আবার আসিব ফির

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - সাহিত্য কনিকা - কবিতা | | NCTB BOOK
16

আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে- এই বাংলায় 

হয়তো মানুষ নয়— হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে; 

হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে 

কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়; 

হয়তো বা হাঁস হবো— কিশোরীর ঘুঙুর রহিবে লাল পায়, 

সারাদিন কেটে যাবে কলমির গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে; 

আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ খেত ভালোবেসে 

জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার এ সবুজ করুণ ডাঙায়,

 

হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে, 

হয়তো শুনিবে এক লক্ষ্মীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে, 

হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে; 

রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদা ছেঁড়া পালে 

ডিঙা বায়; – রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে 

দেখিবে ধবল বক; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে –

Content added || updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

সমুদ্র তীরের বাংলায়
রূপসা তীরের বাংলায়
ধানসিঁড়ি তীরের বাংলায়
জলাগী তীরের বাংলায়
আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে
আজি আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
বেদনার যুগ, মানুষের যুগ, সাম্যের যুগ
সুধার ধারা গড়িয়ে পড়ে গঞ্জ-নগর ছায়া
বকের সারির
কুয়াশার
জলাঙ্গীর ঢেউয়ের
অন্ধকারের
নবান্নের দেশে
শিমুলের ডালে
সবুজ ডাঙায়
কাঁঠাল ছায়ায়
বাংলার সবুজ করুণ ডাঙায়
কলমির গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে
কুয়াশার বুকে ভেসে
বাংলার নদী মাঠ খেত ভালোবেসে
হয়তো বা হাঁস হবো কিশোরীর ঘুঙুর রহিবে লাল পায়
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ খেত ভালোবেসে
হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে
উঠানের ঘাসে
শিমুলের ডালে
সন্ধ্যার বাতাসে
কাঁঠাল ছায়ায়
লক্ষী পেঁচা
লক্ষ্মীপেঁচা
লক্ষ্মীপেচা
লক্ষীপেচা
করুণ ডাঙায়
হিজলের ডালে
শিমুলের ডালে
কাঁঠাল গাছে
সাঁতরায়ে
দলবেঁধে
আকাশ পেরিয়ে
আকাশ ঘুরে
নর্জন্মের বিশ্বাসে
নিরূপায় হয়ে
বিশেষ ভালো লাগায়
স্বদেশপ্রেমের জন্য
সম্পদের কথা
পাখপাখালির কথা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা
নদনদীর কথা
বাংলার নিসর্গের রূপ
ব্যস্ত জীবনের রূপ
প্রকৃতির স্নিগ্ধ রূপ
সন্ধ্যা আকাশের রূপ
বাংলার মানুষের মহত্ত্ব
বাংলার সন্ধ্যার মাধুর্য
বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
বাংলার ঐতিহ্যের সমৃদ্ধি
মৃত্যুর পর দেশের সঙ্গে কবির সম্পর্ক থাকবে না
মৃত্যুর পরও দেশের সঙ্গে কবির মমতার বাঁধন ছিন্ন হবে না
মৃত্যুর পর কবি প্রকৃতিকে ভুলে যাবেন
মৃত্যুর পর প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে না
প্রকৃতির প্রতি অনুরাগ
ভাষার প্রতি মমত্ববোধ
দেশের প্রতি মমত্ববোধ
কবিতা লেখার আগ্রহ
ভালোবাসার বন্ধনে বাঁধা বলে
কবিতা লেখার জন্য
নিসর্গপ্রীতির কারণে
প্রকৃতিকে ভালো লাগার জন্য
কবি আরও বাঁচতে চান বলে
বাংলার নদী, মাঠ খেতকে ভালোবাসেন বলে
কবি মৃত্যুকে ভয় পান বলে
জীবনকে উপভোগ করতে চান বলে
আত্মার বন্ধন অবিচ্ছেদ্য
কবিতা লেখার জন্য
মানুষকে ভালোবাসা দিতে
প্রকৃতির যত্ন নিতে
শ্যাওলায়
রোদের কিরণে
কুয়াশায়
ৰূপসার ভালে
কবুতরের দল
পাচিলের দল
সাদা বকের দল
মাছরাঙ্গার দল
দেশপ্রেম
প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য
গ্রামীণ প্রকৃতি
বাংলার জীববৈচিত্র্য
১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে
১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে
১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
জসীমউদদীন
জীবনানন্দ দাশ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সুফিয়া কামাল
জাগো তবে অরণ্য কন্যারা
পাছে লোকে কিছু বলে
আবার আসিব ফিরে
বঙ্গাভূমির প্রতি
বুদ্ধদেব বসু
জীবনানন্দ দাশ
কায়কোবাদ
কালিদাস বাস
বিশ্বকবি
চারণ কবি
বিদ্রোহী কবি
রূপসী বাংলার কবি
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও

তোমরা যেখানে সাধ চলে যাও আমি এই বাংলার পরে র'য়ে যাব, দেখিব কাঁঠাল পাতা ঝরিতেছে ভোরের বাতাসে। 

হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়
সারাদিন কেটে যাবে কলমির গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে
হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে
পুনর্জন্মবাদ
মননশীলতা
আধ্যাত্মিক চেতনা
প্রকৃতিপ্রেম
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও

শীতকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ বনানীতে সমাগম ঘটে। সাইবেরিয়া থেকে আসা নানা জাতের পাখি। সৌন্দর্য প্রেমিক মানুষও ঘুরে বেড়ায় সবুজের অভয়ারণ্যে। 

দেখিবে ধবল বক; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল – ছায়ায়
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ খেত ভালোবেসে
জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার এ সবুজ করুণ ডাঙায়
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও

এই বাংলার আকাশ-বাতাস
এই বাংলার ভাষা
এই বাংলার নদী, গিরি-বনে
বাঁচিয়া মরিতে আশা।

উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও

দূরে সরে গেছে হিম জর্জর
কুয়াশা ঢাকা বেদনা নিথর
মর্মরি ওঠে মধুর রাগিনী বন-নিকুঞ্জ তলে সুন্দর সে যে হাসিতে তাহার নিখিল ভুবন ভোলে। 

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নের উত্তর দাও

ইব্রাহিমকে তার বাবা-মা বিদেশ পাঠাতে চাইলে সে কোনোভাবেই রাজি হয়। না। বাবা-মাকে সে জানায় সে বাংলাদেশেই থাকবে। তার যদি আবার জন্ম হয় তবে সে এখানেই ফিরে আসতে চায়। 

স্বদেশপ্রেম
মানবপ্রেম
প্রকৃতিপ্রেম
স্বজনপ্রেম
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নের উত্তর দাও

রফিক সাহেব দশ বছর ধরে বিদেশে থাকেন। কিন্তু তার মন পড়ে থাকে বাংলাদেশে। 

অনুশোচনাবোধ
মাতৃভাষাপ্রীতি
স্বদেশপ্রেম
আত্মসমালোচনা

শব্দার্থ ও টীকা

3

ধানসিড়ি — ঝালকাঠি জেলার একটি নদী। নদীটি এখন মরে গেছে।

শঙ্খচিল — এক ধরনের সাদা চিল।

নবান্ন — নতুন ধানকাটার পর আমাদের দেশে এ উৎসব হয়। এ উৎসবে দুধ, গুড়, নারকেলের সঙ্গে মিশিয়ে নতুন আতপ চালের ভাত খাওয়া হয়।

কার্তিকের নবান্নের দেশে — কবি নিজের জন্মভূমি বাংলাদেশকে নবান্নের দেশ বলেছেন। নবান্ন অর্থ নতুন ভাত। কার্তিক মাসে ঘরে নতুন ধান তুলে কৃষকেরা নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠে।

ঘুঙুর — নূপুর, পায়ের অলংকার।

জলাঙ্গী — কবি এখানে নদীকে জলাঙ্গী (অর্থাৎ জল যার অঙ্গে) নামে অভিহিত করেছেন। নদীমাতৃক বাংলাদেশকে কবি জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলা বলেছেন।

ডাঙা — জলাশয়ের নিকটবর্তী উঁচু স্থান।

সুদর্শন — শকুনি।

লক্ষ্মীপেঁচা — এক ধরনের পেঁচা।

রূপসা – একটি নদীর নাম

ডিঙা — ছোট নৌকা।

নীড়ে — পাখির বাসায়।

ধবল — সাদা।

Content added || updated By

পাঠের উদ্দেশ্য

3

কবিতাটি পাঠ করে শিক্ষার্থীরা বাংলার প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্যের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করবে। তাদের মনে নিজের দেশের প্রতি মমত্ববোধের জাগরণ ঘটবে।

Content added || updated By

পাঠ-পরিচিতি

3

‘আবার আসিব ফিরে' কবিতাটি কবির ‘রূপসী বাংলা' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে। জন্মভূমির অত্যন্ত তুচ্ছ জিনিস কবির দৃষ্টিতে সুন্দর হয়ে ধরা পরেছে কবিতায়। কবি মনে করেন, যখন তাঁর মৃত্যু হবে তখন দেশের সঙ্গে তাঁর মমতার বাঁধন শেষ হবে না। তিনি বাংলার নদী, মাঠ, ফসলের খেতকে ভালোবেসে শঙ্খচিল বা শালিকের বেশে এদেশে ফিরে আসবেন। আবার কখনও বা ভোরের কাক হয়ে কুয়াশায় মিশে যাবেন। এমনও হতে পারে, তিনি হাঁস হয়ে সারাদিন কলমির গন্ধে ভরা বিলের পানিতে ভেসে বেড়াবেন। এমনকি দিনের শেষে যে সাদা বকের দল মেঘের কোল ঘেঁষে নীড়ে ফিরে আসে তাদের মাঝেও কবিকে খুঁজে পাওয়া যাবে। এভাবে তিনি বাংলাদেশের রূপময় প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাবেন। 

Content added || updated By

কবি-পরিচিতি

2

কবি জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯২১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম. এ. পাশ করেন। ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে তাঁর কর্মজীবনের শুরু হয় এবং তিনি বিভিন্ন সময়ে কলকাতা সিটি কলেজ, দিল্লি রামযশ কলেজ, বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ, খড়গপুর কলেজ, বরিষা কলেজ ও হাওড়া কলেজে অধ্যাপনা করেন। এক সময় তিনি সাংবাদিকতার পেশাও অবলম্বন করেছিলেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতায় বাংলাদেশের প্রকৃতির রং ও রূপের বৈচিত্র প্রকাশ ঘটেছে। অনেক অজানা গাছ, পশু-পাখি ও লতাপাতা তাঁর কবিতায় নতুন পরিচয়ে ধরা পড়েছে। প্রকৃতিপ্রেমিক এই কবি প্রকৃতি থেকেই তাঁর কবিতার রূপরস সংগ্রহ করেছেন। কবিতা ছাড়াও তিনি গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তিনি ১৯৫৪ সালে কলকাতায় এক ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।

Content added By

কৰ্ম-অনুশীলন

3

ক. কবিতাটির দৃশ্যচিত্র অবলম্বনে একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন কর (শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহণে)। 

খ. ‘আবার আসিব ফিরে' কবিতাটি অবলম্বনে একক ও দলগত আবৃত্তির আয়োজন কর।

Content added || updated By

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

3
Please, contribute by adding content to বহুনির্বাচনি প্রশ্ন.
Content

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

কবিতাংশটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

‘গোধূলি লগনে জগদীশে স্মরণে

বিদায় লইব জনমের তরে 

লুকাইব আমি সন্ধ্যার আঁধারে বাংলা মায়ের ক্রোড়ে

সৃজনশীল প্রশ্ন

3
Please, contribute by adding content to সৃজনশীল প্রশ্ন.
Content
Promotion