Academy

একদল শিক্ষার্থী দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে শিক্ষা ভ্রমণে যায়। সেখানে তারা দেখতে পায় একটি নদীর স্রোতকে কাজে লাগিয়ে এক ধরনের শক্তি উৎপন্ন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উক্ত নদীটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

Created: 1 year ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

বাংলাদেশের ভৌগোলিক বিবরণ

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কর্কটক্রান্তি রেখা এ দেশের মধ্যভাগ দিরে অতিক্রম করেছে। এখানকার বিভিন্ন ধরনের ভূপ্রকৃতি, অনেক নদ-নদী, বঙ্গোপসাগরের অবস্থান এবং ঋতুভিত্তিক পরিবর্তিত জলবায়ু নানান বৈচিত্র্য আনয়ন করেছে।

বাংলাদেশের অবস্থানঃ এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণাংশে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ দেশ ২০° ৩৪' উত্তর অক্ষরেখা থেকে ২৬°৩৮´ উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে এবং ৮৮°০১′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখা থেকে ১২°৪১′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে।

আয়তন (Area) : বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্থল সীমানা চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই দু'দেশের মধ্যে পারস্পরিক ছিটমহল বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশের মোট ভূখন্ডে ১০,০৪১.২৫ একর জমি যোগ হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ১৯৯৬-৯৭ সালের তথ্য অনুসারে দেখা যায়, বাংলাদেশের নদী অঞ্চলের আয়তন ৯,৪০৫ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চলের আয়তন ২১,৬৫৭ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের দক্ষিণ অংশে উপকূল অঞ্চলে বিশাল এলাকা ক্রমান্বয়ে জেগে উঠেছে। ভবিষ্যতে দক্ষিণ অংশের প্রসার ঘটলে বাংলাদেশের আয়তন আরও বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল সমুদ্রসীমা ১২ নটিক্যাল মাইল, অর্থনৈতিক একান্ত অঞ্চল ২০০ নটিক্যাল মাইল এবং সামুদ্রিক মালিকানা মহীসোপানের শেষ সীমানা পর্যন্ত ।

  মিয়ানমার ও ভারতের দাবিকৃত সমদূরত্ব পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ১৩০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। তাতে বাংলাদেশ পেত ৫০,০০০ বর্গকিলোমিটারের কম জলসীমা। বঙ্গোপসাগরের জলসীমা নির্ধারণ ও সমুদ্র | সম্পদের উপর অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ১৪ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সালে মিয়ানমারের বিপক্ষে জার্মানির হামবুর্গে | অবস্থিত সমুদ্র আইন বিষয়ক ট্রাইব্যুনালে এবং ভারতের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত সালিশ ট্রাইব্যুনালে মামলা | দায়ের করে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গত ১৪ই মার্চ, ২০১২ সালে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মামলায় আন্তর্জাতিক আদালত বাংলাদেশের ন্যায্যভিত্তিক দাবির পক্ষে ঐতিহাসিক রায় পায়। এ রায়ের ফলে বাংলাদেশ প্রায় এক লক্ষ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি জলসীমা পেয়েছে। এ রায়ের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন্স দ্বীপকে উপকূলীয় বেজলাইন ধরে ১২ নটিক্যাল মাইল রাষ্ট্রাধীন | সমুদ্র এলাকা (Territorial sea) এবং ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল বা একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল (Exclusive economic zone) পেয়েছে। প্রাপ্ত এই জলরাশি ও তলদেশে এবং তার বাইরে মহীসোপান এলাকার সকল খনিজ সম্পদে বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। এই হিসেবে উপকূল থেকে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সাগরের তলদেশে বাংলাদেশের মহীসোপান রয়েছে (১ নটিক্যাল মাইল = ১.৮৫২ কিলোমিটার)। অর্থাৎ বাংলাদেশের | উপকূলীয় ভূখণ্ড সমুদ্রে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে, যার ভৌগোলিক নাম মহীসোপান ।

সীমা : বাংলাদেশের উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ও আসাম রাজ্য; পূর্বে আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্য ও মিয়ানমার; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা ৪,৭১১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের সীমারেখার দৈর্ঘ্য ৩,৭১৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমারেখার দৈর্ঘ্য ২৮০ কিলোমিটার এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের তটরেখার দৈর্ঘ্য ৭১৬ কিলোমিটার (চিত্র ১০.১)। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে হাড়িয়াভাঙ্গা নদী এবং দক্ষিণ- পূর্বে নাফ নদী ভারত ও মিয়ানমারের সীমানায় অবস্থিত।

কাজ : নিচের ছকটি জোড়া দলে পূরণ কর।

 বাংলাদেশের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাগত

অবস্থান কত?

বাংলাদেশের আয়তন কত?

অর্থনৈতিক একান্ত অঞ্চলের ব্যাপ্তি কত?

টেরিটোরিয়াল সমুদ্রসীমার ব্যাপ্তি কত?   বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক সঙ্গে মালিকানা বাংলাদেশের  তটরেখার দৈর্ঘ্য কত?
 
 সামুদ্রিক মালিকানা মহীসোপানের কোন অংশ পর্যন্ত 

 

         

 

Content added By
Promotion