Email:
Password:
Remember Me
Forgot your password?
Log in
New to Satt Academy?
Create an account
or
Log in with Google Account
Home
Ask Question?
Business Account
Exam
Exam List
Exam Result
Category
1-12 Class
Board Exam
Admission
Job Solution
Skill Development
Book Collection
Video Content
Blog Content
Question
Ask Question?
Current Affairs
All MCQ Question
All Written Question
Upload Question
General
Study Plan
Hand Note
Notice | News
Other
FAQ
Point
Package
Feedback
Home
Academy
Admission
Job Assistant
Current Affairs
Skill
Forum
Blog
Package
Sign In
Unauthenticate
Guest
example@gmail.com
Login
Description
Home
Edit Description
Back
Edit Description
Fill up the form and submit
Question
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা কে?
মহাত্মা গান্ধী
নেতাজী সুভাস চন্দ্র
লর্ড বেন্টিংক
স্যার অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম
ANSWER : 4
Descrption
<p style = "text - align: justify;">ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কতিপয় জাতীয় নেতার উদ্যোগে ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। ক্রমে এটি সম্প্রসারিত হয়ে বিশ শতকের গোড়ার দিক থেকে একটি জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। বড়লাট রিপনের আমলে ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে অ্যাংলো - ইন্ডিয়ানদের আন্দোলনকালে প্রতীয়মান হয় যে, ব্রিটিশ শাসকদের সঙ্গে প্রতিনিধিত্বশীল আলোচনার জন্য ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত ভারতীয় রাজনীতিবিদদের প্রয়োজন একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক সংগঠনের। এমন একটি প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির উদ্যোগ নেন একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ আই.সি.এস অফিসার এ.ও হিউম। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যার মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত উচ্চশ্রেণীর ভারতীয়রা ব্রিটিশ শাসন সম্পর্কে তাদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ প্রকাশ করতে পারে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী যিনি ১৮৭৬ সালে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এবং ১৮৮৩ সালে ন্যাশনাল কনফারেন্স গঠন করেছিলেন। হিউমের উদ্যোগের পেছনে বড়লাট ডাফরিনের সমর্থন ছিল, কারণ তিনি চেয়েছিলেন এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা ব্রিটিশের ‘অনুগত বিরোধী দল’ হিসেবে কাজ করতে পারে। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যারিস্টার এবং ব্রিটিশ শাসনের উৎসাহী সমর্থক ডব্লিউ.সি.বানার্জীকে ১৮৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বোম্বাইতে অনুষ্ঠেয় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী সম্মেলনের প্রথম সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীকে ব্রিটিশ শাসকরা জানতেন একজন উগ্রপন্থী রাজনীতিক হিসেবে। তাই তিনি প্রথম সম্মেলনে যোগদান করেন নি, পাছে তার উপস্থিতি নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে তিনি ১৮৮৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সংগঠনের দ্বিতীয় সম্মেলনে যোগদান করেন।</p> <p style = "text - align: justify;">কংগ্রেস তখনও একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে নি; এর কোনো সংজ্ঞায়িত মতবাদ, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ও অর্থানুকূল্য ছিল না এবং সদস্যভুক্তিরও ছিল না কোনো নিয়মকানুন। এটি ছিল প্রাদেশিক রাজনীতিতে প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির একটি সম্মিলন এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটি জাতীয় মঞ্চ সৃষ্টি করা। যেসকল নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি এই সংগঠনে যোগ দেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন দাদাভাই নওরোজী, ফিরোজ শাহ মেহতা, বদরুদ্দিন তৈয়বজী এবং কে.টি তেলং। তখন সংগঠনটির উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষিত ভারতীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার সৃষ্টি এবং নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা।</p> <p style = "text - align: justify;">প্রথমদিকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বৎসর ব্যাপী কোনো কার্যক্রম ছিল না। নেতারা শুধু বার্ষিক সম্মেলনে যোগদান করে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। কতিপয় জমিদার এবং দেশীয় রাজা এই প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন করতেন। যেসব প্রতিনিধি সম্মেলনে আসতেন তাঁরা প্রায় সবাই ছিলেন উচ্চশ্রেণীর হিন্দু এবং প্রধানত আইনজীবী। তাঁরা ছিলেন ব্রিটিশ শাসনের প্রতি অনুরক্ত এবং তাঁরা বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিবর্তনের পক্ষপাতি ছিলেন না। তাঁরা সরকারের শাসনব্যবস্থায় এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে কথা বলার কিছু সুযোগ চেয়েছিলেন। ১৯০৫ সাল পর্যন্ত এসব নরমপন্থী নেতা যে রাজনৈতিক আন্দোলনের ধারা চালু করেন, তা ছিল মূলত ‘আবেদন - নিবেদন - প্রতিবাদ’ - এর অনুশীলন।</p> <p style = "text - align: justify;">গোড়ার দিকে মুসলমানরা খুব বেশি সংখ্যায় কংগ্রেসের প্রতি আকৃষ্ট হয় নি। মুসলমানদের মধ্যে একাত্মতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্যার সৈয়দ আহমদ তাদের কংগ্রেস থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। ফিরোজ শাহ মেহতা কংগ্রেসকে সাধারণ জনগণের সংগঠন মনে করেন নি। বরিশালের জননেতা অশ্বিনী দত্ত কংগ্রেসের বার্ষিক সম্মেলনকে ‘তিন দিনের অপেরা’ বলে আখ্যায়িত করেন। কংগ্রেসের মধ্যপন্থী নেতারা প্রতিক্রিয়াশীল ছিলেন না; তবে তাঁরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, ভারতের জন্য ব্রিটিশ শাসন একটি সুব্যবস্থা এবং আলাপ - আলোচনার মাধ্যমে এর উন্নতি সম্ভব। তারা বাংলা, পাঞ্জাব ও বোম্বাইয়ের কিছুসংখ্যক লোকের সন্ত্রাসবাদী ও বিপ্লবী কার্যক্রম থেকে নিজেদের দূরে রাখেন।</p> <p style = "text - align: justify;">১৯০৫ সালে বড়লাট কার্জনের বঙ্গভঙ্গের ফলে বাংলার হিন্দু নেতাদের মধ্যে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং এর ফলে অরবিন্দ ঘোষ, বিপিন চন্দ্র পাল, বাল গঙ্গাধর তিলক এবং লালা লাজপত রায়ের যুদ্ধংদেহী রাজনীতির সুত্রপাত হয়। স্বদেশী আন্দোলন এবং ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের কার্যক্রমের ফলে কংগ্রেসের মধ্যেও একটি উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়। ১৯০৭ সালে কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশনে মধ্যপন্থী ও উগ্রপন্থী নেতারা প্রকাশ্যে সংঘাতে লিপ্ত হন এবং এর ফলে কংগ্রেস দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত আক্রোশের ফলে জাতীয়, প্রাদেশিক ও স্থানীয় পর্যায়ে দলাদলি সৃষ্টি হয়। এদিকে ১৯০৬ সালে মুসলমানদের স্বার্থরক্ষার লক্ষ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে মুসলিম লীগ গঠিত হয়। ১৯১৪ সালে প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের সঙ্গে পরামর্শ না করেই ভারতকে যুদ্ধে সম্পৃক্ত করে। এর প্রতিবাদে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নেতারা একাত্মতা বোধ করেন এবং ১৯১৬ সালে স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে জোরদার করার জন্য লক্ষ্ণৌ চুক্তি সম্পাদন করেন। অ্যানি বেসান্ত এবং বি. জি তিলক পরিচালিত হোম রুল লীগের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং লক্ষ্ণৌ চুক্তির ফলে ব্রিটিশ সরকার ১৯১৭ সালে ভারতে ক্রমান্বয়ে স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তনের অঙ্গীকার করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে অমৃতসর শহরের জালিয়ানওয়ালা বাগে শত শত লোককে গুলি করে হত্যার ফলে হঠাৎ করেই রাজনীতি কঠিন সংকটের দিকে মোড় নেয়।</p> <p style = "text - align: justify;">বিশ শতকের বিশের দশক নাগাদ ব্রিটিশদের সদুদ্দেশ্যের উপর ভারতীয়দের আস্থা উবে যায়। তখন থেকে গণভিত্তিক রাজনীতির উদ্ভব হয় এবং একজন নতুন নেতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী দেশে ফিরে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি অহিংস ‘সত্যাগ্রহ’ আন্দোলন করে বেশ সফল হয়েছিলেন এবং এখন তিনি সেই পন্থায় ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন চালাতে প্রস্তুত হন। তিনি কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ এবং বিপ্লবীদের সমর্থন লাভ করেন, কারণ তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, এক বছরের মধ্যেই ‘স্বরাজ’ হাসিল করতে পারবেন। তুরস্কের খিলাফত পতনে ক্ষুব্ধ মুসলমানদের তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে হিন্দুদের সঙ্গে এক কাতারে টেনে আনেন।</p> <p style = "text - align: justify;">১৯২০ সালে গান্ধী তাঁর অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন। প্রকৃতপক্ষে এটিই ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম জাতীয় ও গণভিত্তিক রাজনৈতিক আন্দোলন। এতদিন কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ পুরনো ধাঁচে যে আন্দোলন করে আসছিল, এটি ছিল তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং এ আন্দোলনে সকল অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। গান্ধীর এ আন্দোলনের ফলে ভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের অবস্থানের উন্নতি হয় এবং এর ফলে বিশের দশকে কংগ্রেস জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক একটি অগ্রগামী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। গান্ধী ছাড়া কংগ্রেসের অপরাপর নেতা ছিলেন মতিলাল নেহেরু, মদন মোহন মালব্য এবং চিত্তরঞ্জন দাস। পরবর্তী পর্যায়ে যেসব নতুন রাজনৈতিক নেতার আবির্ভাব ঘটে, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রাজা গোপালাচারী, রাজেন্দ্র প্রসাদ, জওহরলাল নেহেরু, আবুল কালাম আজাদ ও সরদার বল্লভভাই প্যাটেল। সুভাষচন্দ্র বসু প্রথমে এ গ্রুপেই ছিলেন, কিন্তু পরে গান্ধীর নেতৃত্ব মানতে অনীহা প্রকাশ করেন। ১৯২৯ সালে কংগ্রেস ভারতের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতার লক্ষ্য স্থির করে, কিন্তু এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশদের কাছ থেকে আরও অধিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করা। অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০ - ২২) এবং আইন অমান্য আন্দোলনের (১৯৩০ - ৩৪) মাধ্যমে গান্ধী কোটি কোটি মানুষের হূদয় জয় করতে সক্ষম হন এবং কংগ্রেসকে একটি সত্যিকার গণভিত্তিক রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।</p> <p style = "text - align: justify;">এসময় ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে লন্ডনে তিনটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে এবং সেখানে ‘সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ’ - এর মাধ্যমে দেশের প্রাদেশিক বিধানসভাগুলোতে বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং তফশিলি সম্প্রদায়ের জন্য আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। গান্ধী এর প্রতিবাদে আমৃত্যু অনশন শুরু করেন। কিন্তু চতুর রাজনৈতিক আলোচনা এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদের সুযোগ নিয়ে ব্রিটিশ সরকার গান্ধী এবং কংগ্রেসকে পরাভূত করে। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনে প্রাদেশিক পর্যায়ে দায়িত্বশীল স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা করা হয়। দেশীয় রাজ্যগুলোকে সংযুক্ত করে কেন্দ্রে একটি ফেডারেশন গঠনের এবং গভর্নর জেনারেলের হাতে অসীম ক্ষমতা অর্পণের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কংগ্রেস কড়া প্রতিবাদ করে।</p> <p style = "text - align: justify;">১৯৩৪ সালে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে বামপন্থী এবং সমাজবাদী একটি গ্রুপ কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি গঠন করে। আচার্য্য নরেন্দ্র দেব হন এর সভাপতি এবং জয়প্রকাশ নারায়ণ হন সাধারণ সম্পাদক। সমাজতন্ত্রের প্রতি জওহরলাল নেহেরু এবং সুভাষ বোসের সহানুভূতি ছিল, তবে তাঁরা এ দলে প্রকাশ্যে যোগদান করেন নি। ভারতে তখন কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ ছিল। তাই এর নেতা - কর্মীরা এই নতুন দলের মাধ্যমে কাজ করতে থাকেন। মানবেন্দ্রনাথ রায় এবং কৃষক সভার একটি গ্রুপ কংগ্রেস ও সোশ্যালিস্ট পার্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকে। কংগ্রেসের অভ্যন্তরে বামপন্থীদের শক্তি বৃদ্ধিতে গান্ধী এবং দক্ষিণপন্থী নেতৃবৃন্দ সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।</p> <p style = "text - align: justify;">১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অধীনে ১৯৩৭ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কংগ্রেস বিপুল ভোটে সাধারণ আসনগুলোতে জয়ী হয় এবং ৬টি হিন্দুপ্রধান প্রদেশে দলীয় সরকার গঠন করে। সিন্ধু এবং পাঞ্জাবে দলের পরাজয় ঘটে; তবে আসাম, বাংলা এবং উত্তর - পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। বাংলায় কংগ্রেস ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টির সঙ্গে যৌথভাবে সরকার গঠনে অস্বীকার করায় মুসলিম লীগ এবং কৃষক প্রজা পার্টি কোয়ালিশন সরকার গঠন করে। উত্তর প্রদেশে মুসলিম লীগ কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার গঠনে রাজী হলেও জওহরলাল নেহরু মুসলিম লীগকে কংগ্রেসের নীতি গ্রহণে চাপ দেওয়ায় তা সম্ভব হয় নি। বামপন্থীদের প্রভাব খর্ব করার উদ্দেশ্যে ১৯৩৮ সালে হরিপুরায় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনের জন্য গান্ধী বামপন্থী নেতা সুভাষচন্দ্র বসুকে সভাপতি মনোনীত করেন। কিন্তু সুভাষ বসু তাতে অস্বীকৃতি জানান এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের দিগ্নির্দেশনা দিয়ে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতির পরিকল্পনার কথা বলেন। পরের বছরের বার্ষিক অধিবেশনের জন্য গান্ধী এবং দক্ষিণপন্থী নেতারা সুভাষ বসুকে সভাপতি নির্বাচিত করতে অস্বীকার করেন; তবে বামপন্থীদের সহায়তায় সুভাষ বসু তাঁদের মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করতে সক্ষম হন। এ সংঘর্ষের ফলে সুভাষ বসুকে কংগ্রেস ছাড়তে হয়। এদিকে মুসলিম লীগ মুসলমানদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৪০ সালে লাহোরে মুসলিম লীগ অধিবেশনে লাহোর প্রস্তাব গ্রহণ করে। ১৯৪১ সালে সুভাষ বসু ভারত ত্যাগ করে ইউরোপ চলে যান এবং সেখান থেকে দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়ায় গিয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের প্রস্ত্ততি নেন।</p> <p style = "text - align: justify;">১৯৪২ সালের আগস্ট মাসে গান্ধী ভারত ছাড় আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু এ আন্দোলন সহিংসতার পর্যায়ে চলে গেলে ব্রিটিশ সরকার অচিরেই এটি দমন করে। এর পরেই ব্রিটিশ সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। বড়লাট ওয়াভেল ১৯৪৫ সালের জুন - জুলাইতে সিমলায় সকল রাজনৈতিক দলের একটি সম্মেলন ডাকেন, কিন্তু এই আলোচনায় বাস্তব কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের নেতাদের মধ্যে একটি মতৈক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ব্যর্থ হয়।</p> <p style = "text - align: justify;">১৯৪৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে দেখা যায় ভারতীয়রা স্পষ্টত কংগ্রেস বা মুসলিম লীগের প্রতি তাদের আনুগত্যে বিভক্ত। এদিকে ইংরেজ সরকার সুভাষচন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির অফিসারদের দেশদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার শুরু করলে চারদিকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজকীয় ভারতীয় নৌবাহিনীতে বিদ্রোহের সূত্রপাত হয় এবং একই সঙ্গে সেনাবাহিনী পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিদ্রোহী মনোভাবের সৃষ্টি হয়। এ পর্যায়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলি ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কেবিনেট মিশন প্রেরণ করেন। মিশন অবিলম্বে একটি গণপরিষদ গঠন এবং ভারতীয়দের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের সুপারিশ করে। মুসলিম লীগের পাকিস্তান প্রস্তাব সরাসরি গ্রহণ করা হয় নি, তবে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে প্রদেশগুলোর গ্রুপিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগ তাদের আপত্তি সত্ত্বেও সুপারিশগুলো মানতে রাজী হয়। কিন্তু পুরো পরিকল্পনাটাই বানচাল হয়ে যায়, কারণ নেহেরু জেদ ধরেন যে কংগ্রেস কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই সংবিধান তৈরি করবে। এর ফলে মুসলিম লীগ নেহেরুর অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভা বানচাল করার পাঁয়তারা করে এবং দেশ বিভক্তির জন্য ১৯৪৭ সালের গোড়া থেকে সহিংস আন্দোলন শুরু করে। অ্যাটলি তখন মাউন্টব্যাটেনকে ভারতের বড়লাট নিয়োগ করেন এবং ১৯৪৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের সময়সীমা নির্ধারণ করেন। এর পরেই ঘটনাবলি দ্রুতগতিতে এগুতে থাকে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্তি কার্যকর হয়। [অশোক কুমার মুখোপাধ্যায়]</p>
Please, login first.
click here to login
Cancel
Login
©2024 SATT ACADEMY. All rights reserved.
Promotion