পঞ্চমঃ পাঠঃ সমাস

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - সংস্কৃত - তৃতীয় ভাগঃ তৃতীয়ঃ | NCTB BOOK

পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত দুই বা তার অধিক পদের একপদে পরিণত হওয়ার নাম সমাস। 'সমাস' শব্দের অর্থ 'সংক্ষেপ'।

সমস্ত পদ দুই বা তার অধিক পদ মিলিত হয়ে একপদে পরিণত হলে তাকে সমস্তপদ বলে; যেমন- মহান পুরুষঃ = মহাপুরুষ। এখানে 'মহান' ও 'পুরুষঃ' এ দুটি পদ মিলিত হয়ে মহাপুরুষ' এই একটি পদ গঠিত হয়েছে। সুতরাং 'মহাপুরুষঃ' একটি সমস্তপদ। সমস্যমান পদ যে যে পদের সমন্বেয়ে সমাস গঠিত হয়, তাদের প্রত্যেককে সমস্যমান পদ বলে। যেমন-

নীলম উৎপলম্ = নীলোৎপলম্। এখানে 'নীলম' ও 'উৎপলম্' এ দুটি পদের সমন্বয়ে 'নীলোৎপলম্' পদটি

গঠিত হয়েছে। তাই 'নীল' ও 'উৎপল' এ দুটি সমস্যমান পদ।।

ব্যাসবাক্য বি + আস= 'ব্যাস'। 'ব্যাস' শব্দটির অর্থ বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান। যে বাক্যের সাহায্যে সমাসের

অন্তর্গত পদগুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখানো হয়, সেই বাক্যকে ব্যাসবাক্য বলে, যেমন-- দেবস্য আলয়া =

দেবালয়ঃ। এখানে “দেবালয়ঃ” এই সমাসবদ্ধ পদের অন্তর্গত 'দেব' ও 'আলয়।' এ দুটি পদকে 'দেবা

আলয়।' এ বাক্যের সাহায্যে পৃথক করে দেখানে হয়েছে। সুতরাং 'দেবস্য আলয়।' এ বাক্যটি ব্যাসবাক্য।

ব্যাসবাক্যের অন্য নাম সমাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য।

সমাসের শ্রেণীভেদ

বৈয়াকরণ পাণিনির মতে সমাস চার প্রকার- অব্যয়ীভাব, তৎপুরুষ, দ্বন্দ্ব ও বহুব্রীহি। কর্মধারয় ও দ্বিগু সমাস তৎপুরুষ সমাসেরই অন্তর্গত। কোন কোন বৈয়াকরণ কর্মধারয় ও দ্বিগু সমাসের পৃথক সত্তা স্বীকার করেন। সুতরাং তাঁদের মতে সমাস ছয় প্রকার- অব্যয়ীভাব, তৎপুরুষ, কর্মধারয়, দ্বিগু, বহুব্রীহি এ দ্বন্দ্ব।

১। অব্যয়ীভাব

কূলসা যোগ্য = অনুকূল

বিঘ্নস্য অভাবঃ = নির্বিঘ্নম্ ।

উপরের উদাহরণ দুটি লক্ষ্য কর। প্রথমটিতে 'অনু' পদটি অব্যয় এবং 'কূলম পদটি বিশেষ্য। দ্বিতীয়টিতে “নিঃ” (নির) পদটি অব্যয় এবং 'বিঘ্নম' পদটি বিশেষ্য। দেখা যাচ্ছে যে, উভয় ক্ষেত্রেই পরপদ বিশেষা। অধিকন্তু দুটো উদাহরণেই পূর্বপদের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়েছে। এরূপে - অব্যয় শব্দ পূর্বে থেকে যে সমাস হয় এবং পূর্বপদের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলা হয়।

এই সমাসে শেষের পদটি থাকে বিশেষ্য এবং সমস্ত পদটি অব্যয় ও ক্লীবলিকা হয়। বিভক্ত, সামীপ্য, সমৃদ্ধি, অভাব, যোগ্যতা, বীপ্‌সা, সাদৃশ্য, পর্যন্ত, পশ্চাৎ, অনতিক্রম প্রভৃতি অর্থে অব্যয়ীভাব

সমাস হয়। বিভক্তি হবৌ – অধিহরি

সামীপ্য কূলসা সমীপম্ – উপকূল -

সमृत = মদ্রাণাং সমৃদ্ধিঃ -- সমদ্রম

অভাব : ভিক্ষায়াঃ অভাবঃ- দুর্ভিক্ষ যোগ্যতা রূপস্য যোগ্যম অনুৰূপম

বীপ্‌সা অবনি অহনি— প্রত্যহম্ সাদৃশ্য হরেঃ সদৃশ -- সহরি

পর্যন্ত * সমুদ্রপর্যস্তম্- আসমূদ্রম পশ্চাৎ : পদস্য পশ্চাৎ-- অনুপদম

অনতিক্রমঃ শক্তিম্ অনতিক্রম্য – যথাশক্তি ।

২। তৎপুরুষ সমাস

গৃহং গতঃ = গৃহগতঃ লেন সির = জলসিক্তঃ। পুত্রায় হিতম্ পুরহিতম্। বৃক্ষাৎ পতিতা =

বৃক্ষপতিতঃ। সুখস্য ভোগঃ = সুখভোগঃ। নরেষু উত্তম নরোত্তমঃ। উপরে প্রদত্ত ছয়টি উদাহরণের মধ্যে প্রথম উদাহরণে পূর্বপদস্থ দ্বিতীয়া, দ্বিতীয় উদাহরণে তৃতীয়া, তৃতীয়

উদাহরণে চতুর্থী, চতুর্থ উদাহরণে পঞ্চমী, পঞ্চম উদাহরণে ষষ্ঠী এবং ষষ্ঠ উদাহরণে সপ্তমী বিভক্তি লোপ পেয়ে সমাস হয়েছে এবং প্রতিক্ষেত্রে পরপদের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়েছে। এরূপে - যে সমাসে পূর্বপদে দ্বিতীয়াদি (দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী ও সপ্তমী বিভক্তি লোপ পায় এবং পরপদের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে।

পূর্বপদের বিভক্তির লোপ অনুযায়ী তৎপুরুষ সমাস হয় প্রকার। যথা- দ্বিতীয়া তৎপুরুষ, তৃতীয়া তৎপুরুষ, চতুর্থী তৎপুরুষ পঞ্চমী তৎপুরুষ ষষ্ঠী তৎপুরুষ সপ্তমী। তৎপুরুষ।

(ক) দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সুখং প্রাপ্তঃ = সুখপ্রাপ্ত। বর্ষং ভোগ্যঃ = বর্ষভোগ্যঃ। কৃষ্ণং শ্রিতা = কৃষ্ণণ্ডিতঃ। (খ) তৃতীয়া তৎপুরুষ ব্যাঘ্রেণ হতা = ব্যাপ্তহতঃ। অগ্নিনা দশা = অগ্নিদম্বঃ। সৰ্পেণ দৃষ্টঃ = সর্পদষ্টা। একেন উনঃ = একোনা বিদায়া হীনঃ = বিদ (গ) চতুর্থী তৎপুরুষ দেবায় দত্ত = দেবদত্তম। কুণ্ডলায় হিরণ্যম = কুলহিরণ্যম্। ভূতায় বলির =

ভূতবলিঃ। (ঘ) পঞ্চমী তৎপুরুষ : চৌরাৎ ভয়ম্ = চৌরভয়ম্। স্বর্ণাৎ স্রষ্টা = স্বর্ণদ্রষ্টা। পাপাৎ মুক্তঃ = পাপমুক্তঃ। বৃক্ষাৎ পতিতঃ = বৃক্ষপতিতঃ।

(ঙ) ষষ্ঠী তৎপুরুষ মাতুলস্য আলয় = মাতুলালয়ঃ পরসঃ পানম্ = পরঃপানম্। কাল্যার দাসঃ =

কালিদাসঃ। রাজাঃ পুরুষঃ = রাজপুরুষঃ। হংস্যাঃ অম্ = হংসাপ্তম্। (চ) সপ্তমী তৎপুরুষ ও গৃহে পালিতঃ = গৃহপালিতঃ বনে স্থিতঃ = বনস্থিত। কর্মণি নিপুণঃ = কর্মনিপুণঃ। বনে বাসঃ = বনবাসঃ মাসে দেয় = মাসদেয়।

আরও কয়েকটি তৎপুরুষ সমাস

জলে চরতি যঃ = জলচরঃ। প্রভাং করোতি যা প্রভাকরা। উপরে প্রদত্ত উদাহরণ দুটির প্রতি লক্ষ্য কর। প্রথম উদাহরণে 'জলে' উপপদ এবং 'চরঃ' (চ+ট) কৃদন্ত পদ। দ্বিতীয় উদাহরণে 'প্রভা' উপপদ এবং করা (√কৃ + ট) কৃদন্ত পদ। উভয় উদাহরণেই দেখতে পাচ্ছি, পূর্বপদ 'উপপদ' এবং পরপদ 'কৃদন্তপদ'। সুতরাং-

উপপদের সাথে কৃদন্তপদের যে সমাস হয়, তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলা হয়।

কতিপয় উপপদ তৎপুরুষ

কৃষ্ণ করোতি যা = কৃষ্ণকারা।

জলে জায়তে য

গৃহে তিষ্ঠতি যা = গৃহস্থা

বনে বসতি যা = বনবাসী।

পাদেন পিবতি যঃ = পাদপঃ ।

নঞ তৎপুরুষ

ন মানুষঃ = অমানুষঃ ।

ন ঐক্য = অনৈক্যম্ ।

—উপরের উদাহরণ দুটোতে পূর্বপদ ন (ঞ) অব্যয় এবং পরপদ 'মানুষঃ' ও 'ঐক্য' সুবন্তপদ অর্থাৎ শব্দবিভক্তিযুক্ত পদ। এরূপ ভাবে-

নঞ অব্যয়ের সঙ্গে সুবন্তপদের যে সমাস হয়, তাকে 'নঞ তৎপুরুষ সমাস বলা হয়। 'নঞ' এর 'ন' থাকে। ব্যাঞ্জন বর্ণ পরে থাকলে 'ন' স্থানে 'অ' এবং স্বরবর্ণ পরে থাকলে 'ন' স্থানে 'অনু' হয়। যেমন- ব্রাহ্মণঃ = অব্রাহ্মণ ন অন্তঃ অনন্তঃ ।

উষ্ণম্ উপকম্ = উষ্ণোদকম্।

মহান পুরুষঃ = মহাপুরুষঃ।

উপরের প্রথম উদাহরণে ঊষ পদটি বিশেষণ এবং উপকম' পদটি বিশেষ্য। দ্বিতীয় উদাহরণে 'মহান' পদটি বিশেষণ এবং 'পুরুষঃ' পদটি বিশেষ্য। দুটো উদাহরণেই দেখতে পাচ্ছ, পূর্বপদ বিশেষণ, পরপদ বিশেষ্য এবং সমাসবদ্ধ পদটি বিশেষা হয়েছে। সুতরাং- যে সমাসে সাধারণত পূর্বপদ বিশেষণ, পরপদ বিশেষ্য ও সমস্ত পদটি বিশেষ্য হয়, তাকে কর্মধারয় সমাস

বলা হয়।

কয়েকটি কর্মধারয় সমাস

মহান বীরা = মহাবীরঃ। মহান জন মহাজনঃ নীলম উৎপলম্= নীলোৎপলম্। পীতম্ অম্বরম্ =

পীতাম্বরম্ । মহান রাজা = মহারাজা। প্রিয়ঃ সখা =

কর্মধারয় সমাসের শ্রেণীভেদ

কর্মধারয়, সমাস চার প্রকার - উপমান কর্মধারয়, উপমিত কর্মধারয়, রূপক কর্মধারয় এবং মধ্যপদলোপী কর্মধারয়। উপমান, উপমিত ও রূপক কর্মধারণের সঙ্গে উপমান, উপমেয় ও সাধারণ ধর্মের বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে।

তাই প্রথমেই এদের সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে।

যার সাথে কোন বস্তুর তুলনা দেওয়া হয়, তাকে উপমান, যাকে তুলনা দেওয়া হয়, তাকে উপমেয় এবং যে ধর্মটি উপমান ও উপমেয়ের মধ্যে সাধারণভাবে বর্তমানে থাকে, তাকে সাধারণধর্ম বলা হয়। যেমন- 'নবঃ সিংহঃ ইব' । এখানে সিংহের সন্ধ্যে নরের তুলনা দেয়া হয়েছে। সুতরাং 'সিংহ' উপমান এবং 'নর' উপমেয়। আবার ঘন ইব শ্যাম বর্ণ। এখানে 'ঘন' উপমান ও 'বর্ণ' উপমেয়ের মধ্যে 'শ্যামবর্ণ' সাধারণভাবে বর্তমান। সুতরাং 'শ্যামবর্ণ সাধারণ ধর্ম। উপমান ও উপমেয় সহজে বুঝতে হলে মনে রাখতে হবে- 'অধিকগুণযোগী উপমান' - যে দুটি বস্তুর মধ্যে তুলনা হয় তার মধ্যে যেটির গুণ বেশি সেটি উপমান। যেমন- মুখ ও চন্দ্রের মধ্যে যখন তুলনা হয়, তখন 'চন্দ্র' মুখ অপেক্ষা অধিকতর গুণসম্পন্ন বলে তা উপমান হয়।

উপমান কর্মধারয়

অর্ণবঃ ইব গভীরা = অর্ণবগভীরঃ ।

নবনীতম্ ইব কোমলম্ = নবনীতকোমলম্।

প্রথম উদাহরণে 'অর্ণব' উপমান এবং 'গভীরঃ সাধারণধর্মবাচক পদ। দ্বিতীয় উদাহরণে 'নবনীতম্' উপমান এবং 'কোমলম্ সাধারণধর্মবাচক পদ। উভয় উদাহরণেই উপমান প্রথমে ব্যবহৃত হয়েছে। এরূপভাবে উপমানের সঙ্গে সাধারণধর্মবাচক পদের যে সমাস হয়, তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলা হয়।

শংখ ইব ধবলঃ = শংখধবলঃ পর্বতঃ ইব উন্নত = পর্বতোন্নতঃ অনলাইব উচ্ছ্বলঃ = অনলোজ্বলা।

উপমিত কর্মধারয়

পুরুষ সিংহ ই = পুরষসিংহঃ।

মুখম চন্দ্ৰঃ ইব = মুখচ

উপরের উদাহরণ দুটোর প্রতি একটু মনোযোগের সাথে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, প্রথম উদাহরণে--পূর্বপদ ‘পুরুষঃ' উপমেয় এবং পরপদ 'সিংহঃ' উপমান। দ্বিতীয় উদাহরণেও পূর্বপদ 'মুখম্' উপমেয় পরপদ 'চন্দ্র' উপমান। উভয় উদাহরণেই সাধারণ ধর্মের উপস্থিতি নেই। এরূপে - সাধারণধর্মবাচক পদের উল্লেখ না থেকে উপমেয় ও উপমানের মধ্যে যে কর্মধারয় সমাস হয়, তাকে বলা হয়

"উপমিত কর্মধারয় সমাস।

কয়েকটি উপমিত কর্মধারয়

নরঃ ব্যাঘ্রঃ ইব = নরবাস্তুর মুখং কমলম ইব= মুখকমলম্। অধরা পাবা ইব অধরপল্লবঃ।

জ্ঞানম্ এর চক্ষুর = জ্ঞানচক্ষুঃ ।

শোকা এর অর্ণবঃ = শোকার্ণবা।

উপরের প্রথম উদাহরণে 'জ্ঞান' উপমেয় এবং 'চক্ষু' উপমান। দ্বিতীয় উদাহরণে 'শোক।' উপমেয় এবং 'অর্ণবঃ' উপমান। দুটো উদাহরণেই উপমান এবং উপমেয়ের মধ্যে অভেদ কল্পনা প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং- যে সমাসে পূর্বপদে উপমেয় এবং পরপদে উপমান থাকে এবং এদের মধ্যে অভেদ কল্পনা বোঝায়, তাকে

রূপক কর্মধারয় সমাস বলা হয়।

কয়েকটি রূপক কর্মধারয়

কোথা এর অনলা = ক্লোধানলঃ। মনা এর চক্ষুঃ = মনশ্চক্ষুঃ আন এর ধনম্ = জ্ঞানধনম্ ।

মধ্যপদলোপী কর্মধা

সিংহচিহ্ণিতম্ আসনম্ = সিংহাসনম্ ।

পলমিশ্রিতম্ অনুম = পলান্নম্ ।

উপরের উদাহরণ দুটো লক্ষ্য কর। প্রথম উদাহরণে ব্যাসবাক্যের মধ্যবর্তী 'চিহ্নিত' পদটি এবং দ্বিতীয় উদাহরণে মিশ্রিতম' পদটি লুপ্ত হয়েছে। সুতরাং-

যে কর্মধারয় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যবর্তী পদ লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলা হয়।

কয়েকটি মধ্যপদলোপী কর্মধার

দেবপূজকঃ ব্রাহ্মণঃ = দেব্রাহ্মণঃ।

ছায়াপ্রধানঃ তরু = ছায়াত।

মৃতমিশ্রিতম্ অম্লম = মৃতান্নম্ । কপিচিতিঃ ভাষাঃ = কপিলায়।

দ্বিগু সমাস

পঞ্চানাং বঁটানাং সমাহারঃ = পঞ্চবটী।

ত্রয়াণাং ভুবনানাং সমাহারঃ = ত্রিভুবনম্।

উপরের উদাহরণ দুটিতে পূর্বপদে সংখ্যাবাচক শব্দ রয়েছে এবং উভয়ক্ষেত্রেই সমাহার (মিলন) অর্থ প্রকাশিত হয়েছে। এরূপে——— যে সমাসে পূর্বপদে সংখ্যাবাচক শব্দ থাকে এবং সমাহার অর্থ প্রকাশ করে, তাকে দ্বিগু সমাস বলা হয়।

কয়েকটি দ্বিগু সমাস

পঞ্চানার পাত্রাগাং সমাহারঃ = পঞ্চাপাত্রম্ ।

পঞ্চানাং গৰাং সমাহারঃ = পঞ্চগবম্।

চর্তুগাং যুগানাং সমাহারঃ - চতুর্যুগ।

সন্তানাং শতানাং সমাহারঃ = সপ্তশতী।

ত্রয়াণাং লোকানাং সমাহারা = ত্রিলোকী।

"য়া মুনীনাং সমাহার = ত্রিমুনি।

চতুর্ণাং পদানাং সমাহারঃ চতুস্পদী।

৫। বহুব্রীহি সমাস

O

=

পীতম্ অম্বরম্ যস্য সঃ = পীতাম্বরঃ

চক্রং পাণৌ যস্য সা = চক্রপাণিঃ ।

প্রদত্ত উদাহরণ দুটোর প্রতি লক্ষ্য কর। প্রথমটিতে 'পীতাম্বরা' বললে 'পীতম্' এবং 'অন্ধরম' এ দুটো সমস্যমান পদের কোনটির অর্থই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয় না। 'পীতাম্বরঃ' বললে বোঝায় সেই ব্যক্তিকে যিনি পীতা পরিহিত। আবার দ্বিতীয় উদাহরণে 'চক্র' ও 'পাণৌ' এ দুটো সমস্যমান পদের কোনটিরই অর্থপ্রাধান্য পরিলক্ষিত হয় না। 'চক্রপাণি।' বললে সেই দেবতাকে বোঝায় যার পাণিতে (হাতে) চক্র আছে।

এরূপে— যে সমাসে সমস্যমান পদের কোনটির অর্থ প্রধানরূপে না বুঝিয়ে অন্য পদের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলা হয়।

বহুব্রীহি সমাসনিষ্পন্ন পদটি বিশেষণ। সুতরাং বিশেষ্যের লিঙ্গ, বিভক্তি ও বচন অনুযায়ী এর লিঙ্গ, বিভক্তি ও বচন হয়। যেমন-নদী মাতা যস্য সঃ = নদীমাতৃকঃ (দেশঃ)

স্বচ্ছং তোয়ং (জল) যস্যাঃ সা ও স্বচ্ছতায়া (নদী)।

প্রসন্নম অ (জল) যস্য ত = প্রসন্না (সরঃ) আরো কয়েকটি বহুব্রীহি সমাস মহাজৌ বাহু যস্য = মহাবাহুঃ। দৃঢ়া ভক্তিঃ যস্য সা = দৃঢ়ভক্তিঃ। মহতী মতিঃ যস্য সহ = মহামতিঃ। বঢ়ম্ উরা সা সা = ব্যূঢ়োরকঃ। ছৌ বা প্রয়ো বা = চিত্রাঃ পঞ্চ বা খট্ বা = পঞ্চষাঃ। ঊর্ণা নাভৌ যস্য স = উর্ণনাতঃ পরং নাভৌ যা সঃ পদ্মনাভা। যুবতিঃ জায়া যস্য যুবজানিঃ শোভনং হৃদয়ং যস্য সঃ = সুখ।

পুষ্পং ধনুঃ যস্য সা = পুষ্পধনুঃ, পুষ্পবস্থা।

হরিশ্চ হরত হরিহরৌ

৬। দ্বন্দ্ব সমাস

বৃক্ষশ্চ লতা চ = বৃক্ষলতে।

উপরের উদাহরণ দুটোতে প্রত্যেক সমস্যমান পদের শেষে রয়েছে 'চ' অব্যয় এবং প্রতিক্ষেত্রেই সমস্যমান পদযুগলের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়েছে। যে সমাসে সমস্যমান পদের প্রত্যেকটির অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয় এবং ব্যাসবাক্যে প্রত্যেক সমস্যমান

পদের পরে 'চ' বসে, তাকে 'দ্বন্দ্ব সমাস' বলা হয়।

দ্বন্দ্ব সমাস দু'রকমের হয়- ইতরেতর দ্বন্দ্ব এ সমাহার দ্বন্দ্ব।

(ক) ইতরেতর দ্বন্দ্ব (ইভর + ইভর = পরস্পর) যে দ্বন্দ্বসমাসে অনেক পদের পরস্পর যোগ বোঝায়, তাকে

ইতরেতরসমাস বলা হয়। এই সমাসে সমস্ত পদ পর পদের লিঙ্গ প্রাপ্ত হয়। যেমন- রামশ্চ লক্ষ্মণশ্চ = রাম-লক্ষ্মণৌ কন্দ মূল ফল = কন্দমূলফলানি। মাত চ পিতা চ

মাতাপিতরৌ, মাতরপিতরৌ। পত্র পুষ্পঞ্চ = পত্রপুষ্পে। দৌষ্ট ভূমিশ্চ = দ্যাবাভূমী। সন্ত্রী চ পুমাংশ্চ = স্ত্রীপুংসৌ। ইন্দ্রশ্চ বরুণশ্চ = ইন্দ্রবরুশো। কুশচ লবঙ্ক = কুশীলবৌ। জায়া চ পশ্চি = দম্পতী, জম্পতী, জায়াপতী।

(খ) সমাহার বন্ধ যে দ্বন্দ্ব সমাসে দুই বা বহু পদের সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমাহার ঘা বলা হয়। এই সমাসে শেষের শব্দ যে লিঙ্গেরই হোক না কেন, সমস্তপদ ক্লীবলিকা ও একবচনান্ত হন।

যেমন- করৌ চ চরণৌ চ = করচরণম্।

অহয়শ্চ নকুলান্চ = অহিনকুলম্ গাবশ্চ অশান্ত = গৰাশ্বম্ ।

নং চ দিবা 5 = নন্দিবম্।

রাত্রিশ্চ দিবা চ = রাত্রিদিবম্।

O

Content added By
Promotion