১১.৩ উন্নত প্রাণী ও উদ্ভিদ উদ্ভাবনে জিনপ্রযুক্তির ব্যবহার

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - জীবপ্রযুক্তি | NCTB BOOK

জিন প্রকৌশল ব্যবহার করে উন্নত প্রাণী উদ্ভাবনের জন্য বিজ্ঞানীরা অনেক দিন থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কোথাও কোথাও সফলও হয়েছেন। তারই একটি ফসল হচ্ছে ট্রান্সজেনিক জীব (প্ৰাণী অথবা উদ্ভিদ)। ট্রান্সজেনিক জীব উৎপাদনের পদ্ধতিকে ট্রান্সজেনেসিস বলে। রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ ও মাইক্রোইনজেকশন কৌশল প্রয়োগ করে ট্রান্সজেনিক জীব উদ্ভাবন করা হয়।ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে উদ্ভিদ ও অনেক প্রাণীর ক্ষেত্রে ট্রান্সজেনিক জীব উৎপন্ন করা সম্ভব হয়েছে। ফলে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং দিয়ে উদ্ভাবিত ট্রান্সজেনিক জীব পৃথিবীতে একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে এবং গৃহপালিত পশুদের উন্নতিসাধনে ট্রান্সজেনেসিস সহজভাবে আমাদের সাফল্য বয়ে এনেছে।ট্রান্সজেনিক প্রাণী: মানুষের জিন বিশেষ পদ্ধতিতে ইঁদুরে প্রবেশ করিয়ে এমন ট্রান্সজেনিক ইঁদুর উৎপাদন সম্ভব হয়েছে, যা মানুষের অ্যান্টিবডিগুলো তৈরি করতে সক্ষম। একই পদ্ধতিতে ট্রান্সজেনিক গবাদিপশু, ভেড়া, ছাগল, শুকর, পাখি ও মাছ উৎপাদন করা হয়েছে। ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ: জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে জিনের স্থানান্তর ঘটিয়ে যেসব উদ্ভিদ সৃষ্টি করা হয়, সেগুলোকে ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ বলে। রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ কৌশল প্রয়োগ করে একটি কাঙ্ক্ষিত জিন উদ্ভিদদেহের কোষের প্রোটোপ্লাজমে প্রবেশ করানো হয়।গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থকরী ফসলকে ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদে পরিণত করে পতঙ্গ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী করে উৎপাদন করা হচ্ছে। শৈত্য, লবণাক্ততা, খরা, নাইট্রোজেন ও ফাইটোহরমোন স্বল্পতা ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ উদ্ভাবন করে মোকাবিলা করা সক্ষম হয়েছে। বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ৬০টির মতো উদ্ভিদ প্রজাতিতে এ প্রক্রিয়ার সফল প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: টমেটো, তামাক, আলু, লেটুস, বাঁধাকপি, সয়াবিন, সূর্যমুখী, শসা, তুলা, মটর, গাজর, আপেল, মুলা, পেঁপে, ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি। টান্সজেনিক টমেটো উদ্ভাবন করে পাকা টমেটোর ত্বক নরম হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এগুলোকে বিলম্বে পাকানো এবং এর ভেতর সুক্রোজের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
 

১১.৩.১ কৃষি উন্নয়নে জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার
মানুষের অন্যতম প্রধান মৌলিক চাহিদা খাদ্য। কিন্তু সীমিত ভূখণ্ডে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা নিয়ে কীভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া যায় কিংবা কীভাবে উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করে ব্যবসায়িক ফায়দা ওঠানো যায়, সেটি নিয়ে সারা পৃথিবীতে চলছে এক অঘোষিত যুদ্ধ। এ যুদ্ধ জয়ের হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে সফল জীবপ্রযুক্তির প্রয়োগ।

কৃষি উন্নয়নে যেসব জীবপ্রযুক্তিগত পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলো:
১. টিস্যু কালচার: এ পদ্ধতিতে উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গের ক্ষুদ্র অংশ; যেমন মূল, কাণ্ড, পাতা, অঙ্কুতির চারার বিভিন্ন অংশ ইত্যাদি নির্ধারিত আবাদ মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আবাদ করা হয়। এই কালচারের ফলে এসব বর্ধনশীল অঙ্গসমূহ থেকে অসংখ্য অণুচারা উৎপন্ন হয়। এসব অণুচারার প্রত্যেকটি পরে উপযুক্ত পরিবেশে পৃথক পৃথক পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে অল্প জায়গায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বাণিজ্যিকভাবে লাখ লাখ কাঙ্ক্ষিত চারা তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।
২. অধিক ফলনশীল উদ্ভিদের জাত সৃষ্টি: কোনো বন্য উদ্ভিদের উৎকৃষ্ট জিন ফসলি উদ্ভিদে প্রতিস্থাপন করে কিংবা জিনের গঠন বা বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে উন্নত জাতের উদ্ভিদ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। এভাবে ধান, গম, তেলবীজসহ অনেক শস্যের অধিক ফলনশীল উন্নত জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।
৩. গুণগত মান উন্নয়নে: জীবপ্রযুক্তি প্রয়োগ করে প্রাণী ও উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদির গঠন, বর্ণ, পুষ্টিগুণ, স্বাদ ইত্যাদির উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। যেমন: অস্ট্রেলিয়ায় ভেড়ার লোমকে উন্নতমানের করতে তাদের খাদ্য ক্লোভার ঘাসে রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ প্রযুক্তির মাধ্যমে সূর্যমুখীর সালফার অ্যামিনো অ্যাসিড সৃষ্টিকারী জিন স্থানান্তর করা হয়েছে। ফলে খাদ্য হিসেবে এই ঘাস খেলেই ভেড়ার লোম উন্নতমানের হচ্ছে, পৃথকভাবে সালফার সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া প্রয়োজন হচ্ছে না ।
৪. সুপার রাইস সৃষ্টি: জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে সুইডেনের এক বিজ্ঞানী সুপার রাইস বা গোল্ডেন রাইস নামক এক ধরনের ধান উদ্ভাবন করেছেন। এটি ভিটামিন A সমৃদ্ধ ।
৫. ভিটামিন সমৃদ্ধ ভুট্টার জাত সৃষ্টি: সম্প্রতি স্পেনের একদল গবেষক জেনেটিক্যালি মডিফাইড ভুট্টার বীজ উদ্ভাবন করেছেন যাতে ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ও ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যাবে। এই ভুট্টা ব্যালেন্স ডায়েটের পাশাপাশি গরিব দেশগুলোর মানুষের অপুষ্টি দূর করবে।
৬. স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক: জীবপ্রযুক্তি দিয়ে শাক-সবজি, ফল ও শুঁটকির ক্ষতিকর পতঙ্গ, মশা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিকট (SIT) উদ্ভাবন করা হয়েছে। এটি ব্যবহার করে পতঙ্গের বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। জাপান, ফিলিপিনস, থাইল্যান্ড, গুয়াতেমালা, ব্রাজিল এসব দেশে এই প্রযুক্তি ব্যাপক প্রচলিত।
৭. ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ: এ সময় পর্যন্ত প্রায় ৬০টি উদ্ভিদ প্রজাতিতে রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ কৌশল সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তামাক, টমেটো, আলু, মিষ্টি আলু, লেটুস, সূর্যমুখী, বাঁধাকপি, তুলা, সয়াবিন, মটর, শসা, গাজর, মুলা, পেঁপে, আঙ্গুর, কৃষ্ণচূড়া, গোলাপ, নাশপাতি, নিম, ধান, গম, রাই, ভুট্টা প্রভৃতি। এগুলো পতঙ্গ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী এবং একই সাথে যেকোনো পরিবেশকে মোকাবিলা করতে পারে।


১১.৩.২ ঔষধশিল্পে জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার
প্রতিবছর জনসংখ্যা ও রোগের জটিলতা বেড়েই চলছে। এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা পৌঁছে দিতে বিজ্ঞানীরা জীবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঔষধশিল্পের উন্নতি ঘটিয়েছেন। মারাত্মক রোগ-ব্যাধি শনাক্তকরণের পাশাপাশি জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে ঔষধ উৎপাদনের প্রক্রিয়া জোরালো হয়েছে। নিচে তার কয়েকটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলো।
১. ভ্যাকসিন উৎপাদন: বর্তমানে জিন প্রকৌশল প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন ভ্যাকসিন বা টিকা উৎপাদন করা হয়েছে যেগুলো পোলিও, যক্ষ্মা, হাম, বসন্তসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগের রোগ প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
২. ইন্টারফেরন উৎপাদন: ইন্টারফেরন আধুনিক ঔষধশিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রোটিন অণুর সমন্বয়ে গঠিত এ উপাদানটি দেহের রোগের প্রতিরোধ ব্যবস্থায় অত্যন্ত সহায়ক। জিন প্রকৌশল প্রয়োগ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিক ইন্টারফেরন উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এটি হেপাটাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং ক্যান্সার রোগীদেরকে প্রাথমিকভাবে ইন্টারফেরন প্রয়োগ করে ক্যান্সারকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
৩. হরমোন উৎপাদন: বিভিন্ন হরমোন (যেমন: ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন কিংবা মানুষের দেহ বৃদ্ধির হরমোন ইত্যাদি) উৎপাদন জীবপ্রযুক্তির এটি উল্লেখযোগ্য দিক। জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হরমোন সহজসাধ্য এবং দামও অনেক কম।
৪. অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন : কম সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদনের জন্য জীবপ্রযুক্তির প্রয়োগ করে বর্তমানে এক হাজারের বেশি অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদিত হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন অ্যান্টিবায়োটিক।
৫. এনজাইম উৎপাদন: পরিপাক-সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের উপাদান হিসেবে কিছু এনজাইম, (যেমন: অ্যামাইলেজ, প্রোটিয়েজ ও লাইপেজ, পেঁপে থেকে প্যাপেইন) প্রস্তুত করা হয়। বটগাছ থেকে ফাইসন (যা কৃমিরোগে ব্যবহৃত হয়), গবাদিপশুর প্লাজমা থেকে থ্রম্বিন (রক্তপাত বন্ধে ব্যবহৃত হয়) এবং ট্রিপসিন (যা ক্ষত নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়) জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত এবং বাজারজাত হচ্ছে।
৬. ট্রান্সজেনিক প্রাণী থেকে ঔষধ আহরণ: ট্রান্সজেনিক প্রাণী উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রাণীগুলোর দুধ, রক্ত ও মূত্র থেকে প্রয়োজনীয় ঔষধ আহরণ করা হয়। একে মলিকুলার ফার্মিং বলে।
 

১১.৩.৩ গৃহপালিত পশু উন্নয়নে জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার:
উন্নত জাতের পশু উৎপাদনের লক্ষ্য হচ্ছে: (ক) চর্বিমুক্ত মাংস উৎপাদন, (খ) দ্রুত বিক্রয়যোগ্য করা এবং (গ) রোগ প্রতিরোধী করা। ইতোমধ্যে ট্রান্সজেনিক ভেড়া উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই ভেড়ার প্রতি লিটার দুধে ৩৫ গ্রাম পর্যন্ত হিউম্যান আলফা এন্টিট্রিপসিন প্রোটিন পাওয়া যায়। এ প্রোটিনের অভাবে এমফাইসেমা নামক মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হয়। জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে ভেড়াদেহের মাংস বৃদ্ধি এবং শরীরের পশম-বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হয়েছে। চর্বিহীন মাংস ও মানুষের হরমোন উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ট্রান্সজেনিক শূকর উদ্ভাবন সফল হয়েছে। উদ্ভাবিত হয়েছে ট্রান্সজেনিক ছাগল। এসব ছাগলের দুধে পাওয়া যায় এক বিশেষ ধরনের প্রোটিন যা জমাট রক্তকে গলিয়ে করোনারি প্রন্থোসিস থেকে মানুষকে রক্ষা করে। ট্রান্সজেনিক গরু উদ্ভাবনের মাধ্যমে মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের মাতৃদুধের অতি প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ল্যাকটোফেরিনও পাওয়া যাচ্ছে। দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদনে জিন প্রযুক্তির ব্যবহার: বিশ্বে দুধের প্রধান উৎস পাভী। এর পরেই রয়েছে মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। দুধের সরাসরি নানাবিধ ব্যবহার থাকলেও দুখ থেকে বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে দুখত দ্রব্যাদি তৈরি করা হয়। যেমন: মুখ থেকে মাখন, পনির, দই ইত্যাদি খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করা হয়। দুখ থেকে খাদ্যসামগ্রী তৈরির জন্য জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে নানা রকমের ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে।

নিচে কয়েকটি দুগ্ধজাত দ্রব্য তৈরি সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো।
১. মাখন: বিশেষ ব্যাকটেরিয়া থেকে উৎপন্ন এনজাইম দিয়ে মাখনে বিশেষ সুগন্ধ ও স্বাদ সৃষ্টি করা হয়।
২. পনির: আমাদের দেশে গরুর দুধ কিংবা মহিষের দুধ থেকে পনির তৈরি করা হয়। পনির তৈরিতে ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাক প্রয়োগ করা হয়। এতে পনিরের স্বাদ, বর্ণ এবং গন্থের তারতম্য ঘটে। পৃথিবীর সুস্বাদু পনির উৎপাদনের জন্য ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য বিখ্যাত। এই উৎকৃষ্ট মানের পনির উৎপাদন সম্ভব হয়েছে জীব প্রযুক্তির দ্বারা।
৩. দই: দুধে ল্যাকটোজ নামক শর্করা থাকায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করে সেটা থেকে দই বা দইজাতীয় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করা যায়। ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া দুধের জমাট বাঁধা অবস্থা সৃষ্টি করে দইয়ে রূপান্তরিত করে। এটি করার জন্য ল্যান্টিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া নামে এক প্রকার ব্যাকটেরিয়ার বীজ ব্যবহার করা হয়। মূলত এর গুণাগুণের ওপরেই দই এর গুণাগুণ নির্ভর করে।

১১.৩.৪ ফরেনসিক টেস্ট

ফরেনসিক টেস্টের দ্বারা রন্তু, বীর্যরস, মূত্র, অশ্রু, লালা ইত্যাদির ডিএনএ অথবা অ্যান্টিবডি থেকে অপরাধীকে শান্ত করা সম্ভব হয়। জীবপ্রযুক্তি প্রয়োগ করে ফরেনসিক টেস্ট (চিত্র ১১.১০) করার পদ্ধতি এরকম: সেরোলজি (Serology) টেস্ট দিয়ে মানুষের রক্ত, বীর্ষ এবং লালাকে চিহ্নিত করে তার ডিএনএ বিশ্লেষণ করে অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়। আমরা এ পর্যন্ত জিন প্রকৌশলের প্রয়োগ ও অবদান সম্পর্কে যেসব আলোচনা করেছি, এগুলো ছাড়াও আরও অনেক ধরনের কাজ হয়েছে। জিন প্রকৌশল প্রযুক্তি ব্যবহার করে "হিউম্যান জিনোম প্রজেক্ট" -এর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্রোমোজোমে অবস্থিত জিনগুলোর অবস্থান ও কাজ সম্বন্ধে জানা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে মানুষের শরীরের ক্ষতিকর জিনকে অপসারণ করে সুস্থ জিন প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হতে যাচ্ছে। এই পদ্ধতিকে জিন থেরাপি বলে।

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion