শৈবাল বিষয়ে অধ্যয়ন করা হয়-
শৈবালঃ
শৈবাল Algae; ল্যাটিন algae = সামুদ্রিক আগাছা অত্যন্ত সরল প্রকৃতির সালোকসংশ্লেষণকারী, ভাস্কুলার টিস্যুবিহীন, সমাঙ্গদেহী জলজ উদ্ভিদ যাদের জননাঙ্গ এককোষী এবং নিষেকের পর কোন ভ্রূণ গঠিত হয়না তাদের শৈবাল বলে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০,০০০ প্রজাতির শৈবাল গছে বলে ধারণা করা হয়। বিভিন্ন পরিবেশে শৈবাল জন্মায়। এরা জলজ, স্থলজ বা পরাশ্রয়ী হতে পারে । জলজ বালের সংখ্যাই সর্বাধিক। জলজ শৈবালেরা পুকুর, ডোবা, হ্রদ প্রভৃতির স্থির পানিতে অথবা নদী, সমুদ্র প্রভৃতির বাহমান পানিতেও জন্মায় । সম্পূর্ণ ভাসমান শৈবালকে ফাইটোপ্লাংকটন বলে।(জলাশয়ের পানির নিচে মাটিতে আবদ্ধ হয় যে শৈবাল জন্মায় তাদেরকে বলা হয় বেনথিক শৈবাল।) (পাথরের গায়ে জন্মানো শৈবালকে লিখোফাইট বলে) (উচ্চ শ্রেণির জীবের টিস্যুভান্তরে জন্মানো শৈবালকে বলা হয় এন্ডোফাইট।) এপিফাইট হিসেবে কিছু শৈবাল অন্য শৈবালের গায়েও জন্মায়। শৈবাল বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা করাকে ফাইকোলজি (Phycology) বলে।
শৈবালের মুখ্য বৈশিষ্ট্য (Salient features of Algae):
* শৈবালের দেহ সমাঙ্গদেহী বা থ্যালয়েড (thalloid) অর্থাৎ দেহ মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভেদিত নয় ।
* দেহ গ্যামেটোফাইটিক (gametophytic), হ্যাপ্লয়েড (n) এবং আলোর উপর নির্ভরশীল ।
* কোষে ক্লোরোফিল থাকায় দেখতে সবুজ ও স্বভাবে স্বভোজী।
* কোষপ্রাচীর সেলুলোজ ও পেকটিন সমন্বয়ে নির্মিত। এছাড়াও পিচ্ছিল মিউসিলেজ বিদ্যমান।
* অধিকাংশ শৈবালের সঞ্চিত খাদ্য কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা; কিছু সদস্যে চর্বি, অ্যালকোহল বা তৈল সঞ্চিত থাকে।
* এদের দেহে পরিবহন টিস্যু (vascular tissue) অনুপস্থিত।
* শৈবালের স্পোরাঞ্জিয়াম (sporangium) সরল ও এককোষী এবং এর মধ্যে উৎপন্ন সচল বা নিশ্চল স্পোরের সাহায্যে অযৌন জনন ঘটে।
* যৌন জনন অঙ্গ সরল ও এককোষী এবং যৌন জনন আইসোগ্যামাস (isogamous), অ্যানআইসোগ্যামস (anisogamous) ও উগ্যামাস (oogamous) প্রকৃতির।
* জনন অঙ্গ সাধারণত কোন বন্ধ্যা আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে না (ব্যতিক্রম- Chara)।
* জাইগোট কোন ক্ষেত্রেই ভ্রূণে পরিণত হয় না ।
* সাধারণত সুস্পষ্ট জনুক্রম অনুপস্থিত।