যখনই আমরা কোনো একটা ট্রেডমার্কের নাম শুনি বা চোখে দেখি তখনই প্রতিষ্ঠান ও পণ্য সম্পর্কে যে একটা ধারণার জন্ম নেয় তা নিঃসন্দেহে অনেক বড় বিষয় । একটা ট্রেডমার্ক থেকে এর মালিক, বিক্রেতা ও গ্রাহক সবাই উপকৃত হয়ে থাকে । নিম্নে তা তুলে ধরা হলো:
১. মালিকের সুবিধা (Advantages of owners ) : একটা নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের মালিকের বড় সুবিধা হলো এটি তার প্রতিষ্ঠানের অদৃশ্যমান একটা মূল্যবান সম্পদ। যেই প্রতিষ্ঠান কোনো নাম, প্রতীক বা চিহ্নকে জনপ্রিয় করেছে দীর্ঘকাল তার সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে তার একচ্ছত্র অধিকার থাকবে-এটাই স্বাভাবিক । ট্রেডমার্ক বা ব্রান্ড একটা প্রতিষ্ঠিত হলে তাকে ব্যবহার করে এর মালিক দ্রুত নতুন নতুন পণ্য বাজারে এনে এ নামের সুফল ভোগ করতে পারে । স্কয়ার কোম্পানি তাদের স্কয়ার নাম ব্যবহার করে যে পণ্যই বাজারে আনুক সাথে সাথে তার একটা ক্রেতাশ্রেণি লাভ করবে। এভাবে ব্রাক আড়ং নামে পোশাক, হস্তজাত সামগ্রী, দুধ ইত্যাদি বাজারজাত করছে। আড়ং ট্রেডমার্ক জনপ্রিয় হওয়ায় তারা এ মার্ক ব্যবহার করে নতুন ব্যবসায়ে হাত দিলে তাতেও দ্রুত সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হবে।
২. ক্রেতা ও ভোক্তাদের সুবিধা (Advantages of customers and consumers) : ট্রেডমার্ক বা ব্রান্ড নামে পণ্য ক্রয় করতে যেয়ে ক্রেতা বা ভোক্তারও অনেক সুবিধা পায় । এরূপ মার্কযুক্ত কোনো পণ্যের মান, মূল্য, স্বাদ, গুণ ইত্যাদি সম্পর্কে ক্রেতাদের পূর্ব ধারণা থাকায় তারা পূর্বসিদ্ধান্ত নিয়ে সহজেই এরূপ পণ্য সংগ্রহ করতে পারে । ব্রান্ড প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পূর্ব ধারণা থাকলে ক্রয় সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়। এ ছাড়া ট্রেডমার্কযুক্ত কোনো ব্রান্ড পণ্য কিনলে উক্ত পণ্য যদি নষ্ট, খারাপ বা ব্যবহার অযোগ্য হয় তবে ক্রেতা সেক্ষেত্রে আইনগত সুবিধাও। পেয়ে থাকে । বিভিন্ন ট্রেডমার্কের পণ্য বাজারে থাকায় একজন ক্রেতা স্বনামধন্য পণ্যের ব্রান্ড ব্যবহার করে বা স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য ব্যবহার করে নিজের পৃথক মর্যাদাও প্রতিষ্ঠা করতে পারে ।
৩. বিক্রেতাদের সুবিধা (Advantages of sellers): ট্রেডমার্কযুক্ত পণ্য বিক্রয়ে বিক্রেতারাও বিশেষ সুবিধা ভোগ করে । এরূপ পণ্য বিক্রয়ে ক্রেতাদের সাথে তাদেরকে অযথা বাক্য বিনিময় বা দরকষাকষি করতে হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেতা তার পছন্দের ব্রাণ্ডের পণ্য নাম, পণ্যের মূল্য ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত থাকায় সে দোকানে যেয়ে তার নির্দিষ্ট ব্রান্ড দেখেই তা থেকে পণ্য ক্রয় করে। মোবাইল ফোন সেট উৎপাদনকারী ব্রান্ড NOKIA, SAMSUNG, SYMPHONY কোনটা একজন গ্রাহক কিনবে সে তা পূর্ব থেকেই সিদ্ধান্ত নেয়। তাই বিক্রেতাকে এ নিয়ে কোনো কথা বলারই তেমন প্রয়োজন পড়ে না । ব্রান্ড পণ্য বাজারে সুখ্যাতি লাভ করলে পরিবেশক, ডিলারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শো-রুম খুলে সহজেই তা বিক্রয় করতে পারে ।