সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় কারবারের প্রচলন বেশি। ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় প্রায় ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়। তার পরেও রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ,সম্পদসমূহের সদ্ব্যবহার ও সুষম বন্টনের ক্ষেত্রে অপিরিসীম অবদান রেখেছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় নিম্নোক্তভাবে আমাদের দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বভিত্তিক ব্যবসায় (PPP) বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে প্রায় ৫০ টি প্রকল্প এই ব্যবসায়ের মাধ্যমে সম্পাদিত হয় যার মধ্যে ছিল টেলিযোগাযোগ, বন্দর নির্মাণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন। সরকারও তাদের বাজেট পরিকল্পনায় সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বভিত্তিক ব্যবসায়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।
সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বভিত্তিক (PPP) ব্যবসা বলতে কোন সরকারি সেবা বা বেসরকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে বুঝায় যেটি অর্থায়ন ও পরিকল্পনা করে সরকার এবং এক বা একাধিক প্রাইভেট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বভিত্তিক ব্যবসায় বলতে বুঝায় পাবলিক কর্তৃপক্ষ এবং প্রাইভেট পক্ষের মধ্যে এমন একটি চুক্তি যেখানে বেসরকারি পক্ষ কোন পাবলিক সেবা দেয় বা প্রকল্পের যাবতীয় আর্থিক এবং কারিগরী ঝুঁকি বহন করে। কিছু কিছু সরকারী বেসরকারী অংশীদারিত্ব ভিত্তিক ব্যবসায়ে সেবা ব্যবহারের ব্যয় শুধূমাত্র এর ব্যবহারকারীরা বহন করে কোন কর প্রদানকারী বহন করে না। অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী মূলধন বিনিয়োগ বেসরকারি পক্ষ বহন করে এবং সেবা সরবরাহের ব্যয় সম্পূর্ণ বা আংশিক সরকার বহন করে। অনেক সময় সরকার বেসরকারি বিনিয়োগকারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এককালীন অনুদান প্রদান করে মূলধন ভর্তুকী হিসাবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে সরকার মুনাফা জাতীয় ভর্তুকী প্রদান করে সাহায্য করে থাকে। মুনাফা জাতীয় ভর্তুকী বলতে একটি নির্দিষ্ট সময় কর সুবিধা প্রদান করা হয়। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে GDP এর লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করেছে ৮% – ১০% । এ লক্ষ অর্জনের জন্য সরকার শক্তি উৎপাদন, জ্বালানি, বন্দর, যোগাযোগ, খাবার পানি, বর্জ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী খুঁজছে। কারণ এ প্রকল্পগুলো অত্যধিক ব্যয়বহুল। এগুলো সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় । তাই সরকারি-বেসরকারিভিত্তিক (PPP) ব্যবসায় প্রয়োজন।