হৈমুর বাবা পেশায় অধ্যাপক। তাঁর একমাত্র মেয়েকে বৌ করে ঘরে তুলতে অনেকের আগ্রহ। তাদের বিশ্বাস হৈমুর বাবার সমস্ত সম্পত্তির মালিক হবে হবু বর। এ লড়াইয়ে বিজয়ী হলো অপূর্বদের পরিবার। শ্বশুরবাড়িতে বউয়ের মর্যাদা অশেষ। একসময় তারা জানতে পেল, অগাধ ধনসম্পত্তি দূরে থাক, মেয়ের বিয়েতে বাবা মোটা অঙ্কের ঋণ করেছেন। এতে শ্বশুরবাড়িতে হৈমুর প্রতি ভালোবাসা এবং তার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তির এতটুকু ঘাটতি কখনোই দেখা দেয়নি । বরং তাঁকে ঋণ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য এগিয়ে যায় হৈমুর শ্বশুর ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পগুচ্ছ থেকে 'দেনাপাওনা' গল্পটি সংকলিত হয়েছে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের রামসুন্দর পাঁচ পুত্র এবং এক কন্যার জনক। আদরের কন্যার প্রতাপশালী রায়বাহাদুরের একমাত্র পুত্রের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের সময় পাত্রের পিতা রায়বাহাদুর দশ হাজার টাকা নগদসহ অন্যান্য সামগ্রী বিয়ের যৌতুক হিসেবে দাবি করেন। কন্যার বাপ রাজি হন। বিয়ের সময় নগদ অর্থ বাকি পড়ে যায়। শুরু হয় পিতা ও কন্যার ওপর মানসিক নির্যাতন। নিরুপমার আত্মবিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আমাদের সমাজের এই ভয়াবহ ব্যাধির কাহিনি। ‘দেনাপাওনা গল্পে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অত্যন্ত সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে সমাজে প্রচলিত যৌতুক প্রথার মর্মান্তিক রূপ উপস্থাপন করেছেন। যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভিন্ন মত গড়ে তুলতে গল্পটি সহায়ক।