মাদার তেরেজা ১৪ বছর বয়সে ঈশ্বর কর্তৃক আহবান পেয়ে সেবার কাজে নিয়োজিত হন। ভারত ও বাংলাদেশ অনাথ, দুঃখী, অবহেলিত, লাঞ্ছিত, পীড়িত, বঞ্চিত ও অসুস্থদের সেবায় বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। তাদের আশ্রয় দিয়েছেন। কুষ্ঠরোগীদের নিজে সেবা করেছেন। এভাবে অন্যের কল্যাণে নিজেকে বিলীন করে দিয়ে সারা বিশ্বের কাছে 'মাদার তেরেজা' উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল কেন ঈশ্বরের আহবানে সাড়া দিয়ে সেবাকাজ শুরু করেছিলেন? ব্যাখ্যা করো।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (Florence Nightingale) ছিলেন একজন ব্রিটিশ নার্স এবং সমাজ reformer যিনি আধুনিক নার্সিংয়ের পিত্রী হিসেবে পরিচিত। তাঁর সেবাকাজ শুরু করার পেছনে ঈশ্বরের আহবানে সাড়া দেওয়ার একটি গভীর প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য ছিল। এখানে ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের সেবাকাজ শুরু করার কিছু প্রধান কারণ তুলে ধরা হলো:
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল ছোটবেলা থেকেই মানবসেবার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তিনি জানতেন যে, অসুস্থ এবং দুর্বল মানুষের সেবা করা একটি মহান কাজ। তিনি মনে করতেন, অসুস্থদের সেবা করা একটি পবিত্র দায়িত্ব এবং এটি ঈশ্বরের ইচ্ছার অনুসরণ।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল স্বীকার করেন যে, তাঁর সেবাকাজ শুরু করার পেছনে ঈশ্বরের আহ্বান ছিল। তিনি একজন সেবিকা হতে চান এবং চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে মানুষের জীবনকে উন্নত করার লক্ষ্য রাখতেন। একবার তিনি বলেছিলেন, “আমি ঈশ্বরের সেবা করতে চাই। তাঁর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আমি আমার জীবন নিবেদন করতে প্রস্তুত।”
১৯শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কৃমীয় যুদ্ধের সময় ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল সামরিক হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি দেখে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হন। তিনি দেখেছিলেন যে, অনেক সৈন্য আহত ও অসুস্থ অবস্থায় যন্ত্রণার মধ্যে পড়ে আছেন, এবং সেখানে প্রয়োজনীয় সেবা নেই। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করে যে, তিনি সেবার কাজে নিযুক্ত হবেন।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্যই কাজ শুরু করেননি, বরং তিনি নার্সিং পেশার উন্নতি ও পদ্ধতি গড়ে তোলার জন্যও কাজ করেন। তিনি স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা এবং সঠিক চিকিৎসার গুরুত্ব সম্পর্কে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করেন। তাঁর কাজের মাধ্যমে নার্সিংকে একটি সম্মানজনক পেশায় রূপান্তরিত করেন।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের মতে, একজন সেবিকার কাজ শুধুমাত্র চিকিৎসা দেওয়া নয়, বরং রোগীদের প্রতি মানবিকতা ও সদিচ্ছা প্রদর্শন করা। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একজন সেবিকা মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁর দৃষ্টিতে, সেবা একটি পবিত্র কর্তব্য, যা ঈশ্বরের নির্দেশনা অনুযায়ী পালন করতে হয়।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল ঈশ্বরের আহবানে সাড়া দিয়ে সেবাকাজ শুরু করেছিলেন কারণ তিনি মানবতার প্রতি গভীর ভালোবাসা ও সহানুভূতি অনুভব করতেন। তাঁর কাজের মাধ্যমে তিনি অসুস্থ, দুর্বল ও হতদরিদ্র মানুষের সেবা করার লক্ষ্যে জীবন উৎসর্গ করেন। তাঁর এই প্রতিশ্রুতি ও সেবা আধুনিক নার্সিংয়ের ভিত্তি স্থাপন করে এবং মানবতার কল্যাণে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।