একজন উদ্যোক্তার উদ্যোগ সফল হওয়ার উপর শুধু উদ্যোক্তার নিজের উন্নয়ন নির্ভর করে না বরং দেশ ও দেশের উন্নতিও নির্ভর করে। উদ্যোক্তার উদ্যোগ সফল বা ব্যর্থ হওয়া অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে । গবেষণায় দেখা গেছে, সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে যারা ব্যবসা পরিচালনা করেন, তারাই কেবল সফল হন । নিম্নে ব্যবসায় সফল ও ব্যর্থ হওয়ার কারণগুলো আলোচনা করা হলো:
১। ব্যবসায় সঠিক পণ্য নির্ধারণ: সঠিক পণ্য নির্ধারণ ব্যবসায় সাফল্যের অন্যতম পূর্বশর্ত । একজন উদ্যোক্তা কোনো পণ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে সে পণ্যের বাজার চাহিদা কীরূপ, তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে । গবেষণার ফল থেকে জানা যায় যে বহুল ব্যবহৃত পণ্যের চেয়ে নতুন সম্ভাবনাময় পণ্য নির্বাচন করলে সাফল্য অনিবার্য ।
২। সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন: সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নের উপর ব্যবসার সাফল্য অনেকাংশে নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে কী, কখন এবং কীভাবে একটি কাজ করতে হবে তা অগ্রিম চিন্তাভাবনা করার নামই পরিকল্পনা । ব্যবসা-বাণিজ্য সফলভাবে পরিচালনার জন্য উদ্যোক্তাকে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে । কারণ সঠিক পরিকল্পনার অভাব ব্যবসায় ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ।
৩। পর্যাপ্ত মূলধন: ব্যবসায়ের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের সংস্থান করা ব্যবসায় সফলতার অন্যতম শর্ত। সুতরাং ব্যবসার সাফল্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদি এবং স্বল্পমেয়াদি উভয় ক্ষেত্রেই শিল্প প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত মূলধনের সংস্থান করা প্রয়োজন । পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে ব্যবসায় কার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না ।
৪। পণ্য বাজারজাতকরণ: বাজারজাতকরণের অর্থ হচ্ছে সঠিক মূল্যে যথাসময়ে বাজারে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা । পণ্য শুধু উৎপাদন করলেই হবে না, তা বিক্রির ব্যবস্থাও করতে হবে । এর জন্য ব্যাপকভাবে বিজ্ঞাপন ও প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে । প্রচার ব্যতীত কোনো পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি করা সম্ভব নয় । সুপরিকল্পিতভাবে বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া ব্যবসায় সাফল্যের চাবিকাঠি।
৫। শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা: শিক্ষা গ্রহণ ও অভিজ্ঞতা অর্জন ব্যবসার সফলতার পূর্বশর্ত । ব্যবসায়ে অতীত অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা থাকলে ব্যর্থতার চেয়ে সফলতার সম্ভাবনাই বেশি । গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা যায় যে ব্যবসায় পূর্ব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উদ্যোক্তাগণ সবচেয়ে বেশি সফল হন ।
৬। দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা: উদ্যোক্তাকে দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জ্ঞান অর্জন করতে হবে। ব্যবস্থাপ- না ও পরিচালনা জ্ঞান ছাড়া প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। ব্যবস্থাপনার মৌলিক কাজ যেমন- পরিকল্পনা, সংগঠন, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা থাকা যে কোনো উদ্যোক্তার সফলতার জন্য অপরিহার্য। উদ্যোক্তার নিজস্ব নিয়মনীতি অনুযায়ী কাজ করলে ব্যর্থ হতে পারে।
৭। হিসাবরক্ষণ : সুষ্ঠু ও যথাযথ হিসাবরক্ষণের উপর ব্যবসার সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। যথাযথভাবে হিসাব না করলে ব্যবসা ব্যর্থ হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায় যে, উপরোক্ত বিষয়গুলো ব্যবসায়ের সফলতার জন্য একান্ত আবশ্যক। যে উদ্যোক্তা উপরোক্তা বিষয়গুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করেন তার ব্যবসায় সাফল্য আসবে এসব শর্ত লংঘন করলে ব্যবসায় বিপর্যয় আশংকা থাকে।
আরও দেখুন...