মৌরি একদিন বাবার কাছে বায়না ধরে বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেড়াতে যাবে। বাবা একদিন ওকে নিয়ে বেড়াতে গেলে সে ভীষণ খুশি হয়। নানা জাতের ফুল-ফলের গাছের সমারোহ দেখে সে অভিভূত হয়ে যায়। দীর্ঘদিন সে যেসব ফুল-ফলের নাম শুনেছে সেগুলো আজ নিজ চোখে দেখে খুবই আনন্দিত হয়। অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয়- বাড়ির আঙিনায় ছোট্ট একটা বাগান করবে।
এই রচনায় হাস্যরসের মাধ্যমে বিভিন্ন ফুলের নাম, সে ফুলগুলোর গন্ধের তারতম্য, বর্ণের রকমফের অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন বঙ্কিমচন্দ্র । কখন কোন ফুল ফোটে সে পর্যবেক্ষণও এই রচনায় পাওয়া যায়। বিয়ে-অনুষ্ঠান বাঙালির জীবনে, বিশেষ করে বাড়ির শিশু-কিশোর ও প্রতিবেশীদের মধ্যে অতীব আনন্দ নিয়ে আসে। এই অনুষ্ঠানে বর-কনে কেন্দ্রে থাকলেও বর-কনের মাতা-পিতা, কনের পড়শি নারীরা নানা মাঙ্গলিক ব্রতে সম্পৃক্ত থাকেন, ঘটকও থাকেন বিশেষভাবে যুক্ত। বিয়ে অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকেন এমন নানা ব্যক্তির পরিবর্তে বিভিন্ন ফুলের উল্লেখ করে অসাধারণ দক্ষতায় বঙ্কিমচন্দ্র বাঙালির গার্হস্থ্য একটি অনুষ্ঠানকে আরো আনন্দদায়ক করে এখানে উপস্থাপন করেছেন। এখানে লেখক প্রকৃতিকে বাস্তব জীবনে উপস্থাপনে অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর এই রচনাভঙ্গি ও সাহিত্যবোধ বাংলা গদ্য সমাজ বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ‘ফুলের বিবাহ’ গদ্যটি কৌতূহলী ও পর্যবেক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সহায়ক ।