গ্রামীণ কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে কৃষি ঋণের ভূমিকা
বাংলাদেশকে এখন আর কৃষি প্রধান দেশ বলা যায় না। ১৯৮০ সালের দিকে বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ছিল প্রায় ৩৫% শতাংশ কিন্তু আজ ২০১৭ সালে এসে মোট শ্রমশক্তির ৪৫.১% লোক কৃষি পেশায় জড়িত থাকলেও জিডিপি এর অবদান মাত্র ১৪, ৭৯%। ক্রমেই এই অবদানের হার কমছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে দক্ষ ও শিক্ষিত লোকের অভাবের কারণে মোট শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক কৃষি পেশায় নিযুক্ত থাকা সত্ত্বেও জিডিপিতে অবদানের পরিমাণ নগণ্য। কিন্তু কৃষিতে একটি দক্ষ জনশক্তি তৈরী করতে পারলে জিডিপিতে কৃষির অবদান অবশ্যই বাড়বে। এখন এই দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে কৃষি ঋণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নিচে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ।
- কৃষিঋণ বিতরণের মাধ্যমে ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
- গ্রামীণ জনশক্তির একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেকার থাকায় এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি দক্ষ জনশক্তি গঠন সম্ভব।
- বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি অর্থ-বছরে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে পরিমাণ কৃষিঋণ বিতরণের জন্য সীমা বেঁধে দেয়, তা কোনো বছরই অর্জিত হয় না। কাজেই প্রত্যেক অর্থ বছরে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকে তা করতে হবে বলে নির্দেশ জারি করলে কৃষিঋণ বিতরণ আরো গতিশীল হবে।
- কৃষি ঋণের তহবিল গঠন করে গ্রামীণ কৃষকদের স্থানীয় পর্যায়ে সার ও বীজ সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্য অর্থ প্রদান করলে দক্ষ জনগোষ্ঠী গঠিত হবে।
- বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ স ময়ই কৃষি ঋণ কৃষি কাজে ব্যবহৃত হয়না, অন্য কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই যে পরিমাণ কৃষি ঋণ বিতরণ হয়, তা মূলত কৃষি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিৎ। ফেল পুরোটাই যদি কৃষি কাজে ব্যবহৃত হতো, তবে অবশ্যই প্রানী জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতো।
- কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা গ্রহণ করেছে তা প্রকৃত পক্ষে নীতিমালার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নই আনীত জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। তাই সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে এই নীতিমালা বাস্তবায়নের ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে।