৃত্য
সংগীত
উৎসব
গ) মনে করি আমি পহেলা বৈশাখ বা অন্য কোনো একটি উৎসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। অনুষ্ঠানে আমি কী কী দেখেছি বা কী কী কাজ করেছি তার একটি তালিকা তৈরি করি।
উৎসব অনুষ্ঠানের নাম
০১ . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
০২ . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
০৩ . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
০৪ . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
আরও দেখুন...