SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

On This Page
নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - হিন্দুধর্ম শিক্ষা - প্রথম অধ্যায় | NCTB BOOK

 

প্রতি বছর ২১ জুন বিশ্বজুড়ে বিশ্ব যোগদিবস পালন করা হয়। আমাদের দেশেও বিগত কয়েক বছর ধরে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। তোমাদের বিদ্যালয়ে বা এলাকায় অনুষ্ঠিত যোগদিবসে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা নিচের বক্সে সংক্ষেপে লিখো এবং শ্রেণিতে উপস্থাপন করে সকলের সাথে বিনিময় করো।

 

ছক ১.১৬: ইয়োগা ডের স্মৃতি

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

"আত্মানং বিন্ধি" নিজেকে জানো অর্থাৎ শ্বাশত আত্মাকেই জানো। নিজের স্বরূপেই বেড়ে ওঠাই পরম আনন্দ। এই আনন্দের পরম আধার যোগ। যোগ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত 'যুজ' ধাতু থেকে। এই যুজ্ শব্দের অর্থ কোননো- কাজে নিজেকে নিবিড়ভাবে যুক্ত রাখা। এই যোগে যুক্ত হওয়ার কিছু ধাপ রয়েছে-

রাজযোগ: পতঞ্জলি যোগদর্শনের মাধ্যমে জীবাত্মার মাঝে পরমাত্মাকে গভীরভাবে অনুভব করা।

কর্মযোগ: নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজে যুক্ত থাকা। কাজের ফলাফলের প্রতি আসক্তি না রেখে কর্তব্যকর্ম সম্পাদন।

জ্ঞানযোগ: নাম ও রূপের বাইরে গিয়ে পরম সত্যকে উপলব্ধি করা। এখানে বিশেষ নাম বা রূপের চিন্তা করে ধ্যানের প্রয়োজন নেই। কেবল জ্ঞানের মাধ্যমেই এই যোগসাধনা সম্ভব।

ভক্তিযোগ: প্রেমপূর্ণ ভক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের সাকার রূপের যোগসাধনা। ভক্তি শব্দটি 'ভজ' ধাতু থেকে এসেছে, যার অর্থ ভাগ করা বা অংশগ্রহণ করা। শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, ভক্তি, অনুরাগ বা প্রেমময় সাধনার সমন্বয় ভক্তিযোগ।

হঠযোগ: হঠ শব্দের অর্থ 'বলপ্রয়োগ'। অর্থাৎ বল প্রয়োগ করে শরীরকে বিভিন্ন কৌশল বা আসনের মাধ্যমে যে যোগাসন করা হয় তাই হঠযোগ।

এই যোগগুলোকে ভালোভাবে অনুধাবন করার জন্য প্রয়োজন প্রাণায়াম ও ধ্যানের প্রাত্যহিক অনুশীলন।

১। প্রাণায়াম: দেহের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিকে নিয়ন্ত্রিত করে প্রাণশক্তিকে বৃদ্ধি করে প্রাণায়াম। এর ফলে জরা, ব্যাধি ও অকালমৃত্যুর হাত থেকে আমাদের দেহ রক্ষা পায়।

 

 

২। ধ্যান: বেদ, উপনিষদ ও পতঞ্জলির যোগসূত্র অর্থাৎ রাজযোগের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধ্যান। এর মাধ্যমে, বাস্তবজীবন ও আত্মাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।

 

আগের শ্রেণিগুলোতে আমরা বেশকিছু যোগাসন সম্পর্কে জেনেছি এবং প্রাত্যহিক জীবনে চর্চা করেছি। আমাদের - শরীর ও মনের জন্য যোগাসন অত্যন্ত উপকারী। এবারে আমরা আরও তিনটি যোগাসন সম্পর্কে জেনে নিই।

 

তাড়াসন

 

তাড় শব্দের অর্থ হচ্ছে পর্বত। এই আসনে দেহভঙ্গি অনেকটা পর্বতের মতো দেখায় বলে একে পর্বতাসন বা তাড়াসন বলে।

 

 

পদ্ধতি

 

১. প্রথমে একটি ইয়োগা ম্যাটে অথবা আরামদায়ক জায়গায় দুই পায়ের পাতা পাশাপাশি রেখে দাঁড়াতে হবে। উভয় পায়ের উরু এবং হাঁটু কাছাকাছি থাকবে। নিতম্বের পেশী সংকুচিত করে ভিতরের দিকে টানতে হবে। পেটকে না ফুলিয়ে বুক টান করে এবং মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে হবে। 

২. উভয় পায়ের গোড়ালি ও বৃদ্ধাঙুল পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। পায়ের পাতা ভূমির সাথে সংযুক্ত অবস্থায় থাকবে। 

৩. যদি দাঁড়াতে বা শরীরের ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হয়, তাহলে দুই পায়ের পাতার মাঝখানে দুই-তিন ইঞ্চি ফাঁকা রাখা যেতে পারে। 

৪. হাত দুটি শরীরের দুইপাশে স্বাভাবিকভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। আঙুলগুলো মাটির দিকে প্রসারিত থাকবে। হাতের আঙুল একটির সঙ্গে আরেকটি লাগিয়ে রাখতে হবে। 

৫. লম্বা করে শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত কান বরাবর মাথার উপর তুলতে হবে। 

৬. হাতের বাম আঙুলগুলোর মাঝে ডান আঙুলগুলো প্রবেশ করিয়ে জোড়বদ্ধ অবস্থায় হাতের তালু ঊর্ধ্বমুখী করতে হবে।

৭. দেহের সকল ভার দুই পায়ের উপর ছড়িয়ে দিতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে, দেহের ভার যেন শুধু গোড়ালি বা পায়ের পাতার উপর পড়ে। 

৮. এভাবে শরীরকে স্থাপন করে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ৩০ সেকেন্ড স্থির রাখতে হবে। 

৯. এরপর ৩০ সেকেন্ড শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে। এভাবে আসনটি আরও দুই বার করতে হবে।

 

তাড়াসনের উপকারিতা

 

১. উভয় পায়ে সমান ভর দিয়ে দাঁড়ানোর অভ্যাস হয়। 

২. মেরুদণ্ডের বেঁকে যাওয়া রোধ করে। 

৩. হাঁটুর ব্যথা উপশম হয়। উরুর মাংসপেশি শক্তিশালী হয়। 

৪. শরীরে শক্তি জোগায়। 

৫. শারীরিক উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। 

৬. বিষণ্ণতা এবং মানসিক চাপ কমায়। 

৭. মনোবল, আত্মবিশ্বাস, একাগ্রতা ও উদ্যম বাড়াতে সহায়তা করে। 

৮. স্নায়ু শিথিল করে উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করে।

 

সতর্কতা

 

নিম্ন রক্তচাপ, মাইগ্রেন, অনিদ্রার সমস্যা থাকলে এ আসন না করাই ভালো।

 

অধোমুখ বীরাসন

 

মাটির দিকে মুখ রেখে বা মাটির সঙ্গে মুখ রেখে এই আসন করা হয়। এই আসনকে অনেকে মুখাসনও বলে।

 

 

পদ্ধতি

 

১. হাঁটু মুড়ে ইয়োগা ম্যাট বা সমতল জায়গায় দুই হাঁটু ও দুই পায়ের পাতা একত্র করে বসতে হবে। 

২. দুই হাঁটুর উপর দুই হাত আলতো করে রাখতে হবে। 

৩. এরপর দুই হাত সোজা করে কানের পাশ দিয়ে মাথার উপরের দিকে টেনে তুলে সোজা অবস্থানে আনতে হবে। 

৪. হাত দুটোকে যতটা সম্ভব উপরের দিকে তুলে ধরার চেষ্টা করতে হবে। এই অবস্থায় কোনোক্রমেই যেন হাঁটু ভূমি ছেড়ে উপরের দিকে না ওঠে। 

৫. বুকের ভিতর থেকে ধীরে ধীরে গভীরভাবে শ্বাস নিতে হবে। 

৬. বুক ভরে পুরো বাতাস নেওয়ার পর শরীরকে সামনের দিকে বাঁকিয়ে মাটি স্পর্শ করার চেষ্টা করতে হবে। এই অবস্থায় হাতকে ভাঁজ করা যাবে না এবং নিতম্ব পায়ের গোড়ালির উপরে থাকবে। 

৭. হাত লম্বালম্বিভাবে মাটিতে স্পর্শ করার সময় কপাল মাটিকে স্পর্শ করবে। 

৮. হাতের তালু দুটি মাটির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এবং আঙুলগুলো প্রসারিত অবস্থায় থাকবে। 

৯. চিবুককে ধীরে ধীরে হাঁটুর কাছে টেনে আনতে হবে। চিবুক ও হাঁটু পরস্পর যুক্ত অবস্থানে আসবে। 

১০. শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এই অবস্থায় ত্রিশ সেকেন্ড স্থির থাকতে হবে। 

১১. এরপর আসন ত্যাগ করে ত্রিশ সেকেন্ড শবাসনে বিশ্রাম নিয়ে আসনটি আরও দুইবার করতে হবে।

 

অধোমুখ বীরাসনের উপকারিতা

 

১. মনে ভয়, উৎকণ্ঠা, ক্রোধ উপশম করে প্রশান্তি আনতে এই আসন বিশেষ সহায়তা করে।

২. মেরুদণ্ড সবল হয়। পায়ের পেশি ও হাড়ের বাতের উপশম হয়। কাঁধের পেশির ব্যথাও দূর হয়। 

৩. পরিপাকতন্ত্র সবল হয়। ফলে অজীর্ণ, অম্বল/গ্যাস্ট্রিক দূর হয়। হজমশক্তি বৃদ্ধির কারণে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয় জাতীয় পেটের রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়। 

৪. বহুমূত্র ও হাঁপানি রোগে উপকার পাওয়া যায়। 

৫. পেটের চর্বি কমে। উরু সবল হয়।

 

সতর্কতা

 

উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এই আসন খুবই বিপদজনক হতে পারে।

 

বিপরীত বীরভদ্রাসন

 

যোগশাস্ত্রে বিপরীত বীরভদ্রাসনের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। একে বিপরীত যোদ্ধা ভঙ্গিও বলে। এটি বীরভদ্রাসনের একটি রূপ।

 

পদ্ধতি

 

১. প্রথমে সমতল স্থানে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত মাথার উপরে তুলতে হবে। 

২. হাত দুটো কান স্পর্শ করে থাকবে এবং হাতের তালু সামনের দিকে ফেরানো থাকবে। 

৩. বাম দিকে ঘুরতে হবে। ডান পায়ের দুই থেকে আড়াই ফুট দূরে বাম পা বামে ঘুরিয়ে রাখতে হবে। ডান পা আগের ভঙ্গিতে থাকবে। 

৪. বাম পায়ের হাঁটু ভেঙে শরীরকে সোজা রেখে দাঁড়াতে হবে। ডান পা পিছনে এবং সোজা থাকবে। 

৫. শরীরকে পিছনের দিকে অর্ধ-চন্দ্রাসনের ভঙ্গিতে বাঁকিয়ে, পিছনের ডান হাত ডান পায়ের সামনের দিকে রাখতে হবে। 

৬. দশ সেকেন্ড এই অবস্থানে থেকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। 

৭. হাত ও পা বদল করে, পুনরায় আসনটি করতে হবে। 

৮. এরপর আসন ত্যাগ করে ২০ সেকেন্ড শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে। পুরো আসনটি আরও দুই বার করতে হবে।

 

বিপরীত বীরভদ্রাসনের উপকারিতা

 

১. মেরুদণ্ডের নরম হাড় মজবুত হয় এবং মেরুদণ্ডের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি পায়। 

২. পাঁজরের হাড়ের অসমতা দূর হয়। 

৩. তলপেটের মেদ কমে।

 

  • যোগাসন করলে আমাদের কী কী উপকার হয় তা দলে/ জোড়ায় আলোচনা করে এককভাবে লেখো।

 

ছক ১.১৭: যোগাসনের গুরুত্ব

যোগাসনের নাম

উপকারিতা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

  • তোমাদের ইয়োগা ক্লাবের উদ্যোগে যোগাসন মেলা বা ইয়োগা ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করো। স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের সেই মেলায় আমন্ত্রণ জানাও।
  • সবাইকে যোগাসনের উপকারিতা জানানো এবং সচেতনতা তৈরির জন্য যোগাসন সম্পর্কিত একটি স্লোগান তৈরি করো।

 

ছক ১.১৮: ইয়োগা ফেস্টিভ্যালের স্লোগান

 

  • ইয়োগা ফেস্টিভ্যাল সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখে রাখো।
  • প্রতিফলন জার্নালে ইয়োগা ফেস্টিভ্যাল ২০.....

 

তারিখ

যারা উপস্থিত ছিলো/ছিলেন:

 

 

 

 

 

 

যা যা হয়েছে:

 

 

 

 

 

 

 

এই ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে আমাদের অর্জন:

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added || updated By

Promotion

Promotion