নীচে কতকগুলি সমদ্বিপৃষ্ঠ পাতার অন্তর্গঠনের বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো। যেটি সঠিক নয় -

Created: 2 years ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

পত্ররন্ধ্র বা স্টোমাটা (Stomata)

উদ্ভিদের সবুজ যাবতীয় অংশে বিশেষ করে কচি কান্ড ও পাতার ত্বকে পত্ররন্ধ (stomata) নামের অতি ক্ষুদ্র বস্ত থাকে। বিষমপৃষ্ঠ (dorsiventral) পাতার নিম্নত্বকে এবং সমাঙ্গপৃষ্ঠ (isobilateral) পাতার নিম্ন ও ঊর্ধ্বত্ত্বকে গ্রন্তে পাওয়া যায়। পানিতে ভাসমান পাতার উপত্তিকে পররক্তে থাকে। পত্ররন্ধের কেন্দ্রে একটি ছিদ্র বা বন্ধু থাকে একে র ছিদ্র (stomatal pore) বলে। দুটি অর্ধচন্দ্রাকার রক্ষীকোষ (guard cell) দিয়ে প্রতিটি পত্ররন্ত পরিবেস্টিত থাকে। রক্ষীকোষের মধ্যে ঘন সাইটোপ্লাজম, একটি নিউক্লিয়াস এবং ক্লোরোপ্লাস্টিড বিদ্যমান। পত্ররন্ধের নিচে থাকে একটি বড় বায়ুপূর্ণ স্থান । এটি উপ-পত্ররন্দ্রীয় গহ্বর (sub-stomatal cavity)। রক্ষীকোষের চারদিকে অবস্থিত সাধারণ ত্বকীয় কোষ থেকে একটু ভিন্ন আকার-আকৃতির সহকারি কোষ থাকে। সহকারি কোষগুলোসহ প্রতিটি পরবন্ধকে পত্ররন্ধ প্লেক্স (stomatal complex) বলা হয়। কিছু উদ্ভিদে সহকারী কোষ থাকেনা, যেমন, শশা, কুমড়া, কিছু অর্কিড। রক্ষীকোষ দুটির গঠনশৈলী একটু বিচিত্র ধরনের। অর্ধ চন্দ্রাকার এ কোষদুটির প্রাচীরের পুরুত্ব সবদিকে একরকম নয়। রক্তের দিকের প্রাচীরটি অত্যন্ত পুরু কিন্তু বিভাগের প্রাচীর পাতলা। অন্তঃঅভিস্রবণের ফলে তাঁকোষ পানি শোষণ করে স্ফীত হলে পাতা চোরের দিকের অতিরিক্ত চাপের টানে পুরু প্রাচীরটি কিছুটা বেঁকে বন্ধ উন্মুক্ত করে দেয়। উদ্ভিদের প্রজাতিভেদে পাতার ১ বর্গ সেঃ মিঃ এলাকায় রাষ্ট্রের সংখ্যা প্রায় ১০০০ থেকে ৬০০০০।

পত্ররন্ধের প্রকারভেদ (Types of foliage)

১. Diacytic : স্টোমা দুটি সাবসিডিয়ারি কোষ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। কোষ দু’টি রক্ষীকোষের সাথে সমকোণে অবস্থিত।

২. Paracytic : স্টোমা দুটি সাবসিডিয়ারি কোষ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। কোষ দুটি রক্ষীকোষে সমান্তরালভাবে অবস্থিত।

৩. Anisocytic : স্টোমা তিনটি সাবসিডিয়ারি কোষ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে, তার মধ্যে একটি কোষ ছোট।

8. Tetracytic : স্টোমা চারটি সাবসিডিয়ারি কোষ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।

৫. Actinocytic : স্টোমা অনেকগুলো রেডিয়েলি লম্বা কোষ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।

৬. Anomocytic : স্টোমাকে পরিবেষ্টনকারী কোষসমূহ সাধারণ ত্বকীয় কোষ থেকে পৃথকযোগ্য নয়।


পত্ররন্ধ্রের কাজঃ

১. পত্ররন্ধ্র সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসন প্রক্রিয়ার সময় গ্যাস বিনিময় করে।

২. এর রক্ষাকোষ খাদ্য তৈরি করে এবং রক্তকে নিয়ন্ত্রণ করে।

৩. প্রস্বেদনের সময় পানি জলীয় বাষ্পাকারে এর ভিতর দিয়ে নির্গত হয়।

৪. পুকাশিত পত্ররন্ধ্র প্রস্বেদনের হার হ্রাস করে।

৫. পরবন্ধে উদ্ভিদ দেহ হতে পানি ও অন্যান্য তরল পদার্থ নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করে।


পত্ররন্ধ্র উন্মুক্ত ও বন্ধের কৌশল (Mechanism of Stomatal Opening and Closing):

পত্ররন্ধের খোলা ও বন্ধ হওয়া নির্ভর করে রক্ষীকোষের পরিবর্তনের উপর অর্থাৎ রক্ষীকোষের স্ফীতি হলে পত্ররন্ধ্র খুলে যাবে এবং রক্ষীকোষ শিথিল হলে পত্ররন্ধ্র বন্ধ হয়ে যাবে। পত্ররন্ধ্রের ছিদ্রের আয়তন নির্ভর করবে রক্ষীকোষ কতটা স্ফীত হয়েছে তার উপর। স্ফীতি হওয়ার ফলে রক্ষীকোষের বাইরের পাতলা প্রাচীরের দিকে অতিরিক্ত চাপের টানে ভিতরেরপুরু প্রাচীরটি কিছুটা বেঁকে যায়। ভিতরের পুরু প্রাচীরটি যেহেতু স্থিতিস্থাপক নয় প্রাচীরটি তাই, অবতল (concave) আকার হয়ে যায় ফলে পত্ররন্ধ্রটির আয়তন বাড়তে থাকে এবং পত্ররন্ধ্রটি খুলে যায়। বিজ্ঞানী স্যায়েরি (Sayre, 1926)-র মতে, শ্বেতসার ও চিনির উক্ত আন্তঃপরিবর্তনটি কোষরসের pH এর জন্য ঘটে থাকে এবং তাঁর মতে, কোষরসের pH এর উঠা-নামাই পত্ররন্ধ্রের খোলা ও বন্ধ হওয়ার জন্য দায়ী। উচ্চ pH (৭-এর কাছাকাছি) পত্ররন্ধ্র খুলতে সাহায্য করে এবং নিম্ন pH (৫-এর কাছাকাছি) পত্ররন্ধ্র বন্ধ হতে সাহায্য করে। রাত্রিকালে আলো না থাকাতে সালোকসংশ্লেষণ বন্ধ থাকে কিন্তু শাসন চলতে থাকে। শ্বসনের ফলে সৃষ্ট CO, রক্ষীকোষের কোষ রসে দ্রবীভূত হয়ে কার্বনিক এসিডের সৃষ্টি করায় কমে যায়।

Content added || updated By
Promotion