পরিবার ও বিদ্যালয়ে শিশুর ভূমিকা

তৃতীয় শ্রেণি (প্রাথমিক স্তর ২০২৪) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় - NCTB BOOK

পরিবার ও বিদ্যালয়ে শিশুর ভূমিকা

১ পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য

ছবি-১                                                                                                                                      ছবি-২

ক) উপরের ছবি দুটি পর্যবেক্ষণ করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি-

(১) ১নং ছবিতে কে, কী করছে? 

(২) কেন করছে? 

(৩) ২নং ছবিতে কে, কী করছে? 

(৪) কেন করছে?

সাধারণত মা, বাবা ও ভাইবোন নিয়ে পরিবার গঠিত হয়। এছাড়াও যৌথ পরিবারে চাচা, চাচি, ফুপু এবং চাচাতো ভাইবোনও থাকে। অনেক পরিবারে দাদা, দাদি কিংবা অন্য কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিও রয়েছেন। পরিবারে ভাইবোনদের মধ্যে কেউ আমাদের চেয়ে ছোটো, আবার কেউ বড়ো। পরিবারের বড়ো সদস্যগণ আমাদেরকে লালনপালন করেন, আদর স্নেহ করেন এবং যত্ন নেন। আবার পরিবারের ছোটো সদস্যরা আমাদেরকে ভালোবাসে, সম্মান করে।

পরিবারের ছোটো এবং বড়ো সকল সদস্য আমাদের ভালোবাসা, স্নেহ ও শ্রদ্ধার পাত্র। তাদের প্রতিও আমাদের কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। পরিবারের বড়ো সদস্যগণের আদেশ ও নির্দেশ আমরা মেনে চলব। তাঁদেরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করব। পরিবারের কাজে তাঁদেরকে সাধ্যমত সাহায্য করব। অন্যদিকে পরিবারের ছোটোদেরকে আমরা ভালোবাসব ও স্নেহ করব। তাদেরকে খেতে সাহায্য করব। খেলতে নিয়ে যাব। সব সময় তাদের দিকে লক্ষ রাখব, যাতে তারা কোনো রকম সমস্যায় না পড়ে। এছাড়াও পরিবারের কোনো সদস্য অসুস্থ হলে তাদেরকে সেবা করব।

খ) উপরের পাঠ্যাংশটুকু পড়ে পরিবারের ছোটোদের প্রতি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য নিচের ছকে লিখি-

ছোটোদের প্রতি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য

১. 
২. 
৩. 

গ) উপরের পাঠ্যাংশটুকু পড়ে পরিবারের বড়োদের প্রতি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য নিচের ছকে লিখি-

বড়োদের প্রতি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য

  
  
  

ঘ) পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমি কেন দায়িত্ব পালন করতে চাই, তা লিখি-

১. 
২. 
৩. 

২ প্রবীণদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য

ক) উপরের ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি-

(১) ছবিতে বৃদ্ধা মহিলা কী করছেন? 

(২) মেয়েশিশুটি কী করছে? 

(৩) ছেলেশিশুটি কী করছে? 

(৪) বৃদ্ধা মহিলার সাথে ছেলে এবং মেয়েটির সম্পর্ক কী হতে পারে?

অনেক পরিবারে দাদা, দাদি, নানা-নানি কিংবা অন্য কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি রয়েছেন। পরিবারের এসব প্রবীণ সদস্য আমাদের নিকট পরম শ্রদ্ধেয় ও সম্মানীয় ব্যক্তি। এঁরা আমাদের অত্যন্ত স্নেহ করেন এবং আমাদের কল্যাণ কামনা করেন।

তাঁরা আমাদেরকে যত্নসহকারে লালনপালন করেছেন। আদরস্নেহ করেছেন। তাই আমরা তাঁদের নিকট কতজ্ঞ। তাঁদের কেউ কেউ বয়সের কারণে অনেক দুর্বল। তাঁরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। অনেকে অন্যের সাহায্য ছাড়া নিজের কাজকর্মগুলোও করতে পারেন না। তাঁরা অনেক সময় নিঃসঙ্গতায় ভোগেন। তাই তাঁদেরকে ভালোবাসতে হবে, সঙ্গ দিতে হবে, গল্প করতে হবে এবং বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে এবং তাঁদের উপদেশ মেনে চলতে হবে।

খ) উপরের পাঠ্যাংশটুকু পড়ে আমার পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের প্রয়োজনগুলো লিখি-

১. 
২. 
৩. 

গ) আমি আমার পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের প্রতি কী কী দায়িত্ব পালন করতে চাই, তা নিচের ছকে লিখি-

১. 
২. 
৩. 

ঘ) পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের প্রতি আমাদের কেন দায়িত্ব পালন করা উচিত তা নিচের ছকে লিখি-

১. 
২. 
৩. 

৩) পরিবারের সুরক্ষা

ক) উপরের ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে কী দুর্ঘটনা ঘটেছে তা বলি। পরিবারে আর কী কী নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা নিচের ছকে লিখি-

ক্রমিক নং

নিরাপত্তা ঝুঁকি

  
  
  

পরিবার আমাদের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তবে বিভিন্ন কারণে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। পরিবারের কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। ঘরে আগুন লেগে যেতে পারে। বাড়িতে চুরি বা ডাকাতিও হতে পারে।

আমাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থা রয়েছে যেমন- হাসপাতাল, ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশ বাহিনী ইত্যাদি। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাড়িতে আগুন লাগলে ফায়ার ব্রিগেড তা নেভাতে সাহায্য করে। পুলিশ চোর, ডাকাত ধরে ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করে আমাদের সুরক্ষা দেয়।

আমাদের প্রতিবেশীরা সবচেয়ে কাছে থাকেন বলে যে কোনো বিপদ-আপদে তাঁরা সবার আগে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। বিপদে তাদেরকে সবার আগে জানাতে হয়। এর পাশাপাশি কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাহায্যের জন্য তা নির্দিষ্ট সংস্থাকে জানাতে হয়। এজন্য কোন সংস্থা কোন সেবা দেয় এবং কীভাবে সেসব সেবা গ্রহণ করা যায়, তা আমাদের জানা প্রয়োজন। সংস্থাগুলোর সাহায্য গ্রহণের জন্য দ্রুত যোগাযোগ করার কিছু হেল্পলাইন নম্বর/হটলাইন ফোন নম্বর আছে। ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স এবং পুলিশি সেবা পেতে জাতীয় হেল্প ডেস্ক হিসেবে '৯৯৯' চালু করা হয়েছে। এ নম্বরে যে কোনো দিন যে কোনো সময় সেবার জন্য বিনা খরচে ফোন করা যায়। ফোন করার সময় বাড়ির ঠিকানা এবং প্রয়োজন সম্পর্কিত তথ্য দিতে হয়। এ হেল্পডেস্ক নির্দিষ্ট সেবাদানকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা করে। ফোন করা ছাড়াও নির্দিষ্ট সংস্থার দপ্তরে সরাসরি গিয়ে যোগাযোগ করা যায়।

গ) সেবাদানকারী সংস্থার সেবা পাওয়ার জন্য কী করা যায় তা নিচের ছকে লিখি-

ক্রমিক নংযোগাযোগের উপায়কী তথ্য জানাব
  
  

ঘ) বাড়িতে কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিবেশীর সাহায্য পাওয়ার জন্য করণীয় কাজ অভিনয় করে দেখাই।

৪) পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় আমি

 ক) উপরের ছবি দুটি পর্যবেক্ষণ করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি-

(১) এগুলো কীসের ছবি? 

(২) এখানে কাদের দেখা যাচ্ছে? 

(৩) তারা কী করছে? 

(৪) এর ফলে কী হতে পারে?

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সবারই পছন্দ। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার অনেক সুফল রয়েছে। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখতে সুন্দর, তাতে মশা-মাছি জন্মে না, ধুলোবালি জমে না, রোগজীবাণু জন্মে না, দুর্গন্ধ ছড়ায় না। এজন্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশ স্বাস্থ্যকর।

আমাদের নিজ বাড়ির আশপাশে অবস্থিত অন্যান্য বাড়িঘর, পাড়া-প্রতিবেশী, গাছপালা, রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ ইত্যাদি নিয়ে গঠিত হয় আমাদের নিকট পরিবেশ। এ নিকট পরিবেশেই আমাদের বসবাস। অন্যদিকে দিনের একটা বড়ো সময় আমরা বিদ্যালয়ে অবস্থান করি। তাই নিকট পরিবেশ এবং বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা আমাদের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হয়। আমরা নিকট পরিবেশের রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ ইত্যাদি স্থানে ঠোঙা, কাগজ, চিপসের প্যাকেট, চকোলেটের প্যাকেট ইত্যাদি যত্রতত্র না ফেলে ডাস্টবিনে। ফেলব। সমবয়সি বন্ধুবান্ধব এবং বড়োদের সহায়তায় আগাছা পরিষ্কার করে নিকট পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা যায়। ডাস্টবিন না থাকলে বড়োদের সহায়তায় ডাস্টবিন স্থাপনের ব্যবস্থা করা যায়। একইভাবে বিদ্যালয়ের করিডোর, আঙিনা, মাঠ ইত্যাদি স্থানে কাগজের টুকরা বা এ জাতীয় কিছু পড়ে থাকতে দেখলে তা কুড়িয়ে ময়লার ঝুড়িতে ফেলব। বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক ব্যবহারের পর পর্যাপ্ত পানি ঢেলে আমরা তা পরিচ্ছন্ন রাখব।

নিকট পরিবেশে এবং বিদ্যালয়ে যেখানে-সেখানে কফ-থুথু ইত্যাদি ফেললে তা আবার অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন করা ও পরিচ্ছন্ন রাখা সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন করা এবং পরিচ্ছন্ন রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। এ বিষয়ে অন্যদের সচেতন করাও প্রয়োজন। এ কাজগুলো একা করার চেয়ে অন্যদেরকে সাথে নিয়ে করা বেশি কার্যকর।

খ) আমার নিকট পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য আমার করণীয় নিচের ছকে লিখি-

ক্রমিক নংকরণীয়কীভাবে করা হবে?
আগাছা পরিষ্কার করাছুটির দিনে বড়োদের সহায়তায় বন্ধুবান্ধব মিলে আগাছা কেটে/উপড়ে ফেলে এক জায়গায় জড়ো করা

 

  

 

  

8

 

  

গ) আমার বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য করণীয় নিচের ছকে লিখি-

ক্রমিক নংকরণীয়কীভাবে করা হবে?
আগাছা পরিষ্কার করাশিক্ষকের সহায়তায় বন্ধুবান্ধব মিলে আগাছা কেটে/উপড়ে ফেলে এক জায়গায় জড়ো করা

 

  

 

  

 

  

ঘ) শিক্ষকের সহায়তায় একটি নির্দিষ্ট দিনে বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতার ব্যবহারিক কাজ করি।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion