হ্যাচারি নির্মাণের পূর্বে অভীষ্ট প্রজাতি চিহ্নিত করতে হবে ও বাজারের চাহিদা এবং আর্থিক যোগানের ওপর ভিত্তি করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে, যা হ্যাচারির নকশা তৈরির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। হ্যাচারির প্রকারভেদ সাধারণত হ্যাচারির কার্যকরী প্রয়োজনীয়তা এবং অর্থনৈতিক দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। হ্যাচারির আকার বা আয়তনের ওপর ভিত্তি করে তিনভাগে ভাগ করা হয়।
এটি এমন একটি হ্যাচারি যা চাষি তার নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে বা অতিরিক্ত শ্রমের জন্য নিজ পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় পরিচালনা করে। মূল লক্ষ্য হলো হ্যাচারিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোনা উৎপাদন করা যা দিয়ে নিজের চাহিদা মিঠানোর পাশাপাশি প্রতিবেশি চাষিদের কাছে বিক্রি করা। এটি সাধারণত ১০০০ বর্গমিটারের মধ্যে হয়ে থাকে। পোনা উৎপাদনের পরিমাণও কম হয়। বছরে ৪০-৫০ লক্ষ পোস্ট লার্ভার বেশি হয়না এবং ২ জন কারিগরী কর্মী দ্বারা হ্যাচারি পরিচালিত হয়। এ ধরনের হ্যাচারির মূলধন বিনিয়োগের জন্য সাধারণত ২০-২৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়। হ্যাচারিতে ব্যবহৃত চৌবাচ্চার আয়তন ১০ টনের কম হয়। কম ঘনত্বে অপরিশুদ্ধ পানি ব্যবহৃত হয়। তাই পোনা বাঁচার সম্ভাবনা ০- ৯০%। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে এ ধরনের হ্যাচারির অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
এইসব হ্যাচারি বিনিয়োগকৃত মূলধন, হ্যাচারির আকার, হ্যাচারির উৎপাদন ক্ষমতা এবং পরিচালনার পরিপ্রেক্ষিতে ছোট আকারের হ্যাচারির চেয়ে তুলনামূলকভাবে বড়। তবে হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা ছোট আকারের হ্যাচারির মতই। বছরে পোস্ট লার্ভা উৎপাদনের পরিমাণ ১.০-২.০ কোটি এবং তিনজন কারিগরী কর্মী, ৩-৪ জন শ্রমিক দ্বারা পরিচালিত হয়। এখানে পরিশোধিত পানি বেশি ঘনত্বে ব্যবহার করা হয়। পোনা বাঁচার হার প্রায় ৪০% বা তার কম। ছোট সমবায় সমিতি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এ ধরনের হ্যাচারিগুলো সাধারণত তাদের সদস্য চাষিদের প্রয়োজনীয় বাগদা চিংড়ির পোনা সরবরাহ করে থাকে।
বড় আকারের হ্যাচারি পরিচালনার জন্য বড় কর্পোরেশন, সরকারি সংস্থা বা সমবায় প্রকল্পের সহায়তা প্রয়োজন হয়। এ হ্যাচারিগুলো বাণিজ্যিকভাবে পোনা উৎপাদন এবং সরবরাহ করে। এক্ষেত্রে মূলধন কয়েক লক্ষ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চিংড়ি পোনা উৎপাদন করা হয়। সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকে এবং সর্বোচ্চ ৬ জন কারিগরী কর্মী এবং ৬-১০ জন শ্রমিক দ্বারা পরিচালিত হয়। বার্ষিক উৎপাদনের পরিমাণ ২.০ কোটির বেশি হতে পারে। এখানে পোনা বাঁচার হার সর্বোচ্চ প্রায় ৬০ শতাংশ।
আরও দেখুন...