নিচের কোন দুটির একক ও মাত্রা সমীকরণ অভিন্ন-

Created: 2 years ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

আমরা জানি প্রত্যেক বস্তু যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থা বজায় রাখতে চায় অর্থাৎ বস্তু স্থির থাকলে স্থির থাকতে চায় আর গতিশীল থাকলে গতিশীল থাকতে চায়। বস্তুর এ ধর্মকে জড়তা বলে। বস্তুর এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হলে বাইরে থেকে একটা কিছু প্রয়োগ করতে হয়।

বইটি তার অবস্থানের পরিবর্তন করছে অর্থাৎ বইটি গতিশীল হচ্ছে। তুমি যখন বস্তুটিকে ঠেলো বা টানো তখন তুমি বস্তুটির উপর কিছু একটা প্রয়োগ কর। সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে এই ঠেলা (Push) এবং টানাই (Pull) হচ্ছে বল। তোমার হাত ও বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের ফলশ্রুতি হচ্ছে বল। কোনো বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বল হচ্ছে ঐ বস্তু এবং অন্য কোনো বস্তুর পারস্পরিক ক্রিয়ার ফল। কোনো বস্তুর পরিপার্শ্ব যা অন্যান্য বস্তুর সমন্বয়ে গঠিত, ঐ বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে যেমন, তুমি যদি কোনো বইকে হাত দিয়ে ধরে রাখ, তাহলে বইয়ের পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগুলো হচ্ছে তোমার হাত, যা বইটির ওপর ঊর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে; এবং পৃথিবী যা বইটির ওপর নিম্নমুখী বল প্রয়োগ করে (বই-এর ওজন)।

আমাদের সাধারণ অভিজ্ঞতা বলে কোনো কিছু ঠেলতে বা টানতে, বহন করতে বা নিক্ষেপ করতে বলের প্রয়োজন হয়। আমরা আমাদের নিজের উপরও বলের প্রভাব অনুভব করতে পারি যখন কেউ আমাদেরকে ধাক্কা দেয় বা কোনো গতিশীল বস্তু আমাদেরকে আঘাত করে অথবা মেলার মাঠে যখন আমরা কোনো নাগরদোলায় চড়ে বসি। এসবই হচ্ছে বলের স্বজ্ঞামূলক ধারণা।

বলের স্বজ্ঞামূলক ধারণা থেকে প্রকৃত বৈজ্ঞানিক ধারণায় উপনীত হওয়া কিন্তু খুব সহজে হয়নি। অ্যারিস্টটলের মতো প্রাচীন বিজ্ঞ চিন্তাবিদদেরও বল সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা ছিল। বল সংক্রান্ত প্রথম বৈজ্ঞানিক ধারণার অবতারণা করেন গ্যালিলিও। স্যার আইজ্যাক নিউটনের গতি বিষয়ক সূত্রাবলি থেকেই বল সংক্রান্ত সঠিক বৈজ্ঞানিক ধারণা পাওয়া যায়। মহাকর্ষ বলের সূত্রের সাহায্যে তিনি বল সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ধারণা দেন।

স্থূল জগতে আমরা মহাকর্ষ বল ছাড়াও আরো নানা রকম বলের সাথে পরিচিত হই, যেমন পেশি শক্তি, দুটি বস্তুর মধ্যকার স্পর্শ বল যেমন ঘর্ষণ বল, সঙ্কুচিত বা প্রসারিত স্প্রিং কর্তৃক প্রযুক্ত বল, টানা তার বা সুতার উপর বল, কঠিন বস্তু যখন প্রবাহীর সংস্পর্শে থাকে তখন প্লবতা বা সান্দ্র বল, প্রবাহীর চাপের কারণে বল বা তরলের পৃষ্ঠটানজনিত বল ইত্যাদি। দুটি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে না থাকলেও বল ক্রিয়াশীল হতে পারে, যেমন মহাকর্ষ বল, বা দুটি আহিত বস্তুর মধ্যকার বল। সূক্ষ্ম জগতে আমরা প্রোটন ও নিউট্রনের মধ্যে নিউক্লিয় বল, আন্তঃপারমাণবিক বা আন্তঃআণবিক বলের কথাও আমরা জানি ।

Content added By
Promotion