এই নিষ্ঠুর অভিযোগে গফুর যেন বারোধ হইয়া গেল। ক্ষণেক পরে ধীরে ধীরে কহিল, কাহন খানেক খড় এবার ভাগে পেয়েছিলাম। কিন্তু গেল সনের বকেয়া বলে কর্তামশায় সব ধরে রাখলেন? কেঁদে কেটে হাতে পায়ে পড়ে বললাম, বাবু মশাই, হাকিম তুমি, তোমার রাজত্ব ছেড়ে আর পালাব কোথায়? আমাকে পণদশেক বিচুলি না হয় দাও। চালে খড় নেই। বাপ বেটিতে থাকি, তাও না হয় তালপাখার গোঁজাগাঁজা দিয়ে এ বর্ষা কাটিয়ে দেব, কিন্তু না খেতে পেয়ে আমার মহেশ যে মরে যাবে।
উক্তিটিতে অভাগীর সংস্কার ও বিশ্বাসের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।
'অভাগীর স্বর্গ' গল্পের অভাগী সংস্কারে বিশ্বাসী মানুষ। ঠাকুরদাস মুখুয্যের সদ্যমৃত বর্ষীয়সী স্ত্রীকে শ্মশানে পুড়তে দেখে অভাগী, যেখানে মুখুয্যের স্ত্রী ছেলের হাতে আগুন পায়। হিন্দুধর্মের সংস্কার অনুসারে অভাগীর বিশ্বাস মুখুয্যের স্ত্রী স্বর্গে যাবে। তাই অভাগী মৃত্যুর পর ছেলের হাতের আগুন প্রত্যাশা করে; যেন সে নিজেও মুখুয্যের স্ত্রীর মতো স্বর্গে যেতে পারে।