Email:
Password:
Remember Me
Forgot your password?
Log in
New to Satt Academy?
Create an account
or
Log in with Google Account
Home
Ask Question?
Business Account
Exam
Exam List
Exam Result
Category
1-12 Class
Board Exam
Admission
Job Solution
Skill Development
Book Collection
Video Content
Blog Content
Question
Ask Question?
Current Affairs
All MCQ Question
All Written Question
Upload Question
General
Study Plan
Hand Note
Notice | News
Other
FAQ
Point
Package
Feedback
Home
Academy
Admission
Job Assistant
Current Affairs
Skill
Forum
Blog
Package
Sign In
Unauthenticate
Guest
example@gmail.com
Login
Description
Home
Edit Description
Back
Edit Description
Fill up the form and submit
Question
কোন রাষ্ট্রটি বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমার দাবিদার নয়?
মালয়েশিয়া
ফিলিপাইন
ভিয়েতনাম
কম্বোডিয়া
ANSWER : 4
Descrption
<p>দক্ষিণ চীন সাগর বিরোধ নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা <br>***দক্ষিণ চীন সাগর : চীনের একক দখলদারিত্ব এবং ভবিষ্যৎ বিশ্ব রাজনীতিতে এর প্রভাব***</p><p>এইচ-৬ কে মডেলের চীনা বোমারু বিমান দ্বারা সর্বদা পরিবেষ্টিত থাকা প্রশান্ত মহাসাগরের একটি অংশ যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মৎস্য সম্পদ, বিলিয়ন ব্যারেল খনিজ তেল আর ট্রিলিয়ন কিউবিক প্রাকৃতিক গ্যাস। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ পণ্যবাহী জাহাজ যার বুকের উপর দিয়ে বয়ে যায় তার নাম হলো দক্ষিণ চীন সাগর যার উৎপত্তি ৪৫ মিলিয়ন বছর আগে বলে ধারণা করা হয়।</p><p>**দক্ষিণ চীন সাগরঃ**</p><p>১৫০০ শতাব্দীর দিকে চম্পা সাম্রাজ্যের নামানুসারে দক্ষিণ চীন সাগর কে বলা হতো চম্পা সাগর বা চামের সাগর। চীনে এটি চায়না সাগর, ফিলিপাইনে এটিকে পশ্চিম ফিলিপাইন সাগর এবং ভিয়েতনামে এটি পূর্ব সাগর নামে পরিচিত। ১৪ লক্ষ বর্গ মাইল আয়তনের এই সাগরটিতে এসে মিশেছে প্যাসিগ, পামপাঙ্গা, পাহাং, রাজাং, মেকোং, জিউলং, মিন এবং পেয়ার্ল নামক বহু শাখা নদী। লোকমুখে শোনা যায় প্রায় সাড়ে চার কোটি বছর পূর্বে ভূমির মধ্যকার এক বিশাল ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং এই বৃহৎ সাগরের উৎপত্তি হয়। চীন সাগর মূলত ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরের প্রধান সংযোগ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং পূর্ব এশিয়ার জাহাজ চলাচলের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এর চারপাশে কয়েক শতাধিক দ্বীপ, প্রবাল প্রাচীর, বালুকা প্রাচীর যা জোয়ারের সময় পানির নিচে নিমজ্জিত অবস্থায় থাকে। বলে রাখা ভালো, বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ প্রবাল দক্ষিণ চীন সাগরেই পাওয়া যায়। তাছাড়া বিশ্বের সামুদ্রিক মাছের ১০ শতাংশের জোগান দেয় দক্ষিণ চীন সাগর যা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আশেপাশের লক্ষাধিক জনগণ। বলাই চলে, এই সাগর ব্যবসা বাণিজ্যের এক বিশাল সম্ভার যার মধ্য দিয়ে বছরে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য যাওয়া-আসা করে।</p><p> </p><p>**বিরোধের শুরুঃ**</p><p>বিশ্বের মোট জাহাজের এক-তৃতীয়াংশ চলাচল করা দক্ষিণ চীন সাগরের চারপাশে তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনাম দ্বারা পরিবেষ্টিত যার আয়তন প্রায় ৩৫ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। আইনে স্পষ্ট বলে দেয়া আছে, আন্তর্জাতিক জলসীমানায় থাকা এই সাগরটির দাবী কারোও একার অধিকারে হতে পারে না কিন্তু তেল, খনিজ সম্পদ, গ্যাসসহ বিভিন্ন মূল্যবান উপাদান সম্বলিত সাগরটিতে প্রায় শতাব্দী ধরে চীন সরকার একলাই ২৯১ টি প্রবাল দ্বীপ নিজেদের বলে দাবী করেছে। দক্ষিণ চীন সাগরের প্রবাল প্রাচীরের উপর অসংখ্য কৃত্রিম দ্বীপ গড়ে তুলে তাতে সামরিক স্থাপনা গঠন করেছে চীন সরকার। আয়তনে ছোট অন্যান্য দেশগুলো দখলদারীত্বের ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছিলো না। এরইপ্রেক্ষিতে ফিলিপিন মামলা টুকে দেয় আন্তর্জাতিক আদালতে। “এককভাবে কর্তৃত্ব ফলানোর কোনও অধিকার চীনের নাই” বলে আদালতে রায় দিলেও চীন সরকার এই আদেশ মানতে নারাজি প্রকাশ করলেই বিরোধের সূত্রপাত হয়। সময়কাল ১৯৭৪ সাল। সমুদ্রের অংশ নিয়ে দক্ষিণ ভিয়েতনাম নেভী বাহিনী এবং চায়না বাহিনীর মধ্যে প্রথম যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। ফলাফল, ৫০ জন ভিয়েতনামী সেনা নিহত হয় যুদ্ধে। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয়বারের মত দুই পক্ষ মুখোমুখি হয় তবে বিধিবাম, এই যুদ্ধেও প্রায় ৭০ জন ভিয়েতনামী সৈন্য নিহত হয়। এতেই শেষ নয় বরং পরবর্তী সময়ে চীনা সৈন্য বিভিন্ন সময়ে ভিয়েতনামী মাছ ধরার ট্রলারে হামলা চালিয়েছে।</p><p>ফিলিপাইনের সাথে কৌশলগত সামরিক সম্পর্কের কারণে মার্কিন রণতরী বেশ সক্রিয় ছিলো দক্ষিণ চীন সাগরে। পরবর্তীতে চীন সরকার তাঁর ২০০ নটিক্যাল মাইল সীমানার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর তার মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন দক্ষিণ চীন সাগরে নির্মিত কৃত্রিম দ্বীপগুলোতে চীনের যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেন। এতেই চটে যায় চীন সরকার এবং এমন কিছু হলে তা “ভয়ংকর সংঘাতে” রুপ নিবে বলে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেয়। এরইমধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরের চতুর্দিকে সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে এইচ-৬ কে মডেলের বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে চীন সরকার যা দিয়ে উডি দ্বীপ হতে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যেকোনো স্থানে হামলা চালানো সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বর্তমানে ভারতও চীনের এমন আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।</p><p> </p><p>**ব্যর্থ কূটনীতিঃ**</p><p>২০০২ সালে চীনের বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের আহবানে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সংঘের (ASEAN) দশ সদস্যের একটি দলের সাথে চীন সরকার একটি ঘোষণা চুক্তি করতে সম্মত হয়। দাবী আদায়ে কোন ধরণের জোরজবরদস্তি বা হুমকি প্রদান না করার ক্ষেত্রে দুই পক্ষই সম্মতি জ্ঞাপন করে। তবে চীন সরকার প্রথম হতেই এই ঘোষণা চুক্তিকে কোনধরণে আইনত রুপ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এশিয়ান সংঘাতের দিকে না গিয়ে ঐক্য গঠনের দিকেই মনোনিবেশ করার পক্ষপাতী ছিলো কিন্তু চীনের বিরুদ্ধে ফিলিপাইন শক্ত অবস্থান গ্রহণের জন্য এশিয়ানকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অপরদিকে চীনের বন্ধুদেশ এবং এশিয়ানের সদস্য দেশ লাউস এবং কম্বোডিয়া এই ধরণের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। এভাবেই অভ্যন্তরীণ বিতর্কের জের ধরে উদ্যোগ ভেস্তে যায়।</p><p>**বৈধ আইনী ব্যবস্থাঃ**</p><p>সময়কাল ২০১৩ সাল। চীনের আগ্রাসী কর্মকান্ড বন্ধের নিমিত্তে প্রথম এবং একমাত্র দেশ হিসেবে ফিলিপাইন নেদারল্যান্ডের পিসিএ’তে (পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আরবিট্রেশন) মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ভিয়েতনাম একই দায়েরকৃত মামলায় মতপ্রকাশ করে চীনের বিরুদ্ধে। তবে পরবর্তীতে চীন সরকার জানায় উক্ত মামলায় আদালতের হস্তক্ষেপের কোন এখতিয়ার নেই এবং তাদের সিদ্ধান্ত ফলপ্রসু হবে না।</p><p>জ্যামাইকায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন সংস্থা UNCLOS এ ফিলিপাইন পুনরায় মামলা দায়ের করে। ২০১৬ সালে ফিলিপাইন মামলা জিতে যায়। আদালত এই মর্মে জানিয়ে দেয়, চীন সরকারের কোন বৈধ ভিত্তি নেই এককভাবে দক্ষিণ সাগর কর্তৃত্ব দাবী করার এবং তা ফিলিপাইনের সার্বভৌম অধিকার চরমমাত্রায় ক্ষুণ্ণ করেছে। তবে এখানেও চীন উক্ত শুনানীতে অংশ না নিয়ে উক্ত শুণানীকে দুর্ণীতিগ্রস্থ বলে আখ্যায়িত করে।</p><p>বিশেষজ্ঞের মতে দক্ষিণ চীন সাগরে বিপুল পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানী মজুদ আছে তবে কতটুকু পরিমাণ আছে তা নির্ভর করে কোন দেশের পর্যবেক্ষকের তথ্য গ্রহণ কওরা হবে তাঁর উপর।</p><p>প্রায় ১১ বিলিয়ন ব্যারেল তেল এবং ১৯০ ট্রিলিয়ন কিউবিক প্রাকৃতিক গ্যাস গর্ভে ধারণ করা সমুদ্রটিতে পৃথিবীর ১০ শতাংশ মাছের বসবাস। যুক্তরাষ্ট্রের বাধার সম্মুখীন হয়েও চীন সরকার এখনোও অবধি তাদের সিদ্ধান্ত হতে এক পা পিছপা হয় নিই বরং তারা ব্যস্ত নতুন সব স্থাপনা নির্মানের দিকে। ইতিমধ্যে সমুদ্র সীমান্তে চীন দেশ ব্যতীত অন্যান্য দেশের মাছ ধরার ট্রলারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে সামরিক মহড়া চালু করেছে।</p><p>এ যাবতকালের মামলার শুনানিতে চীন সরকার হয়তো অনুপস্থিত ছিলো নয়তো ক্ষমতার দাম্ভিকতায় এড়িয়ে গিয়েছে। তবে এভাবে দাবি নিয়ে পাল্টা ঘাতপ্রতিঘাতে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট দেশগুলোই নয় বরং বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও হুমকির মুখে পতিত করবে। যুক্তরাষ্ট বর্তমানে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে চীনের কার্যকলাপের উপর, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার হস্তক্ষেপও কামনা করেছে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও অর্থনৈতিক উত্থানকে প্রতিহত করার জন্য যা অশনি সংকেত বহন করে। তাছাড়া বর্তমানের অস্থিরতা সাগরপথে নির্বিঘ্নে জাহাজ চলাচলের বিষয়টিকেও ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির আধুনিকীকরণ দক্ষিণ চীন সাগরের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে হলেও চীনের নেতারা দাবিকৃত অঞ্চলের দখল নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাদের এমন কর্মকান্ড মার্কিন বাহিনীকেও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে যার ফলে ভবিষ্যতে মার্কিন বাহিনী কোনরূপ বাধার সম্মুখীন হলেই সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে। আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর সম্পর্কে সৃষ্টি হচ্ছে ফাটল। গ্লোবাল টাইমস বার্তায় কমিউনিস্ট পার্টি আশংকা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই এমন কিছু করে বসে তবে তা বড় ধরণের যুদ্ধের জন্ম দিবে। সবকিছু মিলিয়ে যে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে তা কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পুর্বাভাসের ইঙ্গিত বহন করছে?<br>/:</p><p># ***দক্ষিণ চীন সাগর সংকট***</p><p>জাতিসংঘের সমুদ্র আইন অনুযায়ী, কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র তাদের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সামুদ্রিক অঞ্চল নিজেদের দাবি করতে পারে। তাছাড়া ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অঞ্চলকে বলা হয় এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন। এই অঞ্চলে তারা প্রাকৃতিক সম্পদ আরোহন, জলজ প্রাণী বা মৎস্য আরোহন, কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ ইত্যাদির স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে। চীনের নাইন ড্যাশ লাইন অনুযায়ী, তারা মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার সামুদ্রিক অঞ্চল নিজেদের দাবি করছে। এই অঞ্চলে রয়েছে বেশ কিছু দ্বীপপুঞ্জ। যেমন- স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ, স্কারবরো শোল অঞ্চল, প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জসহ বেশ কিছু প্রবাল দ্বীপ।</p><p>বর্তমানে স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের ২১টি দ্বীপ ভিয়েতনামের অধীনে রয়েছে। তারা ১৯৮৮ সালে চীনের সাথে যুদ্ধে সাউথ জনসন রীফ অঞ্চল হারায়। ভিয়েতনাম দাবি করে, স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ তাদের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ২০০ নটিকেল মাইলের মধ্যে। সুতরাং, জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ তাদের। ১৯৭৫ সালে উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনাম একীভূত হয়ে যায়। তারপর থেকে তারা দাবি করছে প্যারাসেল দ্বীপও তাদের। যদিও ১৯৫৮ সালে উত্তর ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলকে চীনের অধীনে বলেই স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।</p><p>ফিলিপাইন জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী ও ঐতিহাসিক দাবির প্রেক্ষিতে স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ ও স্কারবরো শোল অঞ্চল নিজেদের মনে করে। এই অঞ্চল নিয়ে ফিলিপাইনের সাথে চীনের দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীন এই অঞ্চলে তাদের পতাকা টানিয়ে রাখলে ফিলিপাইনিরা সেগুলো তুলে ফেলে। চীন সন্দেহ করে ফিলিপাইনিরা সমুদ্রে মাছ ধরার নামে চীনের ওপর নজর রাখছে।</p><p>জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী, ব্রুনাইয়ের দাবি স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের লুইসা রীফ অঞ্চল তাদের। মালয়েশিয়াও তাদের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের দাবি করছে। অন্যদিকে তাইওয়ানের দাবি চীনের মতোই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তাইওয়ানের জাতীয়তাবাদী দল কুওমিনট্যাংই চীনের ড্যাশ লাইন ব্যবস্থার প্রচলন করেছিল।</p><p>**দক্ষিণ চীন সাগরের গুরুত্ব**</p><p>দক্ষিণ চীন সাগর বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত সামুদ্রিক অঞ্চল। এই অঞ্চল এশিয়ার সাথে আফ্রিকা ও ইউরোপের যোগাযোগ রক্ষা করছে। তাই এই অঞ্চল বাণিজ্যক ও সামরিক দিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ চীন সাগরের তলদেশে রয়েছে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদের সমাহার। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যানুযায়ী, এই অঞ্চলে ১১ বিলিয়ন গ্যালন তেল ও ১৯০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ রয়েছে।</p><p>তবে চীন সরকারের অধীনের এক কোম্পানির তথ্যানুযায়ী, সেখানে প্রকৃতপক্ষে ১২৫ বিলিয়ন গ্যালন তেল ও ৫০০ ট্রিলিয়ন ঘন ফুট প্রাকৃতিক গ্যাস রয়েছে। চীন প্রতিবছর ৪.৫ বিলিয়ন গ্যালন তেল ব্যবহার করে। সুতরাং, এই অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলে তারা কয়েক দশকের খনিজ শক্তির যোগান পাবে।</p><p>তাছাড়া দক্ষিণ চীন সাগর বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর সেখানে ৩.৩৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য জাহাজে বহন করা হয়। ২০১৬ সালে বৈশ্বিক তেল বাণিজ্যের শতকরা ৩০ ভাগ পরিবহণ করা হয় এই অঞ্চল দিয়ে। চীনের আমদানিকৃত তেলের শতকরা আশি ভাগ ইন্দোনেশিয়ার মালাক্কা প্রণালী দিয়ে দক্ষিণ চীন সাগর হয়ে চীনের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছে।</p><p>এছাড়া এই অঞ্চলে বিশ্বের শতকরা দশ ভাগ মৎস্য সংগ্রহ করা হয়। তাই এই অঞ্চল লক্ষ লক্ষ মানুষের খাদ্যের উৎসও। গত ৭০ বছরে দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক কার্যক্রম ছিল না বললেই চলে। এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের সার্বভৌমত্ব দাবি করা দেশগুলো কূটনীতি ও আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের চেষ্টা করছিল। এই অঞ্চলে পাহারা দেয়ার কাজ হতো নৌবাহিনী ও কিছু অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের মাধ্যমে। সামরিক কার্যক্রম না হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল সেনা ক্যাম্প তৈরির মতো প্রয়োজনীয় ভূমির অভাব। তবে চীনে শি জিনপিং ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই চিত্র পাল্টে গেছে।</p><p>২০১৪ ও ২০১৫ সালের মধ্যে চীন এই অঞ্চলে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা শুরু করেছে। তারা সাতটি দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। দ্বীপগুলো হচ্ছে সুবি রিফ, মিশচিফ রিফ, জনসন সাউথ রিফ, হিউজেস রিফ, গেভেন রিফ, ফিয়েরি ক্রস রিফ ও কোয়ারটেরন রিফ। চীন অবশ্য বলে তারা সামরিকায়নের উদ্দেশ্য নিয়ে এসব করছে না।</p><p>স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের ফিয়েরি ক্রস রিফে চীন ৩.১ কিলোমিটার এয়ারস্ট্রিপ নির্মাণ করেছে। এতে যেকোনো চীনা সামরিক বিমান এখানে অবতরণ করতে পারে। এছাড়া এখানে বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে যেন মূল ভূখণ্ড থেকে সামরিক ট্যাংক নিয়ে আসা যায়। সুবি রিফ দ্বীপকেও চীন স্থায়ী সামরিক আস্তানা বানিয়ে ফেলেছে। এর মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরেই থিটু রিফে ফিলিপাইনের সেনারা ঘাঁটি বানিয়েছে। এছাড়া মিশচিফ রিফে দ্বীপ নির্মাণ নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ফিলিপাইনের জনগণের বিক্ষোভের ঘটনাও আছে।</p><p>এই অঞ্চল নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকলেও তারা সবাই-ই চায় এখানে মুক্তভাবে নৌযান চলাচল করুক। কারণ, এতে সব দেশেরই ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে। চীন ব্যবসায়িক দিকের পাশাপাশি চাইছে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের করে নেয়ার। কারণ, এতে তারা জলপথে যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী হতে পারবে। একইসাথে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে ভবিষ্যতের সুপার পাওয়ার হওয়ার দিকেও অনেকখানি এগিয়ে যাবে। এই উদ্দেশ্যেই ২০১৩ সাল থেকে প্রায় ৩,২০০ একর জায়গা দখল করে নিয়েছে চীন।</p><p>কিন্তু অন্য দেশগুলো চীনের এই আগ্রাসনকে ভালো চোখে দেখছে না। ফিলিপাইন ২০১৩ সালে নেদারল্যান্ডের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতে চীনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এর রায় হয় ২০১৬ সালে। আদালত রায় দেয় চীনের বিপক্ষে। চীনের নাইন ড্যাশ লাইন ও ঐতিহাসিক অধিকারের দাবি অযৌক্তিক মনে হয় আদালতের কাছে। তবে চীন এই রায় প্রত্যাখ্যান করে। তারা বরং দ্বীপাঞ্চলগুলো আরো দখলে মনোযোগ দিচ্ছে।</p><p>**যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা**</p><p>চীনের বিরুদ্ধে দ্বন্দ্বে যে দেশগুলো আছে তাদের বন্ধু রাষ্ট্র হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে ফিলিপাইন ও তাইওয়ানের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তাছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী নৌবাহিনী থাকায় যুক্তরাষ্ট্র অনেকটা ক্ষমতা প্রদর্শনের সুযোগ হিসেবেই দেখে একে।</p><p>যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের জন্য এই জলপথ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই অঞ্চলে মুক্ত নৌযান চলাচল নিশ্চিত রাখা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্যও প্রয়োজন। তাই তারা আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব নিরসনে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই এখানে কাজ করে। সামরিক অস্ত্রে সুসজ্জিত নৌবহর নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্র মহড়া দেয়। চীন যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এই নাক গলানো মনোভাবের জন্য বারবার সতর্ক করছে তাদের।</p><p>**সংকট উত্তরণের সম্ভাব্য উপায়**</p><p>সংকট যেমন জটিল, তা উত্তরণের উপায়ও আছে। এজন্য দরকার দ্বন্দ্বে জড়িত প্রতিটি দেশের সদিচ্ছা। তারা যদি এই অঞ্চলের সম্পদ উৎপাদনে একে অন্যকে সহযোগিতা করে ও নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নেয়, তাহলে এই সংকট অনেকটাই কেটে যাবে। প্রাকৃতিক গ্যাস, মৎস্য আরোহণ, তেল উৎপাদনে প্রত্যেকে সহযোগিতা মনোভাবে কাজ করলে অবৈধ কার্যক্রমও কমে যাবে। তারা এই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যও একত্রে কাজ করতে পারে।</p><p>তারা নিজেদের সামরিক বাহিনীর সংলাপের মাধ্যমেও সংকট উত্তরণে কাজ করতে পারে। বড় কোনো সংঘাত এড়ানোর জন্য প্রতিটি দেশ নিজেদের মধ্যে হটলাইন নির্মাণ করতে পারে। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে পারে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রই হয়তো মধ্যস্থতা করতে আসবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের বিরোধিতা থাকায় আসিয়ান বা সিঙ্গাপুরের মতো নিরপেক্ষ দেশগুলোও ভূমিকা রাখতে পারে। অবশ্য কূটনৈতিক আলোচনা যে হচ্ছে না, তা নয়।</p><p>**শেষকথা**</p><p>শান্তিপূর্ণ আলোচনায় সমাধান না হলে একসময় হয়তো যুদ্ধের দিকেই গড়াবে এই সংকট। সেটা হতে পারে একে অন্যকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কয়েক দশক ধরে চলা এই সংকট হয়তো খুব দ্রুতই সমাধানের নিশ্চয়তা নেই। বরং, চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সুপার পাওয়ার হওয়ার আকাঙ্ক্ষা সংকট আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। দক্ষিণ চীন সাগরেই যে সংকট তা নয়। উত্তর চীন সাগরেও চীনের সাথে জাপানের কয়েক দশক ধরে একটি দ্বীপের মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সহসাই এসব সংকট সমাধানের লক্ষণ নেই।(COPIED)</p>
Please, login first.
click here to login
Cancel
Login
©2024 SATT ACADEMY. All rights reserved.
Promotion