SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

(প্রবন্ধ লিখুন)

Created: 1 year ago | Updated: 11 months ago

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

ভূমিকাঃ পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে আজ অবধি যুগে যুগে এমন কিছু ব্যক্তিত্বের আগমন ঘটেছে, যাদের হাত ধরে মানবতার মুক্তির সনদ রচিত হয়েছে। বাংলাদেশের জন্মের সাথে যার নাম অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বসম্মোহনীদের নামের তালিকায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বাগ্রে। আর এমন ব্যক্তিত্বের আঙুলের ইশারায় পৃথিবীর বুকে মহাবিপ্লব সংঘটিত হয়।

জন্ম ও পারিবারিক পরিচয়ঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বর্তমান গোপালগঞ্জ (সাবেক ফরিদপুর) জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মাতার নাম সায়েরা খাতুন। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান ।

শৈশবজীবনঃ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ছোট সময়ে আমি খুব দুষ্ট প্রকৃতির ছিলাম'। খেলাধুলা করতাম, গান গাইতাম এবং খুব ভাল ব্রতচারী করতে পারতাম।” (অসমাপ্ত আত্মজীবনী)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব সম্পর্কে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন তাঁর ‘শেখ মুজিব আমার পিতা' গ্রন্থে বলেন, “আমার আব্বার শৈশব কেটেছিল টুঙ্গিপাড়ার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে, মেঠো পথের ধুলোবালি মেখে। বর্ষার কাদাপানিতে ভিজে ।

শিক্ষাজীবনঃ ১৯২৭ সালে বঙ্গবন্ধুর বয়স যখন মাত্র ৭ বছর তখন তাঁকে স্থানীয় গিমাডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর ১৯২৯ সালে অর্থাৎ ৯ বছর বয়সে তাঁকে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি মিশনারি স্কুলে পড়ালেখা করেন। কিন্তু ১৯৩৪ সালে তিনি বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে প্রায় ৪ বছরকাল তাঁর পড়ালেখা বন্ধ থাকে। অতঃপর ১৯৩৭ সালে আবারও তিনি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন। এ স্কুল থেকেই তিনি ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং বেকার হোস্টেলে বসবাস শুরু করেন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে তিনি ১৯৪৪ সালে আইএ এবং ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা - বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন ও নেতৃত্বদানকে কেন্দ্র করে বৈরী অবস্থার সৃষ্টি হলে আইন বিভাগে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই তাঁর ছাত্রজীবনের সমাপ্তি ঘটে।

বৈবাহিক জীবনঃ ১৯৩৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান শেখ ফজিলাতুন্নেসাকে বিয়ে করেন। তাদের ঘর আলোকিত করেছে তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল এবং দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বিবাহ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বলেন, “আমার যখন বিবাহ হয় তখন আমার বয়স বার তেরো বছর হতে পারে। আমি শুনলাম আমার বিবাহ হয়েছে,তখন কিছুই বুঝতাম না। রেণুর বয়স তখন বোধহয় তিন বছর হবে” ।

মুসলিম সেবা সমিতিঃ বঙ্গবন্ধুর একজন স্কুল মাস্টার একটা সংগঠন গড়ে তোলেন যার সদস্যরা বাড়ি-বাড়ি ঘুরে ধান, চাল, টাকা, জোগাড় করে গরিব মেধাবী ছেলেদের সাহায্য করতেন। বঙ্গবন্ধু সেই দলের অন্যতম সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, মাস্টার সাহেব গোপালগঞ্জে একটা 'মুসলিম সেবা সমিতি' গঠন করেন, যার দ্বারা গরিব ছেলেদের সাহায্য করতেন। মুষ্টির চাল উঠাভেন প্রত্যেক মুসলমানের বাড়ি থেকে। প্রত্যেক রবিবার আমরা থলি নিয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে চাউল উঠিয়ে আনতাম এবং এই চাউল বিক্রি করে তিনি গরিব ছেলেদের বই এবং পরীক্ষার অন্যান্য খরচ দিতেন”। (অসমাপ্ত আত্মজীবনী) এছাড়া তার দানশীলতা সম্পর্কে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, 'দাদির কাছে শুনেছি আব্বার জন্য মাসে কয়েকটা ছাতা কিনতে হতো কারণ আর কিছুই নয়। কোন ছেলে গরিব, ছাতা কিনতে পারে না, দূরের পথ রোদ বৃষ্টিতে কষ্ট হবে দেখে, তাদের ছাতা দিয়ে দিতেন। এমনকি পড়ার বইও মাঝে মাঝে দিয়ে আসতেন।' (শেখ মুজিব আমার পিতা)

প্রাক রাজনৈতিক জীবনঃ শৈশব থেকেই তিনি ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেন। অন্যায় কিংবা অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হোক না কেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতিদান করতে বিন্দুপরিমাণ বিচলিত হতেন না। তিনি রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ করেই দেশ ও জাতির অঘোষিত বন্ধুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তাঁর চোখে-মুখে একটিই স্বপ্ন- বাঙালি জাতির অধিকার পুনরুদ্ধার করা যা ১৭৫৭ সালে পলাশি প্রান্তরে হারিয়ে যায়।

বৈপ্লবিক রাজনৈতিক জীবনঃ ছাত্রজীবন থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন রাজনীতি সচেতন মানুষ। রাজনীতি যেন তাঁর রক্তে মিশে আছে। তিনি উপলব্ধি করতেন যে, রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমেই বৃহৎ কল্যাণ সম্ভব। তাইতো এ দেশের সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে তিনি সবসময় অগ্রভাগে ছিলেন। গোপালগঞ্জ মিশন হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালীন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের জন্য সাত দিন কারাভোগ করেন। নেতৃত্বগুণের কারণে ১৯৪৬ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলী (বর্তমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) প্রতিষ্ঠা করেন। ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের পিকেটিং এর সময় গ্রেফতার হন। ১৯৪৯ সালে মাওলানা ভাসানীর সাথে ভূখা মিছিলে নেতৃত্ব দান কালে গ্রেফতার হন। ১৯৪৯ সালে ২৩ জুন আওয়াম মুসলিম লীগ এর জন্ম হলে কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি যুগা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তানের লাহোরে বাঙালির মুক্তিসনদ ছয় দফা উত্থাপন করেন। তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি বৃহৎ অংশ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে কাটান। ১৯৬৮ সালে আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারাভোগ করেন এবং সর্বশেষ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানিদের হাতে গ্রেফতার হন।

রাজনীতিতে অংশগ্রহণঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর “শেখ মুজিব আমার পিতা” গ্রন্থে উল্লেখ করেন, 'গোপালগঞ্জ স্কুল খেকে ম্যাট্রিক পাস করে তিনি কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে পড়তে যান। তখন বেকার হোস্টেলে থাকতেন। এই সময় তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ারদীর সংস্পর্শে আসেন। হলওয়ে মনুমেন্ট আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন সক্রিয়ভাবে। এই সময় থেকে তাঁর রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু হয়।

ছাত্রলীগ গঠনঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” গ্রন্থে বলেন, ‘১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি তারিখে ফজলুল হক মুসলিম হলের এ্যাসেম্বলি হলে এক সভা ডাকা হলো, সেখানে স্থির হল একটা ছাত্র প্রতিষ্ঠান করা হবে। যার নাম হবে ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ' ।

আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনঃ আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বলেন, “শেষপর্যন্ত হুমায়ুন সাহেবের রোজ গার্ডেন বাড়িতে সম্মেলনের কাজ শুরু হয়েছিল। শুধু কর্মীরা না, অনেক রাজনৈতিক নেতাও সেই সম্মেলনে যোগদান করেন। সকলেই একমত হয়ে নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করলেন; তার নাম দেওয়া হলো, 'পূর্ব পাকিস্তান
আওয়ামী মুসলিম লীগ' । মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি, জনাব শামছুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং আমাকে করা হলো জয়েন্ট সেক্রেটারি”।

ভাষা আন্দোলনঃ ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন আইন পরিষদে 'পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেবে' বলে ঘোষণা দিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে ওই ঘোষণার প্রতিবাদ জানান। ২ মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে ভাষার প্রশ্নে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবক্রমে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ' গড়ে ওঠে। ১১ মার্চ হরতাল চলাকালে সচিবালয়ের সামনে থেকে তিনি গ্রেফতার হন। তারপর ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি খাজা নাজিমউদ্দিন আবারও ঘোষণা করে ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু' । এ ঘোষণার প্রতিবাদে বন্দি থাকা অবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারিকে রাজবন্দী মুক্তি এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি দিবস হিসেবে পালন করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান। ১৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু এ দাবিতে জেলখানায় অনশন শুরু করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের করলে ওই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। ফলে সালাম, জব্বার, রফিক, বরকত ও সফিউরসহ অনেকেই শহিদ হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জেলে বসে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং ১৩ দিন অনশন অব্যাহত রাখেন। তারপর ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলখানা থেকে তিনি মুক্তিলাভ করেন।

যুক্তফ্রন্টঃ ১৯৫৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরেবাংলা, ভাষানী ও হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ারদীর নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর চারটি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। যুক্তফ্রন্টের প্রতীক ছিল নৌকা। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়। এই নির্বাচনে প্রথমবারের মত অংশগ্রহণ করে বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর শেরেবাংলা একে ফজলুল হক সরকার গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে সমবায় ও কৃষিঋণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। 

কারাগার থেকে কারাগারেঃ ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির চারদিন পর বঙ্গবন্ধুকে নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়। প্রায় ১৪ মাস আটক রাখার পর মুক্তি পান তিনি। তবে আবার জেলগেট থেকে তাঁকে আটক করা হয়। প্রায় দুই বছর কারাগারে থাকেন এসময়। ১৯৬১ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি মুক্তি পান। ১৯৬২ সালে জননিরাপত্তা আইনে আবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয় । পরবর্তীতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন প্রকাশিত হলে বঙ্গবন্ধু এর সমালোচনা করেন এবং এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। ৭ মার্চ ২০১৭ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জাতীয় সংসদে বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা জীবনে মোট ৪৬৮২ দিন কারাভোগ করেন। এর মধ্যে ব্রিটিশ আমলে ৭ দিন এবং পাকিস্তান আমলে ৪৬৭৫ দিন। বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবস্থায় ১৯৩৮ সালে প্রথম কারাগারে যান।

ঐতিহাসিক ছয় দফাঃ ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের আইয়ুব বিরোধী রাজনৈতিক দল সমূহের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। ছয় দফা দাবির প্রথম দফা ছিল 'লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেশনে পরিণত করতে হবে, যেখানে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার থাকবে এবং প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত আইন পরিষদ সার্বভৌম হবে'।

আগরতলা মামলাঃ পাকিস্তান সরকার ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে সেনাবাহিনীর কয়েকজন কর্মরত ও প্রাক্তন সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি অফিসারদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তারা ভারত সরকারের সহায়তায় সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্ত ানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা শহরে ভারতীয় পক্ষ ও আসামি পক্ষদের মধ্যে এ ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে মামলায় উল্লেখ থাকায় একে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বলা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এ মামলা এবং এর প্রতিক্রিয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন ৩৫ জনকে আসামি করে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ১২১-ক ধারা এবং ১৩১ ধারায় মামলার শুনানি শুরু হয়। মামলায় শেখ মুজিবকে ১ নম আসামি করা হয় এবং 'রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান গং' নামে মামলাটি পরিচালিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের তীব্র আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার অচিরেই মামলাটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।

গণঅভ্যুত্থানঃ ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ, বাঙালির ম্যাগনাকার্টা। ১৯৬৭ সালের ১৬ জুন নির্ভীক সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেনের ইত্তেফাক পত্রিকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। ২৩ জুন রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু কে প্রধান আসামী করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা করে তাদের উপর নির্যাতন করা হয়। ফলে সারা দেশে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্র সমাজ ঐতিহাসিক ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে। ৮ জানুয়ারি ৮টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত হয়। ২০ জানুয়ারি ছাত্রনেতা আসাদ পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। আন্দোলন তীব্র হয় । ১৫ ফেব্রুয়ারি আগরতলা মামলার আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হককে কারাগারের ভেতরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুজ্জোহা কে হত্যার ফলে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ২৪ জানুয়ারি সারা দেশে গণ আন্দোলন হয় ।

গণঅভ্যুত্থানঃ ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ, বাঙালির ম্যাগনাকার্টা। ১৯৬৭ সালের ১৬ জুন নির্ভীক সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেনের ইত্তেফাক পত্রিকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। ২৩ জুন রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু কে প্রধান আসামী করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা করে তাদের উপর নির্যাতন করা হয়। ফলে সারা দেশে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্র সমাজ ঐতিহাসিক ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে। ৮ জানুয়ারি ৮টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত হয়। ২০ জানুয়ারি ছাত্রনেতা আসাদ পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। আন্দোলন তীব্র হয় । ১৫ ফেব্রুয়ারি আগরতলা মামলার আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হককে কারাগারের ভেতরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুজ্জোহা কে হত্যার ফলে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ২৪ জানুয়ারি সারা দেশে গণ আন্দোলন হয় ।

বাংলাদেশ নামকরণঃ ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ারদীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামীলীগের জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, “জনগণের পক্ষ থেকে আমি ঘোষণা করছি, আজ হতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম পূর্বপাকিস্তানের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ” হবে” ।

৭০ এর নির্বাচনঃ ১৯৭০ সালের ৬ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রতীক ছিল নৌকা, স্লোগান ছিল 'জয় বাংলা' আর ঘোষণাপত্র ছিল ছয় দফা। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন লাভ করে। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি লাভ করলেও আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় না। এ জন্যই ১৯৭০ সালের নির্বাচনকে পাকিস্তানের মৃত্যুর বার্তাবাহক বলা হয় ।

অসহযোগ আন্দোলনঃ ১৯৭০ সালের নির্বাচন ছিল এক ব্যক্তি এক ভোট নীতির প্রথম নির্বাচন। ৩ মার্চ ১৯৭০ সালে আ. স. ম. আবদুর রব বঙ্গবন্ধুকে ‘জাতির পিতা' উপাধি প্রদান করেন। এই সমাবেশে বক্তৃতাকালে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।

৭ই মার্চের ভাষণঃ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তারিখে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে রোজ শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। সময় বিকাল ৩টা ২০ মিনিট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা বলেন, এর ব্যাপ্তিকাল ছিল ২৩ মিনিট তবে ১৮-১৯ মিনিট রেকর্ড করা হয়। রেকর্ড করেন এ এইচ খন্দকার এবং চিত্র ধারণ করেন আবুল খায়ের এমএনএ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫ম তফসিলে জাতির পিতার এ ভাষণ সন্নিবেশিত হয়। এ ভাষণেই বঙ্গবন্ধু বলেন “আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই”। ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন। যথাঃ
১. প্রথমে মার্শাল ল উইথড্র করতে হবে।
২. সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত যেতে হবে । 
৩. যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে।
৪. জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

১৩ নভেম্বর ২০১৭ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের ২৬টি বাক্যের বিশ্লেষণ করে “বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: রাজনীতির মহাকাব্য” শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রন্থটি প্রকাশ করে-তথ্য ও যোগাযোগ | প্রযুক্তি বিভাগ। ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ইউনেস্কো ৭ই মার্চের ভাষণকে “ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ” বা “বিশ্ব প্রামাণ্যের ঐতিহ্য” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এ পর্যন্ত বিশ্বে মোট ৪২৭ টি নথি এতে যুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি ইউনেস্কো ঘোষিত ৭৮টি ঐতিহাসিক দলিলের মধ্যে ৭ই মার্চের ভাষণ ৪৮ তম। ইউনেস্কোর এযাবৎ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৪২৭টি প্রামাণ্য ঐতিহ্যের মধ্যে প্রথম অলিখিত ভাষণ এটি। স্বীকৃতির সময় ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ছিলেন ইরিনা বোকোভা। ৭ মার্চের ভাষণকে আড়াই হাজার বছরের ইতিহাসে যুদ্ধকালে দেয়া বিশ্বের অন্যতম অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তৃতা বলা হয় ।

স্বাধীনতার ঘোষণাঃ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ঢাকাসহ সারাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীরা নিরীহ মানুষদের উপর অমানুষিক অত্যাচার শুরু করে। শুধু ঢাকাতেই ৫০ হাজারের বেশী মানুষ হত্যা করে তারা। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সর্বপ্রথম এম এ হান্নান নিজের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা পাঠ করেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থের ভূমিকাতে বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে স্বাধীনতার ঘোষনা দেওয়ার পরপরই আমাদের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কের পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হানা দেয় এবং আমার পিতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিঃ দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর ৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমারা স্বাধীনতা লাভ করি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯৩ হাজার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রেসকোর্সের ময়দানে আত্মসমর্পন করে। প্রতিষ্ঠিত হয় জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ। আর এই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও সংবিধান রচনাঃ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভের পর ২২ ডিসেম্বর মুজিবনগর সরকার ঢাকায় এসে শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর ঙ. রহমান সংবিধান রচনায় মনোনিবেশ করেন। ১১ জানুয়ারি ১৯৭২ স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান Re 'অস্থায়ী সংবিধান' আদেশ জারি করেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ গণপরিষদ আদেশ জারি করেন। ১০ এপ্রিল ১৯৭২ গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসে। ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট সংবিধান কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির একমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য ছিল সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এবং একমাত্র মহিলা সদস্য ছিল রাজিয়া বানু। খসড়া কমিটি ৪৭টি বৈঠকের মাধ্যমে খসড়া চূড়ান্ত করে। ১২ অক্টোবর ১৯৭২ সালে খসড়া সংবিধান গণ পরিষদে উত্থাপন করা হয় এবং ৪ নভেম্বর ১৯৭২ (১৮ কার্তিক ১৩৭৯) তা গৃহীত হয়। প্রতি বছর ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস হিসেবে পালন করা হয় । ১৫ ডিসেম্বর সংবিধানে স্বাক্ষর করা হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ থেকে তা কার্যকর হয়।

সংবিধান সংশোধন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারঃ ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর রেসকোর্স ময়দানে এক ঘোষণার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষনা দেন। পরবর্তীতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আমলে সংবিধান মোটঃ বার সংশোধন করা হয়। যুদ্ধবন্দীদের বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে প্রথম সংশোধনী আনা হয়। রাষ্ট্রপতির পদ সৃষ্টি, মেয়াদ ও জরুরী অবস্থার বিধান রেখে ২য় সংশোধনী আনা হয়। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তির আলোকে ৩য় সংশোধনী আনা হয় । এবং ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত Sol সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়।

অসমাপ্ত আত্মজীবনীঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিখিত আত্মজীবনী মূলক প্রথম গ্রন্থ 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'। ২০১২ সালের জুন মাসে বইটি দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড' থেকে প্রকাশিত হয়। বইটির প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ, প্রচ্ছদ সমর মজুমদার এবং গ্রন্থস্বত্ব ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট' ।

১৯৬৭-১৯৬৯ সালে কারাগারে থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু বইটি লেখেন। বইটি লিখতে বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা দেন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৪ সালে ফজলুল হক মনির ড্রয়ার থেকে এর মূল পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করেন। ২০০৭ সালের ৭ আগস্ট সাব জেলে থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বইটির ভূমিকা লেখেন। বইটিতে বঙ্গবন্ধু তাঁর পূর্ব পুরুষদের ইতিহাস সহ বাল্যকাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত নিজের জীবনের বিভিন্ন ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন।

কারাগারের রোজনামচাঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত আত্মজীবনী মূলক দ্বিতীয় গ্রন্থ 'কারাগারের রোজনামচা'। ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রন্থটির পাণ্ডুলিপি খুঁজে পান। বইটি ২০১৭ সালের ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ৯৮ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে ঐতিহাসিক বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত হয়। পাণ্ডুলিপি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু এর নাম দিয়েছিলেন “থালাবাটি কম্বল/জেলখানার সম্বল"। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা বইটির নামকরণ করেন ‘কারাগারের রোজনামচা' গ্রন্থটিতে ১৯৬৬-১৯৬৮ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর কারাবাসের চিত্র তুলে ধরেছেন। গ্রন্থটির প্রচ্ছদ শিল্পী তারিক সুজাত। বঙ্গবন্ধু এই গ্রন্থটিতে তাঁর জেল জীবনের পাশাপাশি জেল যন্ত্রণা, কয়েদীদের অজানা কথা, অপরাধীদের কথা, কেন তারা এই অপরাধে লিপ্ত হলো তার কথা, তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আওয়ামীলীগ নেতাদের দুঃখ দুর্দশা, সংবাদ মাধ্যমের অবস্থা, শাসকগোষ্ঠীর নির্মম নির্যাতন প্রভৃতি তুলে ধরেছেন। বইটির ভূমিকা লিখেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও বর্তমান বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বইটির গ্রন্থস্বত্ব হচ্ছে 'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট'।

বিশ্বসভায় বঙ্গবন্ধুঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত স্পষ্টভাষী ও রসিক মানুষ। দেশের গন্ডি পেরিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক সভায়ও সমানভাবে সমাদৃত ছিলেন। তিনিই প্রথম ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন। তিনি ১৯৭২ সালে বিশ্বশান্তি পরিষদের দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মাননা 'জুলিও কুরী' পুরস্কার লাভকরেন।

ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডঃ ১৫ আগস্টের সেই ভয়াল কালরাত। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপথগামী একটি অংশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর রোডের ঐতিহাসিক বাড়িতে এক কুখ্যাত হামলা চালিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ব্যতীত নিকটাত্মীয়স্বজনসহ সপরিবারে শহিদ হন তিনি ।

উপসংহারঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহানুভবতা তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে অনন্তকাল। কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বলেছেন “আমি হিমালয় দেখিনি, আমি দেখেছি শেখ মুজিবকে”। তাই বলতে হয় “যতদিন রবে পদ্মা, মেঘনা, গৌরি, যমুনা বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান” ।

11 months ago

বাংলা

Please, contribute to add content.
Content

Related Question

View More

একজন লেখক তিনিই যিনি লেখেন। তবে সব লেখা লিখেই লেখক হওয়া যায় না। লেখক সব ধরনের হতে পারে। তবে সৃজনশীল লেখকই হচ্ছে আমাদের মূল কেন্দ্রবিন্দু। লেখক হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম একটি স্বাধীন সত্ত্বা।

একজন লেখক পুরোপুরি তার নিজের সত্ত্বার ওপরে বেঁচে থাকে। অনেকেই লেখক হবার সহজ উপায় খোঁজ করে। কিন্তু পড়তে পড়তে আর লিখতে লিখতেই শুধুমাত্র লেখক হওয়া যায়। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। লেখক অনেক ধরনের হতে পারে।

একজন সাংবাদিকও একজন লেখক। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, ছড়া, সাহিত্য, প্রবন্ধ, রম্য, ব্লগ সব ধরনের লেখা যারা লেখে তারাই লেখক। অনেকেই মস্তিষ্কের মধ্যে ওকটা লেখার শক্তি পেয়ে যায় আর অনেকে হয়ত শিখে শিখে লেখক হয়।

সমাজ সভ্যতা কখনোই পুরোপুরি একজন লেখকের পক্ষে থাকে না। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপক্ষে চলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই একজন লেখক তার কলমের আঘাতে জর্জরিত করতে চায় সকল অন্যায়, অপবাদ। তাই হয়ত বেঁধে যেতে পারে সংঘাত। কলমই হচ্ছে একজন লেখকের দাঁড়ানোর জায়গা। কলম ছাড়া লেখকের অস্তিত্ব বিলীন। তবে সবাইকে যে প্রতিবাদ লিখতে হবে এমন কোনো কথা। কেউ কেউ মনোরঞ্জনের জন্যও লেখে। অনেকে আবার চাটুকারিতা করতে লেখে। কেউ আবার কীভাবে পুরষ্কার তুলে নেওয়া যায় সেই ধান্দা করার জন্য লেখে।

একজন লেখক হয়ে উঠতে পারে ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্যকারী। সে কলমের ছোঁয়ায় প্রতিবাদ করতে অন্যায়ের আর ফুটিয়ে তুলবে ন্যায়ের কথা। লেখকের কলমের কালি প্রেরণার সুর হয়ে গান গাইবে। আর অশ্রুসিক্ত নয়নে হাসির ঝলক আনবে লেখকের কলম। একজন লেখকের প্রাণ তার লেখা, তার লেখার ভঙ্গি। সে তার লেখা দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে পারবে অসুস্থ কোনো সভ্যতাকে। লেখক তার কলম দিয়ে জাগ্রত করতে পারবে মানুষের ভীতরে লুকিয়ে থাকা অদম্য সাহস।

একজন লেখক কল্পনাকে নিয়ে আসতে পারে বাস্তবে। আমাদের নিয়ে যেতে পারে কল্পনার গহীন বনে। লেখক আমাদের সবাক যুগ থেকে অবাক যুগে নিয়ে যেতে পারে মুহূর্তের মাঝেই। লেখক জাগাতে পারে প্রেম, লেখক জাগাতে পারে নতুন কাজের স্পৃহা।

অনেকেই মনে করে লেখকের সকল বিষয়ে দ্বায় আছে। কিন্তু লেখকের মূলত কারো কাছেই কোনো দ্বায় নেই। তার দ্বায় থাকে শুধু নিজের মনের কাছে, নিজের বিবেকের কাছে, নিজের সুপ্ত চেতনার কাছে। সমাজ কি ভাববে তা নিয়ে লেখক মাথা ঘামাবে না। লেখক ভয়ে নাথা নোয়াবে না। লেখক যতদিন বাঁচবে বীরের মতোই বাঁচবে।

সারা বিশ্বেই লেখকরা নির্যাতনের শিকার হয়। অনেকেই বলে থাকে লিখে কিছুই হয় না। তাই যদি হতো তাহলে লেখার জন্য লেখকের শাস্তি হতো না। লেখকের ফাঁসি হতো না।

লেখকের কলমে অনেক জোর। সেই জোর ভেঙে চুরে গুড়িয়ে দিতে পারে যেকোনো কিছু। বিশেষ করে সাংবাদিকরা বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত হয় অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে। শাস্তি, সাজা বহু কিছু তাদের সহ্য করতে হয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখলে হুমকি আসে, হামলা মামলা বহু ঘটনাই ঘটে। কারণ শাসক, শোষক আর অন্যায়কারীদের অনেক ক্ষমতা। লেখকের সমাজের দায়মুক্তির জন্য জীবনও দিতে হয়। তাইতো একজন লেখক সমাজের শক্তি, সমাজের সম্পদ।

1 year ago

সাহিত্য হচ্ছে মানুষের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি তথা মানব-অভিজ্ঞতার কথা বা শব্দের বাঁধনে নির্মিত নান্দনিক বহিঃপ্রকাশ। এই অর্থে গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি উচ্চতর গুণাবলি সমন্বিত বিশেষ ধরনের সৃজনশীল মহত্তম শিল্পকর্ম। সাহিত্য-শিল্পীগণ যখন ‘অন্তর হতে বচন আহরণ’ করে আত্মপ্রকাশ কলায় ‘গীতরস ধারা’য় সিঞ্চন করে ‘আনন্দলোকে’ নিজের কথা- পরের কথা- বাইরের জগতের কথা আত্মগত উপলব্ধির রসে প্রকাশ করেন- তখনই তা হয়ে ওঠে সাহিত্য। রবীন্দ্রনাথের কথায় “বহিঃপ্রকৃতি এবং মানব-চরিত্র মানুষের মধ্যে অনুক্ষণ যে আকার ধারণ করিতেছে, যে-সঙ্গীত ধ্বনিত করিয়া তুলিতেছে, ভাষা-রচিত সেই চিত্র এবং সেই গানই সাহিত্য।…সাধারণের জিনিসকে বিশেষভাবে নিজের করিয়া – সেই উপায়ে তাহাকে পুনরায় বিশেষভাবে সাধারণের করিয়া তোলাই হচ্ছে সাহিত্যের কাজ।” [রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্য] সাহিত্য সত্য-সুন্দরের প্রকাশ হিসেবে প্রবহমাণ সময়ে যা ঘটে – সে-সবের মধ্য থেকে যা মহৎ, যা বস্তুসীমাকে ছাড়িয়ে বাস্তবাতীত প্রকাশ করে, যা জীবনের জন্য কল্যাণময় এবং মহৎ আদর্শের দ্যোতক তাকেই প্রকাশ করে। আসলে মহৎ সাহিত্য তাই- যা একাধারে সমসাময়িক-শাশ্বত-যুগধর্মী-যুগোপযোগী-যুগোত্তীর্ণ। সাহিত্য কেবল পাঠককে আনন্দ দেয় না- সমানভাবে প্রভাবিত করে পাঠক এবং সমাজকে।

আভিধানিকভাবে ‘সহিতের ভাব’ বা ‘মিলন’ অর্থে ‘সাহিত্য’ হলো কাব্য, নাটক, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি সৃজনশিল্পের মাধ্যমে এক হৃদয়ের সঙ্গে অন্য হৃদয়ের সংযোগ স্থাপন; সাহিত্য¯্রষ্টা-সাহিত্যের সাথে পাঠকের এক সানুরাগ বিনিময়। কিন্তু আভিধানিক অর্থের নির্দিষ্ট সীমায় সাহিত্যের স্বরূপ-গতি-প্রকৃতি-বৈচিত্র্য ও বিস্তৃতির সম্যক ধারণা দেওয়া যেমন অসম্ভব, কোনো বিশেষ সংজ্ঞায় তাকে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়াও তেমন দুঃসাধ্য। বাচ্যার্থ ও ব্যঞ্জনার্থর সীমাকে অতিক্রম করে নানা রূপে, রসে, প্রকরণ ও শৈলীতে সাহিত্যের নিরন্তর যাত্রা সীমা থেকে অসীমে। প্রত্যক্ষ সমাজপরিবেশ তথা সমকালীন বাস্তব পারিপার্শ্বিক, নিসর্গপ্রীতি ও মহাবিশ্বলোকের বৃহৎ-উদার পরিসরে ব্যক্তিচৈতন্য ও কল্পনার অন্বেষণ ও মুক্তি- আর এইভাবেই শ্রেণিবিভাজন, নামকরণ ও স্বরূপমীমাংসার প্রচেষ্টাকে ছাপিয়ে উঠে সাহিত্যের যাত্রা সীমাহীনতায়। প্রকৃত সাহিত্য তাই যেমন তার সমসময় যা যুগমুহূর্তের, তেমনই তা সর্বকালের সর্বজনের। মার্কসবাদী সাহিত্যতত্ত্বে বাস্তব সমাজজীবনকে ‘ভিত্তি’ আর শিল্প-সাহিত্যকে সমাজের উপরিকাঠামোর [ঝঁঢ়বৎংঃৎঁপঃঁৎব] অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। সাহিত্যের মৌল উপকরণসামগ্রী আহৃত হয় জীবনের ভা-ার থেকে- সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বৈরিতার বিচিত্র-অনিঃশেষ ভা-ার থেকে। সাহিত্যসৃষ্টির মূলে সক্রিয় যে সৃজনী-ব্যক্তিত্ব তা নিছক বিমূর্ত কোনো সত্তা নয়; আত্মপ্রকাশ ও মানবিক সংযোগ ও বিনিময়ের বাসনায় অনুপ্রাণিত সে সত্তা তার ভাব-ভাবনা, বোধ ও বিশ্বাসকে এক আশ্চর্য কৌশলে প্রকাশ করে জনসমক্ষে কোনো একটি বিশেষ রূপ-রীতি-নীতির আশ্রয়ে। ব্যক্তিক অনুুভূতি-যাপিতজীবন-মিশ্রকল্পনার জগৎ থেকেই সৃষ্টি হয় সাহিত্যের; যুগান্তরের আলোকবর্তিকা হিসেবে সাহিত্য সত্যের পথে সবসময় মাথা উঁচু করে থেকেছে- সত্যকে সন্ধান করেছে। আসলে সাহিত্য এমনি এক দর্পণ- যাতে প্রতিবিম্বিত হয় মানবজীবন, জীবনের চলচ্ছবি, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সমাজজীবনে ঘটমান ইতিহাস- ইতিহাসের চোরাস্রােত নানাবিধ কৌণিক সূক্ষ্মতায়।

সাধারণত আত্মপ্রকাশের বাসনা, সমাজ-সত্তার সঙ্গে সংযোগ কামনা, অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ এবং রূপপ্রিয়তা- এই চতুর্মাত্রিক প্রবণতাই মানুষের সাহিত্য-সাধনার মৌল-উৎস। চতুর্মাত্রিক প্রবণতার [আত্মপ্রকাশের কামনা, পারিপার্শ্বিকের সাথে যোগাযোগ বা মিলনের কামনা, কল্প-জগতের প্রয়োজনীয়তা এবং সৌন্দর্য-সৃষ্টির আকাক্সক্ষা বা রূপমুগ্ধতা] মধ্যে সমাজসত্তার সঙ্গে সংযোগ-কামনা এবং অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ- এই উৎসদ্বয়ের মধ্যে নিহিত রয়েছে সাহিত্য ও সমাজের মধ্যে আন্তর-সম্পর্কের প্রাণ-বীজ। সমাজ শিল্পীকে সাহিত্য-সাধনায় প্রণোদিত করে। ‘সহৃদয়-হৃদয় সংবাদ’এর মাধ্যমে সাহিত্যিকগণ লেখক-পাঠকের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেন- উভয়ের হৃদয়বীণার তারগুলোকে একই সুতায় গেঁথে দেন। এর কারণে সাহিত্য দেশ-কাল-সমাজের সীমা অতিক্রম করে সর্বসাধারণের হৃদয়কে আকর্ষণ করে। এর ফলে সাহিত্য হয়ে ওঠে সার্বজনীন-সর্বকালের মানুষের হৃদয়ের সামগ্রী এবং সাহিত্য¯্রষ্টাও হয়ে ওঠেন অনেক বড়। কিন্তু বর্তমান বাংলা সাহিত্যচর্চার গতি-প্রকৃতি, সমস্যা-সংকট-সমাধান কোন দিকে? এসব বিষয়ের সন্ধান- এ প্রবন্ধের অন্বিষ্ট।

1 year ago

আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধটি আমাদের লোককৃষ্টি গ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছে। লেখক এ প্রবন্ধে বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন । এ বর্ণনায় লোকশিল্পের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধের পরিচয় রয়েছে।
আমাদের নিত্যব্যবহার্য অধিকাংশ জিনিসই এ কুটিরশিল্পের ওপর নির্ভরশীল ।

শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের শিল্পকে লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য করা যেতে পারে । পূর্বে আমাদের দেশে যে সমস্ত লোকশিল্পের দ্রব্য তৈরি হতো তার অনেকগুলোই অত্যন্ত উচ্চমানের ছিল। ঢাকাই মসলিন তার অন্যতম। ঢাকাই মসলিন অধুনা বিলুপ্ত হলেও ঢাকাই জামদানি শাড়ি অনেকাংশে সে স্থান অধিকার করেছে।

বর্তমানে জামদানি শাড়ি দেশে-বিদেশে পরিচিত এবং আমাদের গর্বের বস্তু। নকশি কাথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ বিলুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মনের মতো করে কীথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন । কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক-একটি পরিবারের কাহিনী, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাঁথা ।

আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকে। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে।
খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত। আমাদের দেশের এই যে লোকশিল্প তা সংরক্ষণের দায়িত আমাদের সকলের । লোকশিল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।

1 year ago

আমাদের অর্থনৈতিক সম্পদ

 

বাংলাদেশ, একটি দ্রুত উন্নতি লক্ষ্য নির্ধারণ করা দেশ, যা প্রচুর অর্থনৈতিক সম্পদের বেশিরভাগ সম্পদ নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই দেশের অর্থনৈতিক সম্পদ মৌলিকভাবে চারটি প্রধান উৎস থেকে আসে: জমি, কাজ, উদ্যোগ, এবং মানুষের কাজের দক্ষতা। এই সম্পদের বিকাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক, আর্থিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের মূল স্তম্ভ হল কৃষি। দেশটি একটি প্রধানত কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির মূল হিসেবে প্রধানত শস্য ও ফসল চাষ প্রসঙ্গে বিকাশ হয়েছে। বাংলাদেশে প্রধানত ধান, পাট, মশুর ডাল, আখ, পটল, পেঁপে, তেল সহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়। অত্যন্ত উচ্চ মানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনের ফলে এই খাদ্য পণ্য রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক সম্পদের গড়াতে সাহায্য করে।

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উৎস হল প্রবৃদ্ধি ও শিক্ষাগত উন্নতি। বাংলাদেশে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব কমে আসছে এবং মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি করছে। বিশেষত, প্রযুক্তির আগমন এবং বিনিয়োগে বৃদ্ধি নেওয়া হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক সম্পদের উন্নতির পথে সাহায্য করছে।

অন্যান্য উৎস হিসেবে প্রযুক্তিবিদ্যা এবং সেবা অংশ গুলির অগ্রগতি আছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সম্পদ হল তার মানুষের চাকরিভার্থী শ্রমিকেরা। তাদের দক্ষতা, উদ্যোগ, ও সামর্থ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

যদিও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে অনেক উত্সাহজনক প্রগতি হয়েছে, তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ র

য়েছে। প্রধানতঃ গরিব মানুষের জন্য আর্থিক সম্পদের অগ্রগতি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখনও বেশিরভাগ লোকের মধ্যে বৃদ্ধির অভাব আছে। তাছাড়া, পরিবেশের সম্পদ সংরক্ষণের জন্য সঠিক প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা প্রয়োজন।

পুনর্নির্মাণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পদের বিস্তার ও উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে। সঠিক নীতি নির্ধারণ, উদ্যোগের বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত প্রবর্তন এবং শিক্ষাগত উন্নতি এমন পরিবর্তন নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে।

শেষ কথায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা দেশটির সমৃদ্ধি ও উন্নতির সাথে অবিভাজ্যভাবে সংযোগিত। একটি দ্রুত বৃদ্ধির উপায় হল সঠিক পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা এবং উদ্যোগের বৃদ্ধি করা। এই প্রস্তুতি নেওয়ার মাধ্যমে, বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে আরও এগিয়ে যেতে পারে এবং তার মানুষের জন্য আরো উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।

3 months ago
Promotion