চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ ‘ফুল্লরার বারোমাস্যা । প্রতিটি মঙ্গলকাব্যকে বেশ কয়েকটি পালায় বিভক্ত করে গীত ও বাদ্য সহযোগে পরিবেশন করা হতো। এক মঙ্গলবারে কাহিনি আরম্ভ করে সমাপ্ত করা হতো আরেক মঙ্গলবারে । এ কারণে কাব্যগুলো হতো দীর্ঘ পরিসরের। চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের মূল কাহিনি আবর্তিত হয়েছে ফুল্লরা ও কালকেতু চরিত্রকে ঘিরে। পশু শিকার ও মাংস বিক্রয়ের মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করে তারা; অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য নেই বললেই চলে। ‘ফুল্লরার বারমাস্যা'য় মুকুন্দরাম চক্রবর্তী বারো মাসের পটভূমিতে প্রকৃতির পরিবর্তন এবং ফুল্লরার দুঃখের প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করেছেন। ফুল্লরার কণ্ঠস্বরে শোনা যাচ্ছে তার অভাব, দারিদ্র্যময় গার্হস্থ্য জীবনের বর্ণনা। উল্লেখ্য যে, মধ্যযুগের বাংলা কাব্যে ‘বারোমাসী' একটি বিশেষ কাব্যরীতি, যেখানে সংযোজিত হতো জীবনযাপন অথবা নারীর বিরহের বারোমাসভিত্তিক বিবরণ । বারোমাসী রচনায় মুকুন্দরাম চক্রবর্তী বাস্তবানুগ সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ-শক্তির পরিচয় দিয়েছেন।
আরও দেখুন...