HSC

মানুষের প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস কার্যক্রম

জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র - মানুষের প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস কার্যক্রম

প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস কার্যক্রম (Ventilation Mechanism):

যে প্রক্রিয়ায় ফুসফুসে অক্সিজেন-সমৃদ্ধ বায়ু প্রবেশ করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড-সমৃদ্ধ বায়ু ফুসফুস থেকে বের হয়ে যায় তাকে শ্বাসক্রিয়া (breathing) বলে। প্রকৃতপক্ষে এটি বহিঃশ্বন প্রক্রিয়া। বক্ষগহ্বরের আয়তন হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে ফুসফুসের আয়তন সঙ্কোচন-প্রসারণের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। দুধরনের পেশির ক্রিয়ায় বক্ষগহ্বরের আয়তনের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে ।
পেশিগুলো হলো: (১) বক্ষ ও উদর গহ্বরের মাঝে অবস্থিত ডায়াফ্রাম (diaphragm) এবং (২) পর্তুকাসমূহের (ribs) ফাঁকে অবস্থিত ইন্টারকোস্টাল পেশি (intercostal muscle)। 

শ্বাসক্রিয়া দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়, যথা: (ক) প্রশ্বাস বা শ্বাসগ্রহণ এবং (খ) নিঃশ্বাস বা শ্বাসত্যাগ

প্রশ্বাস বা শ্বাসগ্রহণ (Inhalation) : ডায়াফ্রাম-পেশি সংকুচিত হলে এর কেন্দ্রীয় টেনডন (tendon) নিম্নমুখে সঞ্চালিত হয়। ফলে বক্ষগহ্বরের অনুদৈর্ঘ্য ব্যাস বেড়ে যায়। একই সময় নিম্নভাগের পশুকাগুলো (ribs) কিছুটা উপরে উঠে আসায় বক্ষগহ্বরের পার্শ্বীয় এবং অগ্র-পশ্চাৎ ব্যাসও বেড়ে যায় । ইন্টারকোস্টাল (intercostal) পেশির সংকোচনের ফলে পর্শকার শ্যাফট (shaft) উত্তোলিত হয় । এতে স্টার্ণাম উপরে উঠে সামনে সঞ্চালিত হয়। ফলশ্রুতিতে বক্ষের অগ্র- পশ্চাৎ ব্যাসসহ অনুগ্রস্থ ব্যাস বৃদ্ধি পায়।এভাবে ডায়াফ্রাম ও পর্শকা পেশির সংকোচনের ফলে বক্ষীয় গহ্বর সবদিকে বেড়ে যায়। এ কারণে ফুসফুস প্রসারিত হয়ে এর ভিতরের আয়তনও বাড়িয়ে দেয়। প্রসারিত ফুসফুসের অভ্যন্তরীণ চাপ বাতাসের সাধারণ চাপ অপেক্ষা কম হওয়ায় নাসিকা পথের ভেতর দিয়ে আসা বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করে।

নিঃশ্বাস বা শ্বাসত্যাগ (Exhalation) : এটি প্রশ্বাসের পর পরই সংঘটিত একটি নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া। প্রশ্বাসে অংশগ্রহণকারী পেশিগুলোর প্রসারণ বা শিথিলতার জন্য নিঃশ্বাস ঘটে।নিঃশ্বাসের সময় প্রশ্বাসকালে অংশগ্রহণকারী পেশিগুলো স্থিতিস্থাপকতার জন্য পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। তখন 1 পর্শকাগুলো নিজস্ব ওজনের জন্য নিম্নগামী হয়; উদরীয় পেশিগুলোর চাপে ডায়াফ্রাম ধনুকের মতো বেঁকে বক্ষগহ্বরের আয়তন কমিয়ে দেয়; ফুসফুসীয় পেশি পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়; এবং প্যুরার অন্তঃস্থ চাপ ও ফুসফুসের বায়ুর চাপ বেড়ে যায়। বাতাস তখন ফুসফুস থেকে নাসিকা পথে বেরিয়ে গেলে ফুসফুসের আয়তনও কমে যায়। শ্বসন একটি ছন্দময় প্রক্রিয়া (পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষে বিশ্রামকালে এ প্রক্রিয়া প্রতিমিনিটে ১৪-১৮ বার এবং নবজাত শিশুতে ৪০ বার সংঘটিত হয়) তবে ব্যায়াম বা অন্য কারণে শ্বসনের হার দ্রুত হয় বলে উদরীয় পেশিও তখন শ্বসন কাজে যোগ দেয়।

Content added || updated By
Promotion