সৃজনশীল প্রশ্ন: ১
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে 'ক' ও 'খ' ব্যক্তি ঢাকার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে । তাঁরা ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কুশল বিনিময় করেন । এছাড়াও নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে মিটিং, মিছিল কর্মসূচি পালন করেন । নির্বাচনে ভোটারগণ ‘খ’ ব্যক্তিকে সৎ, যোগ্য মনে করে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে ।
রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য কী? ব্যাখ্যা কর ।
Created: 1 year ago |
Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago
No answer found.
Earn by contributing to add answer.
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল অপরিহার্য । আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা মূলত রাজনৈতিক দলেরই শাসন । জনগণের ভোটের মাধ্যমে গঠিত সরকার হচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার । আর রাজনৈতিক দল ছাড়া এই গণতান্ত্রিক সরকার গঠন সম্ভব নয়। এ অধ্যায় পাঠের মাধ্যমে আমরা রাজনৈতিক দল কী, গণতন্ত্রের সাথে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচনের সম্পর্ক, নির্বাচন কমিশন কী ইত্যাদি সম্পর্কে জানব ।
এ অধ্যায় পাঠের মাধ্যমে আমরা-
♦ রাজনৈতিক দলের ধারণা ও বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারব
♦ গণতন্ত্রের বিকাশে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা বিশ্লেষণ করতে পারব
♦ বাংলাদেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের বর্ণনা দিতে পারব
♦ গণতন্ত্র ও নির্বাচনের সম্পর্ক নিরূপণ করতে পারব
♦ বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি বর্ণনা করতে পারব ।
রাষ্ট্রের চরম ক্ষমতা হলো সার্বভৌমত্ব। এটি রাষ্ট্রের চরম, পরম ও সর্বচ্চো ক্ষমতা। সার্বভৌম ক্ষমতার মাধ্যমে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তা বিধান করা হয়। অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার বলেই রাষ্ট্র দেশের অভ্যন্তরে সকল প্রকার সংঘ ও প্রতিষ্ঠানের ওপর কর্তৃত্ব আরোপ ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। আবার বাহ্যিক ক্ষমতার বলে রাষ্ট্র সকল প্রকার বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে দেশকে মুক্ত রাখে।
‘ক’ রাষ্ট্র কর্তৃক ‘গ’ রাষ্ট্রকে দখল করে নেওয়া রাষ্ট্র সৃষ্টির যে মতবাদকে সমর্থন করে, তাকে শক্তির নীতি বা শক্তির রাজনীতি (Power Politics) বলা হয়। এই মতবাদে রাষ্ট্রের ক্ষমতা বা সামরিক শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে বলা হয় যে, একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র তার সামরিক ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে আক্রমণ বা দখল করতে পারে এবং তাদের সম্পদ ও ক্ষমতা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
শক্তির নীতির (Realpolitik) প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:
সামরিক শক্তি ও ক্ষমতার প্রয়োগ: এখানে শক্তিশালী রাষ্ট্র তার সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে দুর্বল রাষ্ট্রকে আক্রমণ ও দখল করে। এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক আইন বা নৈতিকতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় না।
আগ্রাসী সম্প্রসারণবাদ: শক্তিশালী রাষ্ট্রের লক্ষ্য থাকে তার ভূখণ্ড বা প্রভাব সম্প্রসারণ করা। ‘ক’ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, তারা ‘গ’ রাষ্ট্রকে আক্রমণ করে এবং দখল করে, যা আক্রমণাত্মক সম্প্রসারণবাদের উদাহরণ।
জাতীয় স্বার্থের প্রাধান্য: এই মতবাদের অনুসারীরা বিশ্বাস করে যে, একটি রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হলো তার জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করা, এবং প্রয়োজনে সেটি অর্জনের জন্য অন্য দেশকে দখল করা বা আক্রমণ করা যেতে পারে।
ব্যালেন্স অব পাওয়ার: শক্তির নীতি অনুসরণকারী রাষ্ট্র প্রায়ই ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়, যাতে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি পায় এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতা কমে যায়।
সুতরাং, 'ক' রাষ্ট্রের ‘গ’ রাষ্ট্রকে দখল করে নেওয়া এই শক্তির রাজনীতি বা আগ্রাসী সম্প্রসারণবাদের (Imperialism) একটি নিদর্শন, যেখানে একটি রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করে তার ভূখণ্ড এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করে।