সরলরৈখিক সংগঠনের বৈশিষ্ট্য

ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র - সরলরৈখিক সংগঠনের বৈশিষ্ট্য

বৃহদায়তন ও জটিল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জন্য সরলরৈখিক সংগঠন খুব উপযুক্ত নয় । তথাপি প্রাচীনতম সংগঠন পদ্ধতি হিসেবে এরূপ সংগঠন কাঠামো এমন কিছু বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যার ফলে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে আজ পর্যন্ত এটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন কাঠামো হিসেবেই বিবেচিত । নিম্নে এর বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলো :

 ১. সরল ও সহজবোধ্য সংগঠন (Simple and easily comprehend organization): সরলরৈখিক সংগঠন একটি সরল ও সহজবোধ্য সংগঠন । এরূপ কাঠামোতে প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যক্তি ও বিভাগের অবস্থান, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় । এ ছাড়া এরূপ সংগঠনে সহযোগী বা পদস্থ কর্মী (Staff assistant) না থাকায় কার্যক্ষেত্রে কোনো জটিলতা থাকে না ।

২. কর্তৃত্বের প্রকৃতি (Nature of authority): এরূপ সংগঠনে ঊর্ধ্বতন তার অব্যবহিত অধস্তনের ওপর অধিকমাত্রায় কর্তৃত্বশালী থাকে । ক্ষেত্রবিশেষে এরূপ ঊর্ধ্বতন তার অধীনস্থ কর্মী বা নির্বাহীদের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হিসেবে গণ্য হয় । আর যে কারণে অধস্তনরা বিনা দ্বিধায় ঊর্ধ্বতনের নির্দেশ মান্য করে ও জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে ।

৩. কর্তৃত্বের প্রবাহ (Flow of authority): এ ধরনের সংগঠন কাঠামোতে কর্তৃত্বরেখা ওপর থেকে নিচের দিকে আড়াআড়ি বা সরলরেখার আকারে নেমে আসে । এতে কর্তৃত্বরেখার নিচের দিকে কর্মরত নির্বাহীর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা সর্বাপেক্ষা কম হয় এবং প্রতিটা উপরিস্তরে তা ক্রমানুযায়ী বাড়তে থাকে ।

৪. স্বয়ংসম্পূর্ণ বিভাগ (Self-sufficient department): এরূপ সংগঠন কাঠামোতে সংগঠনের কাজকে প্রয়োজনমাফিক বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটা বিভাগের জন্য একজন বিভগীয় প্রধান নিয়োজিত থাকে । উক্ত প্রধান তার বিভাগের ওপর সর্বময় কর্তৃত্ব প্রয়োগ করেন । এরূপ প্রতিটা বিভাগ অন্য বিভাগ থেকে পৃথক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকে ।

৫. আন্তঃবিভাগীয় যোগাযোগ (Inter-departmental communication): এ ধরনের সংগঠন কাঠামোতে বিভাগগুলো একজন সাধারণ ব্যবস্থাপক বা মহাব্যবস্থাপকের অধীনে এবং উপবিভাগগুলো বিভাগীয় ব্যবস্থাপকের অধীনে কর্মরত থাকে । ফলে আন্তঃবিভাগীয় যোগাযোগ ঊর্ধ্বতনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় ।

৬. ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা (Individuality): এক্ষেত্রে প্রত্যেক বিভাগীয় নির্বাহী তার বিভাগে একক কর্তৃত্বের অধিকারী হওয়ায় বিভাগের সকল দায়িত্বও তার ওপরই বর্তে। তার অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে দায়িত্ব পালনের মতো কোনো সহযোগী না থাকায় পুরো বিভাগের ভালো-মন্দ একক ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে ।

৭. প্রয়োগ ক্ষেত্র (Field of application): সহজ ও সরল প্রকৃতির এরূপ সংগঠন জটিল ও বৃহদায়তন কার্য পরিবেশে সাফল্যের সাথে ব্যবহার করা যায় না । তাই জটিলতামুক্ত ও সীমাবদ্ধ আয়তন বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এরূপ সংগঠন অধিক উপযোগী ।

Content added By
Promotion