কোড

- তথ্য প্রযুক্তি - কম্পিউটার (Computer) | NCTB BOOK

কোড (Code) হলো এমন একটি ভাষা বা সংকেত, যা কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইসের জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশনা বা তথ্য উপস্থাপন করতে ব্যবহৃত হয়। কোড সাধারণত কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা হয়, যা মানুষের ভাষাকে মেশিন বা কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষায় অনুবাদ করে। কোড লেখার প্রক্রিয়াকে প্রোগ্রামিং বলা হয়, এবং এটি সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন, এবং অন্যান্য প্রযুক্তি তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়।

কোডের প্রকারভেদ:

কোড সাধারণত বিভিন্ন রকমের হতে পারে, যেমন প্রোগ্রামিং কোড, এনক্রিপশন কোড, এবং যোগাযোগ কোড। নিচে কোডের বিভিন্ন ধরন এবং তাদের বিবরণ দেওয়া হলো:

১. প্রোগ্রামিং কোড:

  • প্রোগ্রামিং কোড হলো এমন কোড, যা কম্পিউটারে নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার নির্দেশনা প্রদান করে। প্রোগ্রামিং ভাষায় কোড লেখা হয়, এবং এটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • উদাহরণ: Python, Java, C++, JavaScript, HTML, CSS।
  • ব্যবহার:
    • ওয়েবসাইট এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে (যেমন, HTML, CSS, JavaScript)।
    • সফটওয়্যার এবং ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে (যেমন, C++, Java)।
    • গেম ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য (যেমন, Python)।

২. এনক্রিপশন কোড:

  • এনক্রিপশন কোড হলো এমন কোড, যা তথ্য এনক্রিপ্ট বা এনকোড করে এবং নিরাপদ যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • এই কোড তথ্যকে একটি বিশেষ সংকেত বা ফর্মে রূপান্তরিত করে, যাতে শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তি বা সিস্টেম তা ডিকোড করতে পারে।
  • উদাহরণ: AES (Advanced Encryption Standard), RSA, এবং SHA (Secure Hash Algorithm)।
  • ব্যবহার:
    • অনলাইন লেনদেন এবং যোগাযোগকে নিরাপদ করতে।
    • তথ্য এনক্রিপ্ট করা এবং সাইবার সিকিউরিটির জন্য।
    • সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের মধ্যে নিরাপদ ডেটা ট্রান্সমিশন।

৩. যোগাযোগ কোড:

  • যোগাযোগ কোড হলো এমন সংকেত বা সংকেতের সংমিশ্রণ, যা যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি অডিও, ভিজ্যুয়াল বা ডিজিটাল সংকেত হতে পারে।
  • উদাহরণ: মর্স কোড, ASCII (American Standard Code for Information Interchange), এবং বিট কোড।
  • ব্যবহার:
    • রেডিও যোগাযোগ এবং সামরিক যোগাযোগের জন্য (মর্স কোড)।
    • কম্পিউটারের মাধ্যমে টেক্সট এবং ডেটা এনকোডিং (ASCII)।
    • ডিজিটাল যোগাযোগ এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য।

প্রোগ্রামিং কোডের উদাহরণ:

নিচে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা কোডের উদাহরণ দেওয়া হলো:

Python:

  • এখানে Python ভাষায় একটি সাধারণ কোড লেখা হয়েছে, যা "Hello, World!" প্রিন্ট করে।

print("Hello, World!")

JavaScript:

  • এটি একটি JavaScript কোড, যা ব্রাউজারের কনসোলে "Hello, World!" আউটপুট দেয়।

console.log("Hello, World!");

HTML:

  • HTML ভাষায় লেখা একটি কোড, যা ওয়েবপেজে "Hello, World!" প্রদর্শন করে।

<h1>Hello, World!</h1>

C++:

  • এটি C++ ভাষায় লেখা একটি কোড, যা "Hello, World!" প্রিন্ট করে।

#include <iostream> using namespace std; int main() {    cout << "Hello, World!" << endl;    return 0; }

কোড লেখার গুরুত্ব:

  • সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি: কোড সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার মূল উপাদান। বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষার সাহায্যে সফটওয়্যার ডেভেলপাররা নতুন প্রোগ্রাম তৈরি করে।
  • ডিজিটাল কমিউনিকেশন: কম্পিউটার এবং ডিভাইসগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য কোড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন প্রোটোকল এবং কোডের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সফার এবং প্রক্রিয়াকরণ করা হয়।
  • স্বয়ংক্রিয়তা এবং অটোমেশন: কোড ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ স্বয়ংক্রিয় করা যায়, যা ব্যবসা এবং শিল্পক্ষেত্রে কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং সময় বাঁচায়।
  • সাইবার সিকিউরিটি: কোড ব্যবহার করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা যায়, যা সাইবার আক্রমণ এবং তথ্য চুরির থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।

সারসংক্ষেপ:

কোড হলো কম্পিউটার এবং প্রযুক্তির একটি মৌলিক উপাদান, যা প্রোগ্রামিং, এনক্রিপশন, এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সফটওয়্যার তৈরি এবং ডিজিটাল যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রোগ্রামিং এবং এনক্রিপশন কোডের মাধ্যমে কম্পিউটার সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা যায়।

Content added By
128 different characters
256 different characters
1024 different characters
512 different characters
American Standard Code for Information Interchange
American Stock Code for Information Interchange
American Standard Code for Information Interfere
None

বিসিডি কোড (BCD Code) বা Binary-Coded Decimal হলো একটি পদ্ধতি যেখানে দশমিক সংখ্যাগুলিকে বাইনারি আকারে প্রকাশ করা হয়, কিন্তু প্রতিটি দশমিক সংখ্যা (০-৯) আলাদা করে ৪-বিট বাইনারি কোডে পরিবর্তিত হয়। এটি ডিজিটাল সিস্টেম এবং কম্পিউটারে সংখ্যার ইনপুট, আউটপুট, এবং গাণিতিক অপারেশন সহজে সম্পাদন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

BCD (Binary-Coded Decimal) এর বৈশিষ্ট্য:

১. ডিজিট-ওরিয়েন্টেড পদ্ধতি:

  • BCD পদ্ধতিতে প্রতিটি দশমিক সংখ্যা (০ থেকে ৯) একটি ৪-বিট বাইনারি সংখ্যা (নিবল) হিসেবে প্রকাশ করা হয়।
  • উদাহরণ: দশমিক সংখ্যা ৫ হলো BCD পদ্ধতিতে 0101 এবং ৯ হলো 1001।

২. আলাদা ডিজিট এনকোডিং:

  • প্রতিটি দশমিক ডিজিটকে আলাদা করে বাইনারি আকারে এনকোড করা হয়। এইভাবে, বড় সংখ্যাকে আলাদা ডিজিটে বিভক্ত করে বাইনারি রূপান্তর করা যায়।
  • উদাহরণ: দশমিক সংখ্যা 25 BCD পদ্ধতিতে হবে 0010 0101 (২ এবং ৫ আলাদাভাবে এনকোড করা হয়েছে)।

৩. সহজ এবং সরল গাণিতিক অপারেশন:

  • BCD পদ্ধতিতে গাণিতিক অপারেশন সহজ, কারণ প্রতিটি দশমিক সংখ্যাকে আলাদা করে বাইনারি আকারে এনকোড করা হয়েছে। তাই গাণিতিক কাজ করার সময় প্রতিটি ডিজিট সরাসরি প্রক্রিয়াকরণ করা যায়।
  • এটি বিশেষ করে প্রাথমিক ডিজিটাল ক্যালকুলেটর এবং মাইক্রোকন্ট্রোলারগুলোতে ব্যবহৃত হয়, যেখানে সংখ্যাগুলোর দশমিক ফর্ম বজায় রেখে কাজ করা প্রয়োজন।

BCD পদ্ধতির উদাহরণ:

ধরা যাক, আমাদের দশমিক সংখ্যা 345 কে BCD পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে হবে:

  • 3 এর বাইনারি কোড: 0011
  • 4 এর বাইনারি কোড: 0100
  • 5 এর বাইনারি কোড: 0101

তাহলে, BCD কোড হবে: 0011 0100 0101

BCD পদ্ধতির সুবিধা:

১. সহজ এনকোডিং এবং ডিকোডিং:

  • BCD পদ্ধতিতে দশমিক সংখ্যাগুলি সরাসরি বাইনারি কোডে রূপান্তর করা যায়, তাই ইনপুট এবং আউটপুট প্রক্রিয়াকরণ সহজ হয়।

২. ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং ক্যালকুলেটরের জন্য উপযোগী:

  • ডিজিটাল ক্যালকুলেটর এবং ডিসপ্লেতে BCD পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, কারণ এতে সংখ্যাগুলোর প্রতিটি ডিজিট আলাদাভাবে প্রক্রিয়াকরণ করা যায় এবং ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করা সহজ হয়।

৩. কম্পিউটার সিস্টেমের নির্ভুলতা বজায় রাখা:

  • BCD পদ্ধতিতে প্রতিটি দশমিক সংখ্যা আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তাই ত্রুটি বা সংখ্যা হেরফেরের সম্ভাবনা কম থাকে।

BCD পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা:

১. বেশি মেমোরি ব্যবহার:

  • BCD পদ্ধতিতে প্রতিটি দশমিক ডিজিটকে ৪-বিট হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়, যা অনেক বেশি মেমোরি ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ৮-বিট বাইনারি সংখ্যা ০ থেকে ২৫৫ পর্যন্ত মান ধারণ করতে পারে, কিন্তু BCD পদ্ধতিতে এটি মাত্র ০ থেকে ৯৯ পর্যন্ত মান ধারণ করতে পারে।

২. অপ্টিমাইজড নয়:

  • গাণিতিক অপারেশন BCD পদ্ধতিতে ডিজিট বাই ডিজিট সম্পাদন করা হয়, যা অন্যান্য বাইনারি অপারেশনের তুলনায় ধীর হতে পারে।

৩. বিকল্প পদ্ধতি বিদ্যমান:

  • আধুনিক ডিজিটাল সিস্টেমে BCD পদ্ধতির পরিবর্তে, পিওর বাইনারি এবং অন্যান্য এনকোডিং পদ্ধতি (যেমন, IEEE-754) ব্যবহৃত হয়, যা বেশি কার্যকর এবং কম মেমোরি খরচ করে।

BCD পদ্ধতির ব্যবহার:

  • ডিজিটাল ক্যালকুলেটর: দশমিক সংখ্যার সঙ্গে কাজ করার জন্য BCD পদ্ধতি উপযোগী। এটি ইনপুট এবং আউটপুট উভয় ক্ষেত্রেই সহজে ব্যবহার করা যায়।
  • ডিজিটাল ঘড়ি: সময় প্রদর্শনের জন্য BCD পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, কারণ এতে প্রতিটি সংখ্যার ডিজিটকে আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • মাইক্রোকন্ট্রোলার এবং এম্বেডেড সিস্টেম: বিশেষত, যেখানে নির্দিষ্ট দশমিক সংখ্যার সঙ্গে কাজ করতে হয়, সেখানে BCD পদ্ধতি কার্যকরী।

সারসংক্ষেপ:

BCD (Binary-Coded Decimal) হলো একটি সংখ্যার এনকোডিং পদ্ধতি, যা দশমিক সংখ্যাগুলিকে ৪-বিট বাইনারি আকারে এনকোড করে। এটি সহজ এবং সরল, বিশেষ করে ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং ক্যালকুলেটরের জন্য উপযোগী। তবে এর মেমোরি ব্যবহারের সীমাবদ্ধতার কারণে আধুনিক ডিজিটাল সিস্টেমে পিওর বাইনারি এবং অন্যান্য পদ্ধতির বেশি ব্যবহার দেখা যায়।

Content added By
Content updated By

আসকি (American Standard Code for Information Interchange) হলো একটি ক্যারেক্টার এনকোডিং স্ট্যান্ডার্ড, যা কম্পিউটারে টেক্সট উপস্থাপন এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। ASCII প্রথমবারের মতো ১৯৬৩ সালে চালু হয় এবং এটি মূলত ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, এবং সাধারণ প্রতীকগুলিকে বাইনারি ফরম্যাটে এনকোড করতে সাহায্য করে, যা কম্পিউটার সহজে বুঝতে এবং প্রসেস করতে পারে।

ASCII-এর বৈশিষ্ট্যসমূহ:

১. ৭-বিট এনকোডিং:

  • ASCII মূলত ৭-বিট এনকোডিং স্ট্যান্ডার্ড, যা ১২৮টি ভিন্ন ক্যারেক্টার এনকোড করতে সক্ষম (০ থেকে ১২৭ পর্যন্ত)।
  • এতে ৩৩টি কন্ট্রোল ক্যারেক্টার (যেমন নিউ লাইন, ক্যারেজ রিটার্ন, ট্যাব) এবং ৯৫টি প্রিন্টেবল ক্যারেক্টার (যেমন সংখ্যা, বড় এবং ছোট হাতের ইংরেজি বর্ণমালা, এবং বিভিন্ন প্রতীক) অন্তর্ভুক্ত থাকে।

২. ৮-বিট এক্সটেন্ডেড ASCII:

  • পরবর্তীতে, ৮-বিট ASCII (যাকে এক্সটেন্ডেড ASCII বলা হয়) চালু করা হয়, যা মোট ২৫৬টি ক্যারেক্টার এনকোড করতে সক্ষম। এটি অন্যান্য ভাষার বিশেষ অক্ষর এবং গ্রাফিক সিম্বল অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

ASCII টেবিলের প্রধান বিভাগ:

১. কন্ট্রোল ক্যারেক্টার (০-৩১):

  • এই ক্যারেক্টারগুলো প্রিন্টেবল নয় এবং টেক্সটের ফরম্যাটিং বা ডেটা প্রসেসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন:
    • NULL (0): কোনো মান নেই।
    • BEL (7): বীপ শব্দ তৈরি করে।
    • LF (10): লাইন ফিড, যা নতুন লাইন তৈরি করে।

২. স্পেস এবং প্রিন্টেবল ক্যারেক্টার (৩২-১২৭):

  • এই ক্যারেক্টারগুলোতে স্পেস, সংখ্যা (০-৯), বড় এবং ছোট হাতের ইংরেজি বর্ণমালা (A-Z, a-z), এবং বিভিন্ন প্রতীক (যেমন !, @, #, $, %, &, *, এবং আরও) অন্তর্ভুক্ত থাকে।

৩. এক্সটেন্ডেড ASCII (১২৮-২৫৫):

  • এই অংশে অন্যান্য ভাষার বিশেষ অক্ষর (যেমন ইউরোপীয় ভাষার বর্ণমালা), গ্রাফিক সিম্বল, এবং কিছু বিশেষ ফাংশন ক্যারেক্টার অন্তর্ভুক্ত থাকে।

ASCII-এর ব্যবহার:

১. টেক্সট ফাইল:

  • ASCII কোডের মাধ্যমে টেক্সট ফাইল তৈরি এবং সংরক্ষণ করা হয়। এটি সাধারণত .txt ফাইল হিসেবে পরিচিত।

২. প্রোটোকল এবং নেটওয়ার্কিং:

  • নেটওয়ার্ক প্রোটোকল, যেমন HTTP এবং FTP, ASCII কোড ব্যবহার করে ডেটা বিনিময় করে।

৩. প্রোগ্রামিং:

  • ASCII প্রোগ্রামিং ভাষা, যেমন C, Python, এবং অন্যান্য ভাষায় ব্যবহৃত হয়, যেখানে টেক্সট এবং স্ট্রিং ম্যানিপুলেশন করা হয়।

ASCII টেবিলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্যারেক্টার:

ASCII কোডক্যারেক্টারবিবরণ
32(Space)স্পেস
48-570-9সংখ্যা
65-90A-Zবড় হাতের বর্ণমালা
97-122a-zছোট হাতের বর্ণমালা
10LFলাইন ফিড (নতুন লাইন)
13CRক্যারেজ রিটার্ন

ASCII-এর গুরুত্ব:

  • ইন্টারঅপারেবিলিটি: ASCII একটি স্ট্যান্ডার্ড ফরম্যাট হওয়ায় এটি বিভিন্ন কম্পিউটার সিস্টেম এবং ডিভাইসের মধ্যে ডেটা বিনিময় করতে সহায়ক।
  • সহজ ব্যবহার: ASCII টেবিল সহজ এবং সবার জন্য বোঝার উপযোগী, যা প্রোগ্রামিং এবং ডেটা প্রসেসিং সহজ করে।
  • প্রাথমিক স্ট্যান্ডার্ড: ASCII আধুনিক ইউনিকোড স্ট্যান্ডার্ডের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যা বিভিন্ন ভাষার অক্ষর এবং প্রতীকের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ASCII-এর সীমাবদ্ধতা:

১. ভাষাগত সীমাবদ্ধতা:

  • ASCII মূলত ইংরেজি ভাষার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, তাই এটি অন্যান্য ভাষার অক্ষর ও প্রতীক সাপোর্ট করতে পারে না। এক্সটেন্ডেড ASCII কিছু ভাষার সাপোর্ট দিলেও, এটি যথেষ্ট নয়।

২. অল্প ক্যারেক্টারের সমর্থন:

  • ASCII শুধুমাত্র ১২৮ বা সর্বাধিক ২৫৬টি ক্যারেক্টার সাপোর্ট করতে পারে, যা বর্তমান সময়ের বহুভাষিক এবং জটিল সিস্টেমের জন্য অপ্রতুল।

ইউনিকোডের দিকে যাত্রা:

ASCII-এর সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার জন্য ইউনিকোড চালু করা হয়, যা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার অক্ষর এবং প্রতীক সাপোর্ট করে। ইউনিকোডে লক্ষাধিক ক্যারেক্টার এনকোড করা সম্ভব, যা আধুনিক সফটওয়্যার এবং ইন্টারনেটের জন্য একটি কার্যকর সমাধান।

সারসংক্ষেপ: ASCII হলো একটি প্রাথমিক ক্যারেক্টার এনকোডিং সিস্টেম যা ইংরেজি ভাষার অক্ষর, সংখ্যা, এবং প্রতীক এনকোড করতে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি সীমাবদ্ধ, তবুও এটি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইন্টারনেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

Content added By
Content updated By

ANSI কোড বলতে আমরা স্ট্যান্ডার্ড এনকোডিং বোধ করি, যা হল আমেরিকান ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইনস্টিটিউট (ANSI) দ্বারা প্রকাশিত একটি স্ট্যান্ডার্ড কোড। এটি ইউনিকোড না হলেও, একটি পুরাতন স্ট্যান্ডার্ড কোড হিসাবে ব্যবহৃত হয় যা অধিকাংশ সিস্টেমে সমর্থিত হয়।

ANSI কোড একটি 8-বিট কোডিং সিস্টেম যা ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, প্রতীক এবং সাধারণ পাঁচালী চিহ্ন সহ অন্যান্য স্থানীয় ভাষার ক্যারেক্টারগুলি কোড করে। 

Content added By

ইউনিকোড (Unicode) হলো একটি আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড যা কম্পিউটারে বিভিন্ন ভাষার এবং লেখার সিস্টেমের চরিত্র এবং প্রতীকগুলিকে একটি একক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ কোড পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বিশ্বের সব ভাষার এবং স্ক্রিপ্টের জন্য একটি বৈশ্বিক সংকেত পদ্ধতি প্রদান করে, যার ফলে বিভিন্ন ভাষার লেখা এবং ডিজিটাল ডেটার সমন্বয় সম্ভব হয়।

Unicode এর বৈশিষ্ট্য:

বৈশ্বিক ভাষা সমর্থন: Unicode বিশ্বের প্রায় সমস্ত লেখার সিস্টেম, যেমন ল্যাটিন, আরবি, সেরিফ, কিরিলিক, হিন্দি, চীনা, জাপানি ইত্যাদির জন্য কোড পয়েন্ট সরবরাহ করে।

একক কোড পয়েন্ট: Unicode প্রতিটি চরিত্রকে একটি অনন্য কোড পয়েন্ট প্রদান করে। এই কোড পয়েন্টগুলি সাধারণত হেক্সাডেসিমাল সংখ্যায় উপস্থাপিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজি "A" এর Unicode কোড পয়েন্ট হলো U+0041।

বিভিন্ন ফরম্যাট: Unicode বিভিন্ন এনকোডিং ফরম্যাটে উপলব্ধ, যেমন UTF-8, UTF-16, এবং UTF-32। UTF-8 সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এটি ASCII-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ইনক্রিমেন্টাল আভেদ: Unicode চরিত্রগুলি বিভিন্ন ভাষার এবং সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, যার ফলে এটি একটি আন্তর্জাতিক এবং আন্তঃসংস্কৃতি সমর্থনকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।

Unicode এর ইতিহাস:

  • Unicode এর প্রথম সংস্করণ ১৯৯১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন ভাষার এবং চরিত্রের সমর্থন বাড়ানোর জন্য আপডেট করা হয়েছে।
  • Unicode Consortium নামক একটি সংগঠন এই স্ট্যান্ডার্ডের উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী।

Unicode এর উপকারিতা:

মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ সমর্থন: Unicode বিভিন্ন ভাষার ও লেখার সিস্টেমকে একসাথে কাজ করার সুযোগ দেয়, যা বৈশ্বিক যোগাযোগকে সহজতর করে।

সামঞ্জস্য: Unicode ব্যবহারে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এবং ডিভাইসে পাঠ্য একইভাবে প্রদর্শিত হয়, যা ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উন্নত করে।

ডেটা সংরক্ষণ: Unicode ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাষার তথ্য এবং ডেটা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়, যা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে এবং গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ।

Unicode এর ব্যবহার:

ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন: Unicode ব্যবহার করে ওয়েব ডেভেলপাররা বিভিন্ন ভাষার সমর্থনসহ মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।

ডেটাবেস: Unicode ডেটাবেসে বিভিন্ন ভাষার এবং চরিত্রের ডেটা সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।

মোবাইল ডিভাইস: স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের মতো ডিভাইসে Unicode ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাষার লেখা সহজে প্রবাহিত করা যায়।

সারসংক্ষেপ:

Unicode একটি শক্তিশালী এবং বহুমুখী কোডিং সিস্টেম, যা বিশ্বের সব ভাষার এবং লেখার সিস্টেমের চরিত্রগুলিকে একটি একক ফর্ম্যাটে উপস্থাপন করে। এটি বৈশ্বিক যোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন ভাষার লেখাকে সঠিকভাবে পরিচালনা এবং প্রদর্শন করার সুযোগ দেয়।

Content added By
Content updated By

ইবিসিডিআইসি (EBCDIC): ইবিসিডিআইসি (EBCDIC)-এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে এক্সটেন্ডেড বাইনারি কোডেড ডেসিমাল ইনফরমেশন কোড (Extended Binary Coded Decimal Information Code)। বিশ্ব বিখ্যাত আইবিএম কোম্পানী তাদের নিজস্ব কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য এই কোড উদ্ভাবন করেছে। এটি ৮ বিটের কোড, যার ডান দিকের ৪টি এবং ৪ বিটের মধ্যে মাঝের ৩ বিট হলাে জোনাল বিট এবং সর্ব বামের বিটটি প্যারাটি বিট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

EBCDIC এর বৈশিষ্ট্য:

১. ৮-বিট এনকোডিং:

  • EBCDIC ৮-বিটের এনকোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, যার ফলে ২৫৬টি আলাদা চরিত্র এনকোড করা যায়। এর মধ্যে ৬৪টি নিয়ন্ত্রণ চরিত্র, ৬৪টি অক্ষর, এবং ১২৮টি অক্ষর এবং সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

২. ডিজিটাল সিস্টেমে ব্যবহার:

  • EBCDIC বেশিরভাগ IBM মেইনফ্রেম সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়। এটি বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার, বিশেষ করে ব্যাংকিং এবং ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহৃত হয়।

৩. অভিন্ন চরিত্র সেট:

  • EBCDIC বিভিন্ন ধরনের অক্ষর, যেমন ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, এবং বিভিন্ন প্রতীকের জন্য আলাদা কোড প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, A চরিত্রটির কোড 11000001 এবং 0 এর কোড 00110000।

EBCDIC এর উদাহরণ:

EBCDIC কোডে কিছু জনপ্রিয় অক্ষরের এনকোডিং:

  • A = 11000001
  • B = 11000010
  • 0 = 00110000
  • 1 = 00110001
  • SPACE = 00100000

EBCDIC এর ব্যবহার:

  • ব্যাংকিং এবং ফিনান্স: EBCDIC বেশিরভাগ ব্যাংকিং সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ডেটা নিরাপত্তা এবং সঠিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • মেইনফ্রেম কম্পিউটিং: IBM মেইনফ্রেম কম্পিউটারে EBCDIC ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে যেখানে পুরানো সিস্টেমগুলোর সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখা প্রয়োজন।

EBCDIC এর সীমাবদ্ধতা:

১. অসংখ্যাকৃত:

  • EBCDIC অনেক আধুনিক ডিজিটাল সিস্টেমের সাথে অসংখ্যাকৃত, যা ASCII (American Standard Code for Information Interchange) এর তুলনায় ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। ASCII এখন আরও বেশি প্রচলিত এবং সমর্থিত।

২. বিভিন্ন সংস্করণ:

  • EBCDIC এর বিভিন্ন সংস্করণ ও প্রকারভেদ রয়েছে, যা কিছু ক্ষেত্রে অসঙ্গতি সৃষ্টি করতে পারে।

৩. ক্যারেক্টার সেটের সীমাবদ্ধতা:

  • EBCDIC এর কিছু সংস্করণে আন্তর্জাতিক চরিত্র এবং সিম্বলগুলোর জন্য পর্যাপ্ত স্থান না থাকার কারণে আন্তর্জাতিক ব্যবহার সীমিত হতে পারে।

সারসংক্ষেপ:

EBCDIC হলো একটি ৮-বিট এনকোডিং পদ্ধতি যা মূলত IBM দ্বারা তৈরি হয়েছে এবং মেইনফ্রেম কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি কিছু ক্ষেত্রে কার্যকরী এবং ব্যবহৃত হয়, তবে আধুনিক কম্পিউটার সিস্টেমের সাথে তুলনায় ASCII এর ব্যবহার বেশি প্রচলিত। EBCDIC বিশেষ করে ব্যাংকিং এবং পুরানো সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর সীমাবদ্ধতা এবং অসঙ্গতি আধুনিক প্রযুক্তিতে কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

Content added By
Content updated By

Promotion

Promotion