বিধি গ্রীষ্মের ছুটিতে বেড়াতে যায় ভাষা শহিদ শফিউরের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে তার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান এবং সমবেদনা প্রকাশ করেন।
উদ্দীপকের শহিদের সাথে শহিদ হয়নি—
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে ভারত উপমহাদেশ ভাগ হয়ে পাকিস্তান (১৪ আগস্ট, ১৯৪৭) এবং ভারত (১৫ আগস্ট, ১৯৪৭) নামে দুটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তৎকালীন পূর্ব-বাংলা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় পরবর্তীকালে এর নাম হয় পূর্ব-পাকিস্তান । পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকালে দেশটির মোট জনগোষ্ঠীর ৫৬% বাংলা ভাষী এবং ৩.২৭% ছিল উর্দু ভাষী। তবুও শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বাঙালি বুদ্ধিজীবী সমাজ প্ৰথমেই প্রতিবাদমূখর হয়ে ওঠেন। তাঁরা এই অন্যায় ও বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। তরুণনেতা শেখ মুজিবসহ অন্যান্য ছাত্র ও যুব নেতৃবৃন্দ এর প্রতিবাদ জানান। এভাবেই পূর্ব-বাংলায় ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত। ১৯৫২ সালে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই স্বাধীন পাকিস্তানে প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। এই সময়ে আরও গ্রেফতার হয়েছিলেন শামসুল হক, , অলি আহাদ, কাজী গোলাম মাহবুবসহ অনেকে। ভাষার জন্য প্রতিবাদী আন্দোলনে পৃথিবীতে প্রথম শহিদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ অনেকেই। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ – এই দীর্ঘ সময়ে বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পটভূমি রচনা করেছিল ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করে। যার প্রেরণায় দীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
এই অধ্যায় শেষে আমরা-