SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - খাদ্য ও পুষ্টি | NCTB BOOK

বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীগণ প্রমাণ করেছেন যে, খাদ্যে শর্করা, আমিষ, স্নেহ পদার্থ, খনিজ লবণ ছাড়াও আরও কতগুলো সূক্ষ্ম উপাদানের প্রয়োজন। এর অভাবে শরীর নানা রোগে (যেমন- রাতকানা, বেরিবেরি, স্কার্ভি ইত্যাদি) আক্রান্ত হয়। ভিটামিন বলতে আমরা খাদ্যের ঐ সব জৈব রাসায়নিক পদার্থকে বুঝি যা খাদ্যে সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থাকে। ভিটামিনসমূহ প্রত্যক্ষভাবে দেহ গঠনে অংশগ্রহণ না করলেও এদের অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন বা তাপশক্তি উৎপাদন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রিয়াগুলো সুসম্পন্ন হতে পারে না।

 

ভিটামিনের প্রকারভেদ : দ্রবণীয়তার গুণ অনুসারে ভিটামিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. স্নেহ জাতীয় পদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- এ, ডি, ই, এবং কে। 

২. পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং সি।

 

ভিটামিনের উৎস : গাছের সবুজ পাতা, কচি ডগা, হলুদ ও সবুজ বর্ণের সবজি, ফল ও বীজ ইত্যাদি অংশে ভিটামিন থাকে।

 

ভিটামিন এ
উৎস : মাছের তেল ও প্রাণিজ স্নেহে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। ক্যারোটিন সমৃদ্ধ শাকসবজি যেমন— লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, টমেটো, গাজর, বীট ও মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন— পেঁপে, আম, কাঁঠালে ভিটামিন 'এ' থাকে। মলা ও ঢেলা মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ থাকে।

কাজ : দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখা, ত্বক ও শ্লেষাঝিল্লিকে সুস্থ রাখা এবং দেহকে বিভিন্ন সংক্রামক রোগের হাত থেকে রক্ষা করা, খাদ্যদ্রব্য পরিপাক ও ক্ষুধার উদ্রেক করা, রক্তে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখা ও দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।

 

অভাবজনিত রোগ

১. রাতকানা : এ রোগের লক্ষণ স্বল্প আলোতে বিশেষ করে রাতে আবছা আলোতে দেখতে না পাওয়া। শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলে চোখ সম্পূর্ণরূপে অন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত শিশুকে সবুজ শাকসবজি ও রঙিন ফলমূল খাওয়ানো উচিত। ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমাদের দেশে টিকা দিবসে বিভিন্ন টিকা কেন্দ্রে শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।

 

২. জেরপথালমিয়া : ভিটামিন 'এ' এর অভাব ঘটলে চোখের কর্নিয়ার আচ্ছাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কর্নিয়ার উপর শুষ্ক স্তর পড়ে। তখন চোখ শুকিয়ে যায় এবং পানি পড়া বন্ধ হয়ে যায়। চোখে আলো সহ্য হয় না, চোখে পুঁজ জমে এবং চোখের পাতা ফুলে যায়।

এ অবস্থায় উপযুক্ত চিকিৎসা করালে এ রোগ থেকে উপশম পাওয়া যেতে পারে। তবে সময় মতো চিকিৎসা না হলে শিশু অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ ছাড়া ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব ঘটলে দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সর্দি, কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি রোগ হতে পারে।

 

ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এর কাজ হলো বিশেষ বিশেষ উৎসেচকের অংশ হিসেবে আমিষ, শর্করা ও স্নেহ পদার্থকে বিশ্লিষ্ট করে এবং এদের অন্তর্নিহিত শক্তিকে মুক্ত হতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি১ (থায়ামিন) : এর প্রধান কাজ হলো শর্করা বিপাকে অংশগ্রহণ করে শক্তিমুক্ত করা। তাছাড়া স্বাভাবিক ক্ষুধা বজায় রাখতে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে।

ভিটামিন বি, (রিবোফ্লেবিন) : অ্যামাইনো এসিড, ফ্যাটি এসিড ও কার্বহাইড্রেটের বিপাকে অংশ নিয়ে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।

ভিটামিন বি, (পাইরিডক্সিন) : শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।

ভিটামিন বি১২ (সায়ানোকোবালামিন) : লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধি ও উৎপাদনে সহায়তা করে। শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

Content added || updated By